পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१९ "প্রবাসীটে। SSDBS কেহ অপর কাহাকেও বলিতেছে । কিন্তু যামিনী ভিতরে ভিতরে লজ্জাম অভিভূত হইয়া যাইতেছিল। তথাপি একটা কৌতুহলমিশ্রিত উদ্বেগও তাহার মনকে নাড়া দিতেছিল। স্বল্পকণ্ঠে কহিল, “কে দেখেছে ? বলুন।” নিজের সম্বন্ধে আলোচনায় লজ্জাবোধ করিয়াও নিৰ্ম্মল! বলিল, “সে-দিন আমার বৌদি এই ধরণের কি বলছিলেন । আমাকে টিপ পরতে অনুরোধ করছিলেন আপনি দেখে খুশী হবেন বলে। আমি তাকে বললুম, আপনি কি সৰ্ব্বদাই আমার মুখের পানে চেয়ে অত লক্ষ্য ক’রে দেখেন আমি কি পরেছি বা না-পরেছি ? আমাকে এত ক’রে দেখবার কি যে মানে বুঝতে পারছি না।” নিৰ্ম্মলার মনটা ভিতরে ভিতরে একটু খুশী হইয়াছিল, কিন্তু তবু কারণটা ঠিক সে ধরিতে পারিতেছিল না। “এর মানে বে কি হতে পারে তা কি সত্যি তুমি বুঝতে পার না ? তুমি কি বুঝবে না......।” যামিনী হঠাৎ অত্যন্ত আবেগভরে কি বলিতে গিয়া থামিয়া গেল। চন্দ্রকাস্ত ঘরে ঢুকিতেছেন। আলমারীর পাল্লাটা খুলিয়া রাখিয়াই নিৰ্ম্মল৷ বিমলাচিত্তে সে ঘর ছাড়িয়া চলিহ্মা গেল। সে হাজার দর্শনযোগ্য হইলেও যামিনীর এতখানি বিচলিত হইবার কারণ কি জন্য হইল ভাবিয়া নিৰ্ম্মলা বিস্মিত হইতেছিল। স্বন্দর জিনিষ দেখিয়া সে নিজে ত কখনও এমন করে না। আনন্দ ও ভয়মিশ্রিত অচেনা একটা কি অনুভূতি নিৰ্ম্মলার হৃদম-দ্বারে আসিয়া উকি দিতে লাগিল। যামিনী চেম্বার হইতে উঠিয়৷ ঘরময় পায়চারি করিয়া বেড়াইতে লাগিল । চন্দ্রকাস্তবাবু তাহার কোন ভাবাস্তর লক্ষ্যের মধ্যেই না আনিয়া কহিলেন, “ঘামিনী, আমাদের নিৰ্ম্মলের সেই মীনাকর রিষ্টওয়াচটা দেখেছ ? সেই যে ম্যাজিষ্ট্রেটের স্ত্রী বাড়িতে গিয়ে তার নাম ক’রে তাদের কলেজে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন । বলেছিলেন, নিৰ্ম্মলের সেক্সপীরের আবৃত্তি গুনে তিনি এতদূর মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তাকে তার উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হয়নি বলে মনটা তার খুং খুৎ করছিল। তাই তাড়াতাড়ি নিজের হাতের ঘড়িটা পাঠিয়ে দিয়েছেন। দেখবে ...এই আলমারীতেই সেইটে আছে ।" * মামিনী-ঘড়ি দেখিবার জন্য বিন্দুমাত্র কৌতূহল মা দেখাইয়া কহিল, ‘জাচ্ছা, চঞ্জকান্ত বাৰু, একটা কথা জ্ঞাপনাকে বলব ?”

“কি কথা ? রোলো আগে ঘড়িটা বার করি। কোথায় রাখলুম ঠিক মনে পড়ছে না। নিৰ্ম্মল, নিৰ্ম্মল—” “থাক, তাকে আর ডাকবেন না। র্তার সম্বন্ধেই কথা, র্তার অনুপস্থিতিতেই বলতে চাই। আচ্ছা চন্দ্রকাস্ত বাবু, সত্যি ক’রে স্বীকার করুন, পাত্র-হিসাবে আমাকে আপনি কেমন মনে করেন ?” “পাত্র !” চন্দ্রকান্ত তখনও ঘড়ির খাপটা খুজিয়! বেড়াইতেছিলেন, একটু আশ্চৰ্য্য হইয়া যামিনীর দিকে চাহিলেন । পাত্র সম্বন্ধে কোন কথা যে ভাবা তাহার প্রয়োজন আছে, আজ পর্য্যস্ত তাহা তাহার মনে পড়ে নাই । “ধরুন আমি যদি নিৰ্ম্মলাকে বিয়ে করতে চাই, আপনি কি তাতে রাগ করবেন ?...আপনার কি কোন রকম আপত্তি আছে ?” চন্দ্রকাস্ত কোন কথা না বলিয়৷ চুপ করিয়া বসিয়াছিলেন। কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে মাথা নাড়িতে নাড়িতে কহিলেন, “নিৰ্ম্মলের বিম্বে ! সে-কথা তো এখনও আমি কিছু ভাবিনি।” যামিনী গম্ভীর ভাবে কহিলেন, “এইবারে ভাবা উচিত ।” চন্দ্রকান্ত তাহার টাকে হাত বুলাইতে বুলাইতে অপ্রস্তুতের মত কহিলেন, “ভাবব বইকি। নিশ্চয় ভাবব । ওর বয়স কত হ’ল, এই তুমিই হিসেব ক’রে দেখ না, উনিশ-শো তের সালে জন্ম, এখন আঠারো হ’ল । তাই তো এ সব কথা এতদিন খেয়াল করিনি।” আরও অনেকক্ষণ তিনি চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয় সহসা স্বপ্তোখিতের মত ঘামিনীর মুখেয় দিকে চাহিয়া কহিলেন, “আচ্ছা যামিনী, নিৰ্ম্মলার বিয়ের পর আমি তাকে দেখতে পাব ত ?” র্তাহার প্রশ্ন শুনিয়া যামিনীর মনটা আৰ্দ্ৰ হইল। কিন্তু তাহার পরেই তাহার রাগ হইল, নিৰ্ম্মলার বিবাহের কথা উঠিতেই প্রথম প্রশ্ন তাহার মনে জাগিল তাহার স্বথ বা কল্যাণ কামনা নয়, কেবল এখনকার মত তখনও তিনি সৰ্ব্বদা তাহাকে চোখে দেখিতে পাইবেন কি-না। সে বলিল, “আমার বাবা পশ্চিমের উকীল, আর আমাদের বাড়িও সেখানে কিন্তু আপনার যখনই দেখযার ইচ্ছে হবে তাকে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু আপনি সাধারণের চেয়ে এত অন্ত রকম চন্দ্রকাস্তবাবু ! ধার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবেন তার অবস্থা জাতি স্কুল—এ সক