পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8० ধ্ৰু প্রবাসী ; দেশে আজকাল কী সব গণ্ডগোল চলছে দূর থেকে তার অল্প আভাস পাই । আমাদের গুমটের দেশে এ সব গোলমাল ভালো—মনকে তার সঙ্কীর্ণ গণ্ডি থেকে জাগিয়ে তোলে । কিন্তু গোলমালেরই আবার নিজের একটা গণ্ডি আছে । অন্ধকার আমাদের পথ ভোলাবার ওস্তাদ বটে কিন্তু আলেয়ার আলোও পথ ভোলাম । দেশব্যাপী গোলমালের মধ্যে যদি সত্যের অভাব ঘটে তা হোলে সে আমাদের ঘূর্ণির মধ্যে ঘুরিয়ে বেড়ায়, কোথাও এগোতে দেয় না। ঘোরে। গণ্ডি আমাদের ধরে রাখে, উত্তেজনার গণ্ডি আমাদের ঘুরপাক খাওয়ায় । দুইয়েরই পরিধি সঙ্কীর্ণ। একটা স্থির গণ্ডি, আর একটা চলতি গণ্ডি ; একটাতে ঘুম পাড়ায়, আর একটাতে মাথা ঘোরায় । সত্য হচ্চে পরম গতি, অর্থাৎ এমন গতি যার প্রত্যেক পদক্ষেপেই সার্থকতা । আর মোহ হচ্চে সেই গতি যার চলায় সার্থকতা খানে না, কেবল নেশা আনে। একটা হচ্চে ধনাত্মক গতি, আর একটা হচ্চে ঋণাত্মক গতি । দেশ জুড়ে যখন তোলাপাড়া ঘটছে তখন ভালো করেই ভাবস্তে হবে, এই গতির প্রকৃতি কি। যে জলে স্রোত প্রবল কিন্তু তট অবৰ্ত্তমান সে-ই হচ্চে বদ্যা। বন্যায় ভাঙে, ভাসিয়ে দেয়, ফসল নষ্ট করে। আমাদের দেশে যে আবেগ এসেছে সে যদি একমাত্র ভাঙনেরই বাৰ্ত্তা নিম্নে আসে তা হোলে অনাবৃষ্টিতে শুকনো ডাঙার ক্ষেতে অতিবৃষ্টির অগাধ ক্ষতির মধ্যে ডুবে মরতে হবে । আমার অনুরোধ এই যে, মন যখন কোনোমতে জেগেছে, তখন সেই শুভ অবকাশে মনটাকে কষে কাজে লাগিয়ে দাও, আকাজে লাগিয়ে শক্তির s{<t<ß c+TCai at 1 Non-Co-operation ( =Gt-ç<!অপারেশ্বন ) আকাজ—তার আবির্ভাব অস্তিমে। শাস্ত্রে বলে কৰ্ম্মের দ্বারাই কৰ্ম্ম থেকে মুক্তি, নৈষ্কর্মের দ্বারা নয় ; পাস করার দ্বারাই স্কুল থেকে মুক্তি, আমার মত ইস্কুল ত্যাগ করার দ্বারা নয়। আজ সময় এসেছে নিজেদের সব কাজ নিজেরা মিলে করতে হবে। সে কাজ কতখানি বাহফল দেবে তা ভাববার দরকার নেই, কিন্তু কাজের উপলক্ষে আমাদের যে মিল সেই মিলই সত্য মিল, সেই সত্য মিলই হচ্চে চরম লাভ ! অ-কাজ করবার উপলক্ষ্যে ষে মিল সে কখনই সত্য এবং স্থায়ী হোতে পারে না । আহারে ఏ98S শরীরে যে শক্তি আনে সেইটাই শ্রেয়, মদের নেশায় যে শক্তি তার বেগsআপাতত বেশি হোলেও পরিণামে প্রতিক্রিয়ার দিনে তার হিসাব নিকাশ হোতে থাকে। গীতা বলেছেন— স্বল্পমপ্যস্য ধৰ্ম্মস্য ত্রায়তে মহতো ভয়াৎ—সত্যের মিলও অল্প যেটুকু দেয় সেও মস্ত বড়, আর ক্রোধের মিল, খিলাফতের মিল, এমন বর দিতে পারে যাকে নিয়ে কোথায় ফেলব ভেবে অস্থির হোতে হবে । মিথ্যা জোড় যখন ভাঙে তখন ভালোয় ভালোয় সরে যায় না, নিজেব মধ্যে দমাদম মাথা ঠোকাঠুকি করতে থাকে । এই জন্যে আবার একবার দেশকে এই কথা বলবার সময় এসেছে যে সমিধ যদি সংগ্রহ হয়ে থাকে তবে সে যজ্ঞ করবার জনাই, দাবানল জালাবার গুন্তে নয়। একদিন আমি স্বদেশী সমাজে যা বলেছিলাম আবার সেই কথাই বলতে চাই । আমরা যে রাগারগি করছি তার গতি বাইরের দিকে অর্থাৎ অন্য পক্ষের দিকে অর্থাৎ পরে তার কর্তব্য করেছে, কি, না-করেছে, সেইটেই তার মুখ্য লক্ষ্য। ভিক্ষা করবার বেলাতেও সেই লক্ষ্যই প্রবল। আমি বলি আপাতত বাইরের পক্ষকে ভোলো । পরের সঙ্গে অসহকারিতার দিকেই সমস্ত ঝোক দিয়ে না। নিজের লোকের সঙ্গে সহকারিতার দিকেই সমস্ত ঝোক দাও । আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুৰ্ত্তকার্য, বিচার প্রভৃতি সমস্ত কাৰ্য্যভার সম্পূর্ণভাবে নিজের হাতে নেব এই পণ করে । সেজন্তে সমস্ত দেশ জুড়ে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দরকার। গান্ধিজী সেই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে আমাদের প্রত্যেককে কাজে আহবান করুন, অকাজে না । আমাদের কাছ থেকে টাকার এবং কাজের খাজনা তলব করুন। আমাদের অন্নকষ্ট, জলকষ্ট, পথকষ্ট, রোগকষ্ট, সমস্ত নিজের দূর করব বলে আমাদের সত্যা গ্রহ করান । তার বাহফল আপাতত কী হবে তার হিসাব করবার কোনো দরকার নেই, কিন্তু এই সত্য গ্রহণ ও পালনের ফল গভীর ও স্থায়ী। সনে বুদ্ধ৷ শুভঙ্গ সংযুনন্ত । আমাদের সংযোজনের দরকার আছে, কিন্তু সেই যোগ শুভবুদ্ধির যোগ, যে বুদ্ধি আমাদের পুণ্যকর্শ্বে নিযুক্ত করে। সেই কল্যাণ কৰ্ম্ম আমাদের শুভবন্ধনে র্যাধে বলেই অশুভ বন্ধন থেকে স্বউই মুক্তি দেয় । আমাদের দেশের অতি লক্ষ্মীছাড়া পলিটিক্স্ এই সহজ কথা আমাদের ভূগিয়ে দিয়েছে।