পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ সাহিত্যতত্ত্ব *. SS পারে ঐতিহাসিক তথ্য, না থাকৃতে পারে আবশ্যক সংবাদ, সম্ভবপরত। সম্বন্ধেও তার হয়ত কোনো কৈফিয়ৎ নেই। ફ્રેંમ কোনো একটা রূপ দাড় করায় মনের সামনে, তার ঔংস্থক্য জাগিয়ে তোলে, তাতে শূন্তত দূর করে ; সে বাস্তব। গল্প স্বরু করা গেল : এক ছিল মোট কেঁদো বাঘ গায়ে তার কালে কালো দাগ । বেহারাকে খেতে গিয়ে ঘরে আয়নাট পড়েছে নওরে । এক ছুটে পালালো বেহার, বাঘ দেখে আপিন চেহারা । গ। গী করে রেগে ওঠে ডেকে, o গায়ে দাগ কে দিয়েছে একে । ; ঢেকিশালে মাসি ধান ভানে বাঘ এসে দাড়ালো সেখানে । পাকিমে ভীষণ দুই গোফ বলে, “চাহ গ্লিসেরিন সোপ !” ছোটো মেয়ে চোখ দুটো মস্ত করে ই করে শোনে । সে অস্থির হয়ে বলে, না, বল সে নিশ্চিত জানে, সাবানের চেয়ে, যারা সাবান মাখে বাঘের লোভ তাদেরি পরে বেশি । তবু এই সম্পূর্ণ আজগৰী গল্প তার কাছে সম্পূর্ণ বাস্তব, প্রাণীবৃত্তান্তের বাধ তার কাছে কিছুই না । ঐ আয়না-দেখা ক্ষ্যাপা বাঘকে তার সমস্ত মনপ্রাণ একান্ত অনুভব করাতেই সে খুশি হয়ে উঠছে । একেই বলি মনের লীলা, কিছুই-না-নিয়ে তার স্তষ্টি, ত র আনন্দ । সুন্দরকে প্রকাশ করাই রস-সাহিত্যের একমাত্র লক্ষ্য নয়, সে কথা পূৰ্ব্বেই বলেছি । সৌন্দর্য্যের অভিজ্ঞতায় একটা স্তর আছে, সেখানে সৌন্দৰ্য্য খুবই সহজ । ফুল সুন্দর, প্রজাপতি মুন্দর, ময়ুর সুন্দর । এ সৌন্দৰ্য্য একতলাওয়াল, এর মধ্যে সদর অন্দরের রহস্য নেই, এক নিমেষেই ধরা দেয়, সাধনার অপেক্ষ রাখে ন । কিন্তু এই প্রাণের কোঠায় যখন মনের দান মেশে, চরিত্রের সংশ্ৰব ঘটে তখন এর মহল বেড়ে যায়, তখন সৌন্দর্ঘ্যের বিচার সহজ হয় না । যেমন মাহুষের মুখ । এখানে শুধু চোখে চেয়ে সরাসরি আমি বলি আজ এক্ট পয্যস্ত । তারপরে { রায় দিতে গেলে ভুল হবার আশঙ্কা । সেখানে সহজ আদর্শে যা অকুন্দর তাকেও মনোহর বলা অসম্ভব নয় । এমন কি সাধারণ সৌন্দর্য্যের চেয়েও তাঁর আনন্দজনকত হয়ত গভীরতর । ঠংরির টপ্পা শোনবামাত্র মন চঞ্চল হয়ে থাকে, টোড়ির চোতাল চৈতন্তকে গভীরতায় উদবুদ্ধ করে । “ললিত লবঙ্গলতী পরিশীলন” মধুর হতে পারে কিন্তু “বসন্ত পুষ্পাভরণং বহষ্ট্ৰী” মনোহর। একটা কানের আর একটা মনের, একটাতে চরিত্র নেই লালিত আছে, আর একটাতে চরিত্রই প্রধান । তাকে চিনে নেবার জন্তে অঙ্কুশীলনের দরকার করে । যাকে স্বন্দর বলি তার কোঠা সঙ্কীর্ণ, যাকে মনোহর বলি তা বহুদূরপ্রসারিত । মন ভোলাবার জন্যে তাকে অসামান্য হতে হয় না, সামান্ত হয়েও সে বিশিষ্ট । ধ আমাদের দেখা অভ্যস্ত, ঠিক সেইটেকেই যদি ভাষায় আমাদের কাছে অবিকল হাজির করে দেয় তবে তাকে বলব সংবাদ । কিন্তু আমাদের সেই সাধারণ অভিজ্ঞতার জিনিষকেই সাহিত্য যখন বিশেষ করে আমাদের সামনে উপস্থিত করে তখন সে আসে অভূতপূৰ্ব্ব হয়ে, সে হয় সেই একমাত্র, আপনাতে আপনি স্বতন্ত্র । সস্তানস্নেহে কৰ্ত্তব্যবিস্মৃত মাতুম অনেক দেখা যায়, মহাভারতের ধুতরাষ্ট্র আছেন সেই অতি সাধারণ বিশেষণ নিয়ে । কিন্তু রাজ্যাধিকারবঞ্চিত এই অন্ধ রাজা কবিলেখনীর নানা স্বক্ষ স্পর্শে দেখা দিয়েছেন সম্পূর্ণ একক হয়ে । মোট গুণটা নিয়ে তার সমজাতীয় লোক অনেক আছে, কিন্তু জগতে ধৃতরাষ্ট্র অদ্বিতীয় , এই মাতৃযের একান্তত তার বিশেয ব্যবহারে নয়, কোনো আংশিক পরিচয়ে নয়, সমগ্রভাবে । কবির সৃষ্টি-মস্ত্রে প্রকাশিত এই তার অনন্তসদৃশ স্বকীয় রূপ প্রতিভার কোন সহজ নৈপুণে সম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে, ক্ষুদ্র সমালোচকের বিশ্লেষণী লেখনী তার অস্থ পারে না । সংসারে অধিকাংশ পদার্থ প্রত্যক্ষত আমাদের কাছে সাধারণ শ্রেণীভুক্ত । রাস্তা দিয়ে হাজার লোক চলে ; তার যদিচ প্রত্যেকেই বিশেষ লোক তবু আমার কাছে তারা সাধারণ মাহুষমাত্র, এক বৃহৎ সাধারণতার আস্তরণে তারা আবৃত, তার অস্পষ্ট । আমার আপনার কাছে / আমি সুনিশ্চিত আমি বিশেষ, অন্য কেউ যখন তার বিশিষ্টত /