পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ জাম্বুৰ্ব্বেদের ইতিহাস ఉSSr ইন্দ্রবরণ, ধুস্তুর, অতসী, করচ, আজমোদ, এডও, শতপুষ্প, উদুরকণিকা, চন্দন, অজকর্ণ, গুরুচি, টগর, ইন্দ্রযব ইত্যাদি । অথচ আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, সহস্ৰ সহস্ৰ আয়ুৰ্ব্বেদীয় ভৈষজ্যের মধ্যে ইউরোপীয় ভৈষজ্য প্রায় একটিও দেখা যায় না। উপদংশ কুষ্ঠাদি ব্যাধিতে নাসিক প্রভূতি খসিয়া গেলে শস্ত্রোপচার করিয়া নূতন হাড় বসাইয়। আরোগ্য করিবার যে বিধি ভারতবর্ষে প্রচলিত ছিল তাহ। ভারতবর্ষ হইতেই ইউরোপে গৃহীত হইয়াছে । বার্লিনের ডাক্তার রিসবার্গ বলেন যে, এই জাতীয় শস্ত্রবিদ্যায় ইউরোপ যে পারদর্শিতা দেখাইয়াছে তাহার প্রথম নিদর্শন ভারতবর্ষীমুদিগের নিকট হইতেই পাওমা গিয়াছে । তিনি আরও বলেন যে, চামড়া কাটিয় চামড়া জোড় লাগাইবার যে পদ্ধতি তাহাও ভারতবর্ষ হইতেই গৃহীত হইয়াছে । কোষে শস্ত্রোপচারের অনেক ব্যবস্থাও ভারতবর্ষ হইতেই ইউরোপে গৃহীত হইয়াছে, এরূপ মনে করিবার যথেষ্ট কারণ আছে । কীট ও জীবাণু দ্বারা যে নানাবিধ ব্যাধি উৎপন্ন হয় তাহা অতি প্রাচীন কালেই এদেশে জান ছিল তাহা পূর্বেই বলা হইয়াছে । মার্কোপলোর ভ্রমণবৃত্তান্ত হইতে জানা যায় যে মশক-দংশনে যে জরের উৎপত্তি হয় তাহাও এদেশে জানা ছিল এবং মশক-নিবারণের জন্য দক্ষিণ-ভারতবর্ষের সমুদ্রোপকূলবর্তী স্থানে মশারি ব্যবহৃত হইত । মনুষ্যচিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে পশুচিকিৎসাও অতি প্রাচীন কালেই প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিল। অশ্বচিকিৎসার প্রধান প্ৰ বৰ্ত্তক ছিলেন শালিহোত্ৰ ঋষি । ইহা ছাড়া অগ্নিপুরাণ, মৎস্যপুরাণ ও গরুড় পুরাণে অশ্বচিকিৎসার কথা দেথা যায় । শুক্রাচার্য্যের নীতিশাস্ত্রেও অশ্ববৈদ্য সম্বন্ধে অনেক কথা লেখ আছে । সহদেব ও লব উভয়েই অশ্বচিকিৎসা সম্বন্ধে প্রবীণ ছিলেন। জয়দত্তস্বরীর অশ্ববৈদ্যকও এ-বিষয়ের একখানা প্রধান গ্রন্থ । তাহা ছাড়া সিংহদত্ত অশ্বশাস্ত্রসমূদ্র নামে এক গ্রন্থ লিথিয়াছিলেন । মল্লিনাথ হয়লীলাবতী হইতে স্থানে স্থানে শ্লোক উদ্ধৃত করিয়াছেন । ভোজও বাঙ্গীচিকিৎসা নামে এক গ্রন্থ লিখিয়াছিলেন । দীপঙ্করও অশ্ববৈদ্যশাস্ত্র নামে এক গ্রন্থ লিখিয়াছিলেন । ইহা ছাড়া শাঙ্গধর লিখিয়াছিলেন তুরঙ্গ পরীক্ষা, এবং ইন্দু: সেন শালিহোত্রের সার সংগ্রহ করিয়া সারসংগ্রহ নামে গ্রন্থ লিথিয়াছেন । পালকাপ্য প্রণীত গঙ্গায়ুৰ্ব্বেদ অতি প্রাচীন গ্রন্থ : ইহা ছাড়া গজনিরূপণ, মাতঙ্গলীল, গঙ্গচিকিৎসা প্রভৃতি গ্রন্থও রচিত হইয়াছিল। অগ্নিপুরাণে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র ও কামন্দকীয় নীতিশাস্ত্রেও গজচিকিৎসার উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। শুৈনিক শাস্ত্রে পক্ষিচিকিৎসা ও পক্ষীদের আহারপ্রণালীর ব্যবস্থা দেখা যায় । গো-চিকিৎসার কথা অথৰ্ব্ববেদে উল্লিখিত হইয়াছে এবং পরাশরসংহিতা ও আপস্তম্ব সমাৰ্ত্ত ও বিষ্ণুসংহিতা প্রভৃতি গ্রস্থে গো-চিকিৎসার কিছু কিছু উল্লেখ পাওয়া যায়। শালিহোত্রের সম্পূর্ণ গ্রন্থ এখনও পাওয়া যায় না । যে পুস্তকধানি পাওয়া যায় তাহা স্থানে স্থানে খণ্ডিত । এই গ্রন্থখানি শল্য শালাক্যাদি ক্রমে ৮টি অধ্যায়ে সম্পূর্ণ। কথিত আছে যে, শালিহোত্র ছিলেন হয়ঘোষের পুত্র এবং মুশ্রুভের পিতা, এবং স্বশ্ৰতের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়াই শালিহোত্র তাহার গ্রন্থ রচনা করিয়াছেন । কিন্তু কোন কোন স্থানে স্বশ্ৰুতকে বিশ্বামিত্রের পুত্র বলিয়াও বর্ণনা করা হইয়াছে। গণ র্তাহার অশ্বায়ুৰ্ব্বেদে স্বশ্ৰতকে৪ স্বতন্ত্রভাবে অশ্বশাস্ত্রের কৰ্ত্ত বলিয়। বর্ণনা করিয়াছেন । কিন্তু অগ্নিপুরাণে দেখা যায় যে, স্বশ্ৰুত অশ্ববিদ্যা, গজবিদ্যা ও গোচিকিৎস-বিদ্যা ধন্বন্তরির নিকট হইতে শিক্ষা করিয়াছিলেন । শালিহোত্র গান্ধার দেশের লোক ছিলেন বলিয়। কথিত আছে । শালিহোত্রের গ্রন্থখানি ১৩৮১ খৃঃ অব্দে পারস্ত ভাষাক্ষ অনূদিত হয়। গ্রন্থখানির উন্নয় স্থান, উত্তর স্থান, শারীরক, চিকিৎসা স্থান, কিশোর চিকিৎসা, উত্তরোত্তর ও রহস্ত স্থান— এই কয় অধ্যায়ে বিভক্ত । পালকাপা ঋষি সামগায়নাক্ষ মুনির পুত্র ছিলেন। ইনি চম্প ( ভাগলপুর ) দেশের রোমপাদ রাজা কর্তৃক হস্তিচিকিৎসার জন্ত আহত হন । এই কাওশেষে লিখিত আছে যে, পালকাপ্য ও ধন্বন্তর একই ব্যক্তি ছিলেন । ইহার গ্রন্থখানি অতি বিস্তৃত এবং ইহাতে প্রায় ১৬৪টি অধ্যায় আছে । মহাবগ গে লিখিত আছে যে আকাশগোত্ত যখন একটি বৌদ্ধ ভিক্ষুর ভগন্দর স্থানে শস্ত্র প্রয়োগ করিম তাহার একটি বিরাট মুখ স্বষ্টি করিয়াছিলেন, তাহা দেখিয়া বুদ্ধদেব অত্যন্ত বীভৎসভাবে আবিষ্ট হইয়াছিলেন এবং মনুষ্যদেহে এইরূপ শস্ত্রপ্রয়োগ করিতে নিষেধ করিলেন । বোধ হয় তাহার পর হইতে এই দেশে শস্ত্রোপচারের অবনতি জ্বারগু হইয়াছিল। কালক্রমে এই শস্ত্রচিকিৎসার