পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ করি হৃদয়ে। একেই বলি বাস্তব, যে বাস্তবে সত্য হয়েছে আমার আপন । যেখানে আমরা এই আপনকে প্রকাশের জন্য উৎসুক, যেখানে আমরা আপনের মধ্যে অপরিমিতকে উপলব্ধি করি সেখানে আমরা অমিতব্যয়ী, কী অর্থে কী সামর্থে । যেখানে অর্থকে চাই অর্জন করতে, সেখানে প্রত্যেক সিকি পয়সার হিসাব নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকি ; যেখানে সম্পদকে চাই প্রকাশ করতে সেখানে নিজেকে দেউলে করে দিতেও সঙ্কোচ নেই। কেন-ন সেখানে সম্পদের প্রকাশে আপন ব্যক্তি পুরুষেরই প্রকাশ । বস্তুত, আমি ধনী এই কথাটি উপযুক্ত রূপে ব্যক্ত করবার মত ধন পৃথিবীতে কারও নেই। শত্রুর হাত থেকে প্রাণরক্ষণ যখন আমাদের উদ্দেশু তখন দেহের প্রত্যেক চাল প্রত্যেক ভঙ্গী সম্বন্ধে নিরতিশয় সাবধান হতে হয়, কিন্তু যখন নিজের সাহসিকতা প্রকাশই উদ্দেশু তখন নজের প্রাণপাত পৰ্য্যন্ত সম্ভব, কেন-ন এই প্রকাশে ব্যক্তি পুরুষের প্রকাশ। প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় আমরা খরচ করি বিবেচনাপূৰ্ব্বক, উৎসবের সময় যখন আপনার আনন্দকে প্রকাশ করি, তখন তহবিলের সসীমত সম্বন্ধে বিবেচনাশক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায় । কারণ আমরা আপন ব্যক্তিসত্তী সম্বন্ধে প্র বলরূপে সচেতন হত, সাংসারিক তথ্যগুলোকে তথম গণ ই করিনে । সাধারণত মাতুষের সঙ্গে ব্যবহারে আমরা পরিমাণ রক্ষ করেত চলি । কিন্তু যাকে ভালবাসি অর্থাৎ যার সঙ্গে আমার ব্যক্তিপুরুষের পরম সম্বন্ধ তার সম্বন্ধে পরিমাণ থাকে না । তার সম্বন্ধে অনায়াসেই বলতে পারি— জনম অবধি হম রূপ নেহারকু ময়ন না তিরপিত ভেল, লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখহু তবু হিয়৷ জুড়ন না গেল । তথ্যের দিক থেকে এত বড় অভূত অত্যুক্তি আর কিছু হতে পারে না, কিন্তু ব্যক্তিপুরুষের অনুভূতির মধ্যে ক্ষণকালের সীমায় সংহত হতে পারে চিরকাল। “পাষাণ মিলায়ে যায় গামের বাতাসে বস্তুজগতে এ কথাটা অতথ্য, কিন্তু ব্যক্তিলগতে তথ্যের খাতিরে এর চেয়ে কম ক’রে য বলতে যাষ্ট সত্যে পৌছয় না। বিশ্বম্বইতেও তাই। সেখানে বল্প বা জাগতিক শক্তির হিসাবে কড়াকান্ত্রির এদিক-ওদিক হবার জো নেই। যথল সাহিত্যক্তত্ব · কিন্তু সৌন্দর্য্য তথ্যসীমা ছাপিয়ে ওঠে, তার হিসাবের আদর্শ নেই পরিমাণ নেই । উদ্ধ আকাশের বায়ুস্তরে ভাসমান বাস্পপুঞ্জ একটা সামান্ত তথ্য কিন্তু উদয়াস্তকালের মুয্যরশ্মির স্পর্শে তার মধ্যে যে অপরূপ বর্ণলীলার বিকাশ হয় সে অসামান্ত, সে “ধূমজ্যোতিঃসলিলমরুতাং সন্নিপাত:’ মাত্র নয়, সে যেন প্রকৃতির একট। অকারণ অতু্যক্তি, একটা পরিমিত বস্তুগত সংবাদ-বিশেষকে সে যেন একটা অপরিমিত অনির্ববচনীয়তায় পরিণত দেয় । ভাষার মধ্যেও যখন প্রবল অমুভূতির সংঘাত লাগে তখন ত; শব্দার্থের আভিধানিক সীমা লঙ্ঘন করে । ক’রে এই জন্তে সে যখন বলে 'চরণনখরে পড়ি দশ চাদ বঁণদে” তখন তাকে পাগলামি বলে উড়িয়ে দিতে পারিনে । এই জন্য সংসারের প্রাত্যহিক তথ্যকে একস্ত যথাযথভাবে আটের বেদীর উপরে চড়ালে ভাবে লজ্জা দেওয়া হয় । কেল-ন আটের প্রকাশকে সত্য করতে গেলেই তার মধ্যে আতিশয়তা লাগে, নিছক তথ্যে তা সম্ম না । তাকে যতই ঠিকঠাক করে বল যাক না, শব্দের নিৰ্ব্বাচনে ভাষার ভঙ্গীতে ছন্দের ইসারায় এমন কিছু থাকে যেটা সেই ঠিকঠাককে ছাড়িয়ে যায় ধেট অতিশয় । তথ্যের জগতে ব্যক্তিস্বরূপ হচ্চে সেই অতিশয় কেজে ব্যবহারের সঙ্গে সৌজন্তোর 空に乏7 ঐখানে s কেজো ব্যবহারে হিসেব করা কাজের তাগিদ, সৌজন্তে আছে সেই অতিশয় যা ব্যক্তিপুরুষের মহিমার ভাষা । প্রাচীন গ্রীসের প্রাচীন রোমের সভ্যত গেছে অতীতে বিলীন হয়ে । ধখন বেঁচে ছিল তাদের বিস্তুর ছিল বৈষয়িকতার দায় । প্রয়োজনগুলি ছিল নিরেট নিবিড় গুরুভার, প্রবল উদ্বেগ প্রবল উদ্যম ছিল তাদের বেষ্টন করে । আজ তার কোনো চিহ্ন নেই । কেবল এমন সব সামগ্ৰী আজও আছে, যাদের ভার ছিল না, বস্তু ছিল না, দায় ছিল না, সৌজন্যের অত্যুক্তি দিয়ে সমস্ত দেশ যাদের অভ্যর্থনা করেছে ; যেমন করে আমরা সম্ভ্রমবোধের পরিতৃপ্তি সাধন করি রাজচক্রবর্তীর নামের আদিতে পাঁচটা শ্ৰী যোগ করে । দেশ তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল অতিশয়ের চূড়ায়, সেই নিম্নভূমির সমতল ক্ষেত্রে নয় যেখানে প্রাত্যহিক ব্যবহারের ডিড় । মামুষের ব্যক্তিস্বরূপের ষে পরিচয় চিরকালের দৃষ্টিপাত সয়ু, পাথরের