পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“ভারতী” ঝরণা-কলমের কারখানা কয়েক দিন পূৰ্ব্বে আমরা কুমার গোকুলচন্দ্র লাহা এবং কোম্পানীর ‘ভারতী’ ঝরণা-কলমের কারখানা দেখিতে গিয়াছিলাম। ইহাতে নানা দামের ও নানা রকমের ঝরণাকলম ছাড়া পেন্সিল এবং পেনহোল্ডার ও নিব প্রস্তুত হয় । সোনার যে নিবের ডগায় ইরিডিয়ম ধাতুকণা লাগান থাকে, তা ছাড়া ঝরণা-কলমের অন্য সব অংশই কারখানায় প্রস্তুত হইতেছে দেখিয়া স্বর্থী ও উৎসাহিত হইলাম। ঐরুপ নিবও প্রস্তুত হইতে পারে ; কিন্তু ভারতী ঝরণা-কলম কারখানায় খ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখনও ঝরণা-কলমের কাটতি ভারতবর্ষে এত বেশী হয় নাই, যে, তাহাতে বহুমূল্য যন্ত্রপাতি আনাইলেও ঐরূপ নিব বিদেশী নিবের সঙ্গে দামে টক্কর দিতে পারে । পরে উহাও প্রস্তুত হইবে—মূলধনের, যন্ত্রের, কারিগরের অভাব হইবে না ; কেবল কাটতি বাড়িলেই সব হইবে। কারিগরের অভাব হইবে না যে বলিতেছি, তাহ বাঙালী কারিগরদিগকে লক্ষ্য করিম্বাই বলিতেছি । কারণ, এই কারখানায় সামান্য ২১ জন ছাড়া সব কারিগর ও শ্রমিক বাঙালী । তাহাদের মধ্যে ইংরেজী-জানা প্রবেশিক পর্য্যস্ত পড়া যুবকও আছে । তাহাজের রোজগার সাধারণ কেরানীদের চেয়ে কম নয় । এই কারখানায় ঝরণা-কলম ছাড়া পেন্সিল এবং পেনহোল্ডার ও নিব প্রস্তুত হয় বলিয়াছি। তাহার সমুদয় অংশই কারখানায় প্রস্তুত হইতে দেখিলাম। ঝরণা-কলমের কালি এবং ক্লিপও এখানে প্রস্তুত হয়। এই কারখানার অনেকগুলি যন্ত্রও কারখানাতেই বাঙালী কারিগর দ্বারা নিৰ্ম্মিত । ডক্টর নরেন্দ্রনাথ লাহা ইহার তত্ত্বাবধায়ক, এবং শ্ৰীযুক্ত বলাইচাঁদ দত্ত বি-এ ও অন্নদপ্রসাদ শাল বি-এ ইহার কার্য্যাধ্যক্ষ । শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কারখানা দেখিতে আসিয়া ফাউণ্টেন পেনের ঝরণা-কলম নাম দিয়াছেন । -o: স্বাক্ষ্ম এবং শক্ত রকমের কারিগরীর কাজও বাঙালী কারিগরদের দ্বারা হইতে পারে, এই ধারণা আমাদের আগে হইতেই ছিল । তাহার একটি প্রমাণ এই কারখানায় পাইলাম। - পান্নালাল শীল বিদ্যামন্দির কলিকাতার বেলগাছিয়া পল্লীস্থিত এই বিদ্যামন্দিরটি কয়েক দিন পূৰ্ব্বে আমরা দেখিতে গিয়াছিলাম। ইহা নিজের জমীতে নিজের বাড়িতে অবস্থিত। শিক্ষাবিষয়ে ইহার বিশেষত্ব এই, যে, এখানে সাধারণ কেতাবী শিক্ষা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি কুলেশ্বন পরীক্ষা পৰ্য্যস্ত দেওয়া হয়, অধিকন্তু অনেক রকমের পণ্যশিল্প এবং কিছু ললিত কলা শিখান হয়। যে-সব ছাত্র কেবল কারিগরী শিখিতে চায়, তাহাদিগকে সাধারণ শিক্ষার শ্রেণীতে যাইতে হয় ন ; কিন্তু যাহারা সাধারণ শিক্ষা পাম, তাহাদিগকে কোন দুটি পণ্যশিল্প শিখিতে হয় । যাহারা কেবল কারিগরী শিখিবে, তাহারা সম্পূর্ণ নিরক্ষর হইলে তাহাদিগকেও লিখনপঠনক্ষম করিয়া দেওয়া ভাল । এই বিদ্যামন্দিরে কোন ছাত্রকেই বেতন দিতে হয়