পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ छूषणी చ్చతిఁ এই দুইটি পাশাপাশি জনপদ নামে মুসলমান-প্রতাপ ঘোষণা করিলেও বহুকাল পর্যস্ত হিন্দুরাজার প্রভাবান্বিত ছিল। ডাঃ দীনেশচন্দ্র সেন বিজয়গুপ্ত-প্রণীত মনসামঙ্গলের কোন পাঠে এক ‘অৰ্জুন রাজা’র উল্লেখ পাইয়াছেন যাহার ছিল “মুল্লুক ফতেয়াবাদ বঙ্গরোড়া তক সাম”। এই অর্জুন রাজা সম্ভবতঃ পাঠানরাজের আনুগত্য স্বীকার করিতেন, কিন্তু মামুদাবাদের হিন্দুরাজা গৌড়ের প্রতাপ ক্ষুণ্ণ দেখিলেই মস্তক উন্নত করিতে ত্রুটি করিতেন না। আইন-ইআকবরীতে আমরা পাই, এখানে কেল্লা ছিল, আশেপাশে নদী ছিল, পূৰ্ব্বে জয় সত্বেও শের শাহকে আবার এই প্রদেশ আক্রমণ করিম জয় করিতে হইয়াছিল। সেই জয়ের সময়ে এখানকার রাজার কতকগুলি হস্তী জঙ্গলে পলায়ন করে এবং তাহার পর জঙ্গলের মধ্যে তাহাদের বংশবৃদ্ধি হয় । এই রাজার রাজধানী ভূষণায় ছিল বলিয়া অচুমিত হয় । ঠিক কোন সময়ে মামুদাবাদ নামের উৎপত্তি তাহ বলা যায় না, তবে মনে হয় বাংলার পাঠান নৃপতি ফথ শার (১৪৮১-৮৭ খৃঃ অব্দ। নামানুসারে ফথেয়াবাদের নাম হইয়াছে আর মামুদাবাদের নামও তাহার নিকটবৰ্ত্তী কোন সমমের । শের শাহের আক্রমণের পরবর্তী সময়ের কোন ধারাবাহিক বিবরণ না পাইলেও আমরা বুঝিতে পারি যে হিন্দুরাজাদের প্রভাব প্রবল ছিল—নতুবা মোগল আমলে মামুদাবাদ ও ফথেষাবাদকে শাসনে আনিতে দিল্লীর বাদশাহকে গলদঘৰ্ম্ম হইতে হইত না । আকবরের রাজত্বকালে বাংলা দেশে বরাবর গোলমাল চলিয়াছিল। আকবরনামায় পাওয়া যায়, সৰ্ব্বদা বিবাদ থাকায় বাংলা দেশের নাম হুইয়াছিল বুলঘাক । আকমহলের যুদ্ধের পর মুরাদ খা নামক জনৈক সেনাপতি ফথেয়াবাদ ও বাকূল৷ সরকার জয় করেন বলিয়া ইতিহাসে পাওয়া যায়। বাকুল চন্দ্রদ্বীপে বহুকাল পর্য্যম্ভ স্বাধীন বা অৰ্দ্ধস্বাধীন হিন্দু রাখার রাজত্ব ছিল—স্বতরাং এই জয়ের অর্থ সম্পূর্ণ থাসদখল নহে, আনুগত্য-স্বীকার। ইহার পরও পাঠান ও মোগলের সঙ্ঘর্ষ বাংলা ও বিহারে ভালভাবেই চলিতে লাগিল । ৰাদশাহের কৰ্ম্মচারীদিগের মধ্যেও বিশ্বাসঘাতকের অভাৰ ছিল না। মুরাদ খ। ফখেয়াবাদে বিদ্রোহ দমন করিয়া সেখানে অবস্থিত ছিলেন। তিনি মুখে রাজভক্ত ছিলেন, কিন্তু কাৰ্যতঃ বাদশাহের স্বাখ অপেক্ষা নিজের স্বার্থের চিস্তাই বেশী করিতেন। আকবরনামায় পাওয়া যায়, তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হইলে সে-অঞ্চলের ভূম্যধিকারী মুকুন্দরাম রায় তাহার পুত্রগণকে নিমন্ত্ৰণ করিয়া তাহদের হত্যাসাধন করেন ও সম্পত্তি অধিকার করিয়া লন । “বারভূঞ” গ্রন্থ প্রণেতা আনন্দনাথ রায় কিন্তু লিখিয়া গিয়াছেন, “মোরাদের সহিত র্তাহার বিশেষরূপ সখ্যত থাকা, মুকুন্দ তাহার পুত্ৰগণের যথোচিত সহায়তা সাধনে বদ্ধপরিকর হন।" ইহা তিনি কোথায় পাইলেন জানি না। আনন্দনাথ রায় আরও বলেন, “টোডরমল্ল জানিতে পারিলেন যে, মুকুন্দ মোগল পক্ষাবলম্বী হইয়া পাঠানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন, এজন্য নিতান্ত পরিতুষ্ট হইয়া ফথেয়াবাদে অন্য কোন মুসলমান শাসনকৰ্ত্তা নিয়োগ না করিয়া মুকুন্দ রায়কে রাজোপাধি প্রদান ও ঐ সরকারের কতক শাসনভার অপণ করিলেন।” “মানসিংহ মধ্য সময়ে যখন একবার বাঙ্গ৷লী পরিত্যাগ করিয়া স্বদেশ যাত্রা করেন তৎসময়ে শাসনকৰ্ত্ত সাম্মদ খ, মুকুন্দ রায়কে পদচ্যুত করিম তৎপদে এক জন মুসলমান শাসনকৰ্ত্ত নিযুক্ত করিয়া পাঠান। মুকুন্দ রায় এই আকস্মিক বিপদে পতিত হইয়া চিন্তিত হইলেন বটে, কিন্তু কোনও মতে নব শাসনকৰ্ত্তার হস্তে ফথেয়াবাদ সমর্পণ করিতে স্বীকৃত হইলেন না । উভয় পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধঘটনার অবতারণা হইল। তেজস্বী বীরবর মুকুন্দ রায় অনায়াসে সেই যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে তাড়াইয়। দিলেন। পরে সায়দ খা দলবল সহ উপস্থিত হইয়া মুকুন্দ রায়কে পরাস্ত ও হত করেন।” এই সকল কথাও রায়-মহাশয় প্রমাণ দ্বার সমর্থন করেন নাই। মুকুন্দরাম রায় প্রদত্ত ব্ৰহ্মত্র জমীর দলীলের সন্ধান কালেক্টরীতে পাওয়া গিয়াছে । আকররনামায় পাই, থ৷ আজিম কোক বঙ্গদেশে বিদ্রোহ দমনে প্রেরিত হইলে ( ১৫৮২ খৃষ্টাব্দ ) তাহার বিরুদ্ধে যে-সকল বিদ্রোহী নেতা সমবেত হইম্বাছিলেন তাহার মধ্যে ফথেয়াবাদের কাজীজাদ ছিলেন একজন । ইনি অনেক রণতরী লইয়া আসিয়াছিলেন । কামানের গোলায় ইহার মৃত্যু হইলে কালাপাহাড় ইহার স্থলে নৌবিভাগের ভার গ্রহণ করেন । ইহার কিছুকাল পরে রাজা মানসিংহের উড়িষ্যা জয়ের