পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ छहे बकू ఫిe) & সেদিন ছিল রবিবার, মে মাসের প্রারম্ভ। বুশেন কোরের বসন্তোৎসব অর্থাৎ নাচের দিন । শহরের উপকণ্ঠে “গ্রন থাল” গ্রামের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে সৌধীন রেস্তোর রি বৃহত্তম হলটিকে সাজিয়ে-গুছিয়ে নাচের আসর করা হয়েছে। বুশেন কোরের তরুণ সভ্যরা সকলে তো এসেছেই, ঐ শহরের প্রবীণ নিবাসী, কোরের পুরাতন সভ্যরাও এসেছেন, আর এসেছে ঐ শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তরুণী কন্যারা— ঐ উৎসবের উপযুক্ত সাজে সজ্জিত হয়ে। এ ছাড়া যে-সব সভ্যের ভদ্রবংশীয় বান্ধবী আছে তাদের নিয়ে তো তার। এসেছেই । হান্‌স সেদিন লুইসেকে নিমন্ত্রণ করে সেখানে নিয়ে গেল। কাল অবশ্য সঙ্গে গেল। লুইসের আবির্ভাব সেখানে দস্তুরমত চাঞ্চল্য স্বষ্টি করলে। প্রথমতঃ সে অত রূপসী ব’লে, দ্বিতীয়তঃ সে ভদ্রঘরের মেয়ে নয় ব’লে, তৃতীয়ত: সে হানসের সঙ্গে এসেছে বলে । হানসের প্রচণ্ড থ্যাতি, সে নাকি নারী-হৃদয় জয় করতে অদ্বিতীয় এবং তার জন্যে বহু তরুণীর হৃদয় ভেঙেছে । কোরের নিয়ম, তরুণ-তরুণীর। পরস্পরের সঙ্গে অবাধে নাচে । কোন তরুণ কোন তরুণীকে নাচতে অনুরোধ করলে সে যদি অন্তের কাছে প্রতিশ্রত না থাকে তে সে-নিমন্ত্রণ গ্ৰহণ করতে সে বাধ্য। কিন্তু পূৰ্ব্বে দু-একবার হানসের বান্ধবীকে নাচে আহবান করে বিষম বিপত্তি ঘটেছিল, এমন কি সে ব্যাপার ডুএলে পৰ্য্যস্ত গড়িয়েছিল । হাসের সঙ্গে ডুএল লড়ার অর্থ অবধারিত পরাজয় নিমন্ত্রণ করা। সুতরাং লুইসের মত সুন্দরীর সঙ্গে একবার নাচ পরম সৌভাগ্য জ্ঞান করলেও বহু তরুণ সে ইচ্ছা দমন করাই শ্রেয় মনে করলে | নাচ স্বরু হ’ল । প্রথমেই বাজল উদ্ধাম ‘জ্যাজ । বহু যুগলমূৰ্ত্তি তার তালে তালে নাচছে ! ক্ষিপ্র পদবিক্ষেপে তারা নাচছে চালর্সটন । হান্‌স ও লুইসেও নাচছে। স্বর ও নাচের উন্মাদনায় তারা উৎফুল্ল ! তাদের চোখে মুখে হয়েছে কি আনন্দের উচ্ছ্বাস । তাদের সৌন্দর্য্যের হয়েছে কি অপূৰ্ব্ব বিকাশ। এই যুগল সুন্দরের আত্মহারা নাচ সকলের নজরে পড়ল। অনেকে নাচ থামিয়ে তাদের দেখলে, অনেকে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নাচলে । শেষে সকলেই গেল থেমে ! বাজনা আরও উদাম স্বরে চলল। তারা আরও উৎফুল্প হয়ে নাচল । অনেকে বিমুগ্ধ হয়ে তাদের ‘সোলে নাচ দেখলে । বাজনা যখন থেমে গেল, সকলের প্রচণ্ড করতালিধ্বনি সেই বৃহৎ নাচ-ঘর প্রতিধ্বনিত করলে । পুলকিত চিত্তে তারা এসে কালের পাশে বসল। সুনৃত্যের মিষ্ট-প্রম-জাত মধুর ক্লাস্তি লুইসের সুন্দর মুখকে স্বন্দরতর করে দিল । কয়েকটা নাচের পর একটা নাচের মধ্যে হানস জিজ্ঞাসা করলে, “কেমন লাগছে ?” লুইসে প্রফুল্ল মনে বললে, ‘‘চমৎকার ” হানস—ভারি খুশী হ'লুম। লুইসে— সত্যি আপনি বড় ভাল নাচেন । হান্স—ভাল নাচি বলে আমার খ্যাতি আছে বটে। লুইসে-আগে বুঝি খুবই নাচতেন ? হান্স—নিশ্চয়! বালিন, মুনশেন, লাইপৎসিগ ইত্যাদি শহরের শ্রেষ্ঠতম সুন্দরীদের সঙ্গে বহুং নেচেছি ! লুইসে—বটে ! হানস—নিশ্চয়! সে স্বযোগও আমার অনায়াসে জোটে। জানেনই তো আমার পিতা হচ্চেন বিখ্যাত ধনী, তার অনুগ্রহের জন্য বহু সম্বাস্ত ব্যক্তি লালায়িত । লুইসে-ও ! হান্স—কিন্তু জানেন আপনার মত সুনরী কোথাও দেখিনি ! আপনার সৌন্দর্যোর খ্যাতি শুনেই তো এই গোঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছি। লুইসে—এ সব বাজে কথা। বড় বড় শহরের সোসাইটিমহিলাদের সঙ্গে কি আর আমার তুলনা হয় ? হানস-সত্যি আপনার মত এত স্বন্দর শরীরের গঠন, এত সুন্দর চোখ, মুখ, নাক—এত স্বন্দর রঙ-এত স্বন্দর হাত-পায়ের গড়ন—আর এত স্বন্দর চুলের বাহার কোথাও দেখিনি । লুইসে–ইস্‌! মিথ্যা চাটুবাদ করবেন না। হানস-সত্যি বলছি ! আপনার প্রয়োজন শুধু একটু আভিজাত্যের কুলটুরের স্পর্শ, তাহলেই আপনি জাৰ্ম্মানীর শ্রেষ্ঠ সুন্দরী হবেন । লুইসে—খামুন, থামুন। বাজনা গেল খেমে। কিছুক্ষণ পরে আবার নাচ আরম্ভ