পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখী ধরিয়া লইলেও, সরকারী রিপোর্টের উক্তি প্রমাণিত হয় না । রিপোর্টে প্রথমতঃ ১৯২৯-৩২ এই চারি বৎসরের অঙ্ক দেওয়া হইয়াছে। পুলিসের কাছে এই চারি বৎসরে যথাক্রমে ৭৭৮, ৬৯৭, ৭২৯, ও ৭৭২টি অভিযোগ উপস্থিত করা হয়। পুলিস ও ম্যাজিষ্ট্রেটদের কাছে উপস্থাপিত “সতী” অভিযোগ ঐ চারি বৎসরে যথাক্রমে ১০২৯, ৬৮৪, ২৯০ এবং ৮২১ । ঐ চারি বৎসরে অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হয় যথাক্রমে ২০০৬, ১৩৮৯, ১৫৫২ ও ১৬৫৭ । যদি ১৯২৯ সালের সংখ্যাগুলি বিবেচনা না করা যায়, তাহ হইলে দেখা যাইবে যে, তাহার পর পর তিন বৎসর ক্রমাগত সংখ্যাগুলি বাড়িয়া চলিম্বাছে । সুতরাং সরকারী রিপোর্টের সংখ্যাগুলিতে ত সৰ্ব্বসাধারণের ধারণাই সত্য বলিয়া প্রমাণিত হইতেছে । অথচ গবন্মেটি বলিতেছেন, তাহা ঠিক নয় । অতঃপর সরকারী রিপোর্টে বলা হইতেছে, ১৯২৬ হইতে ১৯৩১ পর্য্যস্ত ছয় বৎসরে অত্যাচরিতা হিন্দুমারীর সংখ্যা যথাক্রমে ৩২৪, ও ৩৩৮ ; এবং অত্যাচরিত মুসলমান নারীর সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯৪, ৫ ৯, ৬৫৭, ৫৩৮ এবং ৫৮২ ৷ অত্যাচরিতার যে ধৰ্ম্মাবলম্বিনীই হউন, অত্যাচারটা পাশবিক বা পৈশাচিক এবং তাহার দমন হওয়া চাই । সরকারী সংখ্যাগুলি ঠিকৃ হইলে, মুসলমান কাগজওয়াল ও নেতারা যে বলিয়া থাকেন তাহদের সমাজে চিরবৈধব্য আদি সামাজিক প্রথা না-থাকায় মুসলমান সমাজে নারীদের উপর এরূপ অত্যাচার হয় না, তাহা সত্য নহে। অথচ এ-পর্য্যন্ত নারীর উপর অত্যাচার দমনে মুসলমান সমাজের কোন উৎসাহ দেখা যায় নাই । সরকারী রিপোর্টে দেখান হইয়াছে, যে, ঐ ছয় বৎসরে মুসলমান দ্বারা অত্যাচরিতা হিন্দু নারীদের সংখ্যা যথাক্রমে آRt fittی وه ۹ ده ها ه د «ه داد ,ه ۰د وه هاد وsلاد অত্যাচরিতা হিন্দু নারীর সংখ্যা ২৪৫, ২• ১, ১৯৮, ২৩১, ২৩৪ ও ১৯৪ । কিন্তু রিপোর্টে ইহাও দেখান উচিত ছিল, যে, মুসলমানদের দ্বারা অত্যাচরিত মুসলমান নারী ঐ ছয় বৎসরে কত, এবং হিন্দুদের দ্বার। অভ্যাচরিতা মুসলমান নারীই বা কত। তাহ হইলে বুঝা হুইত, মুসলমান বদমায়েলরা কত নারীর উপর অত্যাচার করিয়াছে, এবং ૭૨૬, ૭૦ 8, ૭છ૧, ૭૭ર, বিবিধ প্রসঙ্গ-সৰ্ব্বজাতীয় মানবিকত্ত btహి হিন্দু বদমায়েসরাই বা কত নারীর উপর অত্যাচার করিয়াছে। আমরা সব বদমামেসের শান্তি ও সংশোধন চাই, এবং সৰ্ব্বধর্মের নারীর রক্ষা চাই। কিন্তু গবশ্নেটি যদি দেখাইতে চান কোন সম্প্রদায়ে বদমায়েস বেশী আছে, তাহা হইলে সরকারী রিপোর্টে লেখা উচিত ছিল, মুসলমানরা মোট হিন্দুমুসলমান কত নারীর উপর অত্যাচার করিয়াছে এবং হিন্দুরা মোট কত হিন্দু-মুসলমান নারীর উপর অত্যাচার করিয়াছে। ছয় বৎসরে হিন্দুরা কত মুসলমান নারীর উপর অত্যাচার করিয়াছে এবং মুসলমানরা কত মুসলমান নারীর উপর অত্যাচার করিয়াছে, এই দুই প্রস্ত সংখ্যা রিপোর্টলেখক গোপন রাখায় তাহার উদ্দেশু সম্বন্ধে নানাবিধ অনুমান হইবে। পরিশেষে বক্তব্য, রিপোর্টে বলা হইতেছে, যে, রিপোর্টপ্রদত্ত সংখ্যাগুলি হইতে সিদ্ধাস্ত করা যায়, যে, এই প্রকার অপরাধ দমনের জন্য বিশেষ কোন অাইন প্রণয়ন বা বিশেষ কোন উপায় অবলম্বন করা অনাবশুক। আশ্চৰ্য্য সিদ্ধান্ত । ঐরূপ পাশব ও পৈশাচিক অপরাধ বাড়ুক বা না-বাড়ুক, যাহা আছে, তাহারই ত বৰ্ত্তমান আইন দ্বারা ও বর্তমান পুলিসকার্যপ্রণালী দ্বারা দমন হইতেছে না। সেই জন্যই আইনের ও কাৰ্য্যপ্রণালীর পরিবর্তন ও উন্নতি আবশুক । সৰ্ববজাতীয় মানবিকতা সেদিন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক ক্লাব প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলায় একটি সুন্দর বক্তৃতা করেন। যাহাকে ইংরেজীতে ইন্টারস্থাশন্তালিজম ও ইণ্টারন্যাশন্যাল কালচার বলে, তিনি সেই বিশ্বমানবীয় সংস্কৃতি ও একপ্রাণত বিষয়ে কিছু বলেন। প্তাহার বক্তৃতাটির ভাল বাংলা বা ইংরেজী রিপোর্ট বাহির হয় নাই। তবে, শ্রোতারা আশা করি ইহা বুঝিতে পারিয়াছিলেন, যে, তিনি, এই বাংলা দেশেই যে এক শত বৎসর পূৰ্ব্বে রামমোহন রায়ের দ্বারা বিশ্বমানবিকতার আদর্শের প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্ট হইয়াছিল, তাহা অস্বাভাবিক মনে করেন নাই, পরিহাস উপহাসের বিষয় মনে করেন নাই, বরং গৌরবের বিষয়ই মনে করিয়াছিলেন ।