পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

čanstat জাপান ভারতবর্ষের একটা প্রদেশের সমান পাৰ্ব্বত্য ভূমিকম্পবছল দেশ। ইহার ষষ্ঠাংশ মাত্র চাষের যোগ্য। জাপান-সাম্রাজ্যও ভারতের চেয়ে ছোট । গত ২১শে ফেব্রুম্বারী জাপানী পালেমেণ্টে জাপানের আগামী বৎসরের বজেট মঞ্জুর হইয়াছে। উহার পরিমাণ দুই শত বার কোটি ইম্বেন । অন্য দেশের মুদ্রার তুলনাম সব দেশেরই মুদ্রার মূল্যের হ্রাসবৃদ্ধি হয়। জাপানী ইয়েনেরও আপেক্ষিক মূল্য বাড়ে কমে । সাধারণতঃ উহা দেড় টাকার সমান ধরা হয় । তাহ হইলে আগামী বৎসর জাপানের রাজস্ব ও ব্যয় তিন শত আঠার কোটি টাকা হইবে ধরা হইয়াছে । জাপানী বজেট কেবল থাস জাপানের, ন৷ সমুদয় জাপান-সাম্রাজ্যের, তাহ ঠিক জানি না। দুই রকম অকুমানই করা যাক। উহা যদি জাপান-সাম্রাজ্যের হয়, তাহ হইলে, ব্রিটিশ ভারতের লোকসংখ্যা জাপান-সাম্রাজ্যের ভিন গুণ বলিয়া, ভারত বর্ষ জাপানের মত ধনী হইলে ব্রিটিশ-ভারতের রাজস্ব জাপানের তিন গুণ অর্থাৎ নয় শত চুয়ান্ন কোটি টাকা হওয়া উচিত । কিন্তু যদি উহ খাস জাপানের হয়, তাহা হইলে, ব্রিটিশ-ভারতের লোকসংখ্য খাস জাপানের চারিগুণেরও বেশী বলিয়া, ভারতীয়েরা জাপানীদের সমান ধনী হইলে ব্রিটিশ ভারতের বজেট হওয়া উচিত বার শত বাহাত্তর কোটি টাকার । এখন দেখা যাক, ভারতবর্ষের বজেটে ধূত রাজস্ব কিরূপ হইয়া থাকে । ব্রিটিশ-ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক বজেট আলাদা আলাদা ধরা হয়, অর্থাৎ ভারত-গহন্মেন্টের বজেট এবং প্রত্যেক প্রাদেশিক গবন্মেণ্টের বজেট আলাদা ধরা হয় । জাপানে তাহ ধরা হয় না, সমস্ত রাষ্ট্রটির একটি বজেট হয় । তাহ হইলে জাপানের সহিত তুলনার জন্ত, ভারত-গবন্মেন্টের ও সমুদয় প্রাদেশিক গবন্মেন্টের বজেটের সমষ্টি লইতে হইবে । বর্তমান বা আগামী বৎসরের এই সমষ্টি আমাদের সম্মুখে নাই, কোন প্রামাণিক বহিতে পাওয়া যায় না । ১৯৩৩ সালের ষ্টেটুসমান্স ইম্যারবুকে ১৯৩১-৩২ সালের আছে। তাহ ২০৩,৭২,৫২,০০০ টাকার। জাপানকে মাপকাঠি ধরিলে ইহা নিতান্ত কম। জাপানী বজেটে যদি সে দেশের মিউনিদিপালিটি ও ডিট্ৰিকূট বোর্ডগুলির জায়ও ধরা হইয় থাকে —খুব সম্ভব হয় নাই, তাহ হইলে ভারতবর্ষের বজেটেও ఫె বিবিধ প্রসঙ্গ—স্বরাজ্য-দলের পুনরুজ্জীবন 为84、 তাহা ধরা উচিত । তাহ ধরিলে ভারতীয় বজেট হয় মোট ২৫৭,৮৭, ১,৪৫২ টাকার । ইহাও জাপানী মাপকাঠি অনুসারে অভ্যস্ত কম। এরূপ ভৰ্ক উঠতে পারে, যে, ইয়েনের দর ১॥০ টাকা ধরা হইগছে, কিন্তু বাস্তবিক এখন উহার দাম এত নয়। তাহ মানিয়া লইয়া যদি ইক্ষেনের দর বার আন ধরা হয়, তাহা হইলেও, জাপানী বজেট থাস জাপানের হইলে সেই মাপকাঠি অনুসারে ত্রিটিশ-ভারতের বজেট হওয়া উচিত ছয় শত ছত্রিশ কোটি টাকার ; আর উস্থা জাপান-সাম্রাজ্যের হইলে সেই মাপকাঠি অনুসারে ব্রিটিশভারতের বজেট হওয়া উচিত চারি শত সাতত্তির কোটি টাকার । কিন্তু ব্রিটিশ-ভারতের রাজস্ব এই উভয় অঙ্ক অপেক্ষাই অভ্যস্ত কম । ভারতবর্ষের তুলনায় জাপান ধনী এই জন্য যে, জাপান “জাতিগঠনমূলক” শিক্ষাশিল্পবাণিজ্যাদি বিভাগে ভারতবর্ষ অপেক্ষ অধিক টাকা খরচ করে ও করিয়া আসিতেছে, এবং জাপান তাহা করিতে পারে, যেহেতু জাপান ধনী। এক দিক দিয়া দেখিলে যাহা কারণ, অন্য দিক দিয়া দেখিলে তাহ ফল । আরও একট কারণ আছে । জাপানের সরকারী কৰ্ম্মচারীদগকে নবাবী চালে থাকিবার বা প্রভূত অর্থ সঞ্চয় করিবার মত বেতন দেওয়া হয় না। প্রভূত শক্তিশালী জাপান-সাম্রাজ্যের প্রধান মন্ত্রীর বেতন এ-দেশের প্রথম শ্রেণীর জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের বেতনের চেয়ে অনেক কম। এই জন্য দেশকে উন্নত ও শক্তিশালী করিবার নিমিত্ত জাপানী গবন্মেণ্ট যথেষ্ট খরচ করিতে পারে। সকলের মূলে এই কথাটি রহিয়াছে, যে, জাপানের গবন্মের্ণ নিজের দেশের জাতীয় গবন্মেটি ; উহাকে কেবল জাপানের স্বার্থের দিকে দৃষ্টি রাথিয়া কাজ করিতে হয়, অন্য কোন দেশের স্বার্থ ও প্রভুত্ব রক্ষাকে মুখ্য লক্ষ্য করিতে । হয় না। তাই, ভারতবর্ষে বজেটের আলোচনার প্রয়োজন থাকিলেও, ভারতীয়দের প্রধান চেষ্ট হওয়া উচিত ভারতবর্ষে জাতীয় গবন্মেটি স্থাপন করা । এই চেষ্ট প্রত্যেক: প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয়ের এবং প্রত্যেক ভারতীয় লোকসমষ্টির । বা দলের করা একটি প্রধান কৰ্ত্তব্য ।