পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• জ্যৈষ্ঠ বিবিধ প্রসঙ্গ—বজের নারীদের উপর অভ্যাচার "పెనీ ঐ সময়ের মধ্যে অঙ্গাঙ্ক প্রদেশে যে-সব সন্ত্রাসক অত্যাচার হইয়াছে, তাছার মধ্যে মাদ্রাজে ৬, বোম্বাইএ ১৭, বিহার ও উড়িষ্ণায় ১৪, আসামে ১৩, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে ৬, মধ্যপ্রদেশে ৬, ব্ৰাহ্ম শূন্ত, যুক্ত-প্রদেশে ৩৬, পঞ্চাবে ২• এবং দিল্লীতে ৪—মোট ১২২টি হইয়াছে । বাংলা ব্যতীত অন্যাস্থ্য প্রদেশে যত লোক নিহত হইয়াছে, তাহার মধ্যে ৫ জন রাজপুরুষ এবং অন্যান্ত লোকের মধ্যে ২১ জন। আহতের সংখ্যা রাজপুরুষদের মধ্যে ২২ জন এয অস্তান্ত ৩১ জন। বাংলা দেশে যে এত বেশী নরহত্য আদি হইতেছে ইহা অভ্যস্ত দুঃখের বিষয় । কিন্তু এই দুষ্কৰ্ম্মগুলা যে সমস্তই সস্ত্রাসনবাদীরা করিতেছে ব! রাজনৈতিক উদ্দেশ্র্যেই এই কাজগুলার সমস্তই করা হইয়াছে, তাহার প্রমাণ নাই । অবশ্য, উদ্দেশ্য যাহাই হউক, এরূপ কাজ যাহার করে, তাহীদের শাস্তি হওয়া উচিত, এবং যাহাতে এরূপ দুষ্কার্য্য নিবারিত হইতে পারে, তাহারও চেষ্ট হওয়া উচিত । কিন্তু কি কারণে ও কি উদ্দেশ্যে এই সব অপরাধে মানুষ প্রবৃত্ত হইতেছে, তাহার অনুসন্ধান অনাবশ্যক নহে । কারণ ও উদ্দেশ্য ন জানিলে প্রতিকার হয় না। উদ্দেশু ও কারণ প্রধানতঃ রাজনৈতিক হইলে, প্রতিকারও প্রধানতঃ রাজনৈতিক উপাম্বে করা দরকার হইতে পারে। আর যদি কারণ ও উদ্দেশ্র প্রধানতঃ আর্থিক হয়, তাহা হইলে প্রতিকারও প্রধানতঃ অর্থনীতির পথে আবিষ্কার করিতে হইবে । রাষ্ট্রীয় পরিষদে ষে সংখ্যাগুলি দেওয়া হইয়াছে, তাহাতে বাংলা দেশেই অধিকাংশ উপদ্রব হইতেছে প্রমাণ হয় বটে, কিন্তু মার্চ মাসে তারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় সার হারি হেগ যে বলিয়াছিলেন, রাজনৈতিক হত্য বাংলা দেশের একচেটিয়া, তাহা মিথ্যা বলিয়া প্রমাণ হইতেছে । এই সব উপদ্রব ভারতর্বের অন্য সব অংশের চেয়ে বাংলা দেশে বেশী হওয়ার কারণ সম্ভবতঃ এই, ধে, আধুনিক সময়ে বঙ্গের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাস অন্য সব প্রদেশ হইতে কতকটা ভিন্ন রকমের এবং বাঙালীর স্বভাবও অন্য প্রদেশের ভারতীয়দের স্বভাব হইতে কিছু পৃথক রকমের । কিন্তু ব্রিটিশ গবক্সেণ্ট ও ভারতীয় নেতারা যদি মনে করিয়া থাকেন, যে, সন্ত্রাসঙ্কজাতীয় মনুষ্য কেবল বাংলা দেশেই আছে বা ভারতবর্ষেই আছে, তাহা হইলে ইহা তাহদের একটা মস্ত স্কুল। পৃথিবীর জন্য অনেক দেশেও সস্ত্রাসককাৰ্য্য চলিতেছে। আমাদের ইহা বলিবার উদ্দেশ্য এ নয়, যে, যেহেতু অন্যান্য দেশেও ইহা হইতেছে অতএব ইহা নির্দোষ বা মামুলী, স্বতরাং ইহার কোন প্রতিকার অনাবশ্যৰ । আমরা যাহা বলিতে চাই তাহা এই যে, সমস্যাটির সম্মুখীন অন্ত অনেক দেশের লোককেও হইতে হইতেছে । অতএব সেই সব দেশের নেতৃস্থানীয় লোকেরা এবং মানবজাতির নেতৃস্থানীয় লোকেরা এই সমস্যার সমাধানকল্পে কি পরামর্শ দেন তাহ জানা দরকার । দুষ্কৰ্ম্ম বন্ধ করিবার ও বন্ধ রাখিবার জন্য শাস্তি ও বলপ্রয়োগ কখন কখন আবশ্যক হইতে পারে,—তাহার আলোচনা এখানে করিতেছি না। কিন্তু দুধর্মের প্রবৃত্তি বিনষ্ট করিতে হইলে হৃদয়মনের যে পরিবর্তন আবশ্যক তাহ কেবল শাস্তি ও বলপ্রয়োগ দ্বারা হইতে পারে না । তাহার জন্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, এবং সামাজিক ব্যবস্থাকে ন্যায় ও মানবিকতার উপর প্রতিষ্ঠিত করা আবশক । চরিত্রহীনতার জন্য পদচ্যুতি সিংহলের ব্যবস্থাপক সভার-সভাপতি কোন কুলবধুর সৰ্ব্বনাশ করায় তাহার বিরুদ্ধে মোকদ্দমা হয় । বিচারে তাহাকে পচিশ হাজার টাকা থেসরিত দিতে হয় । এই ব্যক্তিকে সিংহলবাসীরা সভাপতির পদ হইতে তাড়াইয়াছেন, অধিকন্তু তাহাকে রাজনৈতিক সব কাজ হইতে দূর করিতে প্রতিজ্ঞ করিয়াছেন । পারনেলের মত শক্তিমান আইরিশ নেতাকে চরিত্রহীনতার জন্য রাজনীতিক্ষেত্র হইতে অপস্থত হইতে হইয়াছিল । স্তর চালর্স ডিস্ক ইংলণ্ডের উদারনৈতিক দলের একজন ষড় নেতা ছিলেন । চরিত্রহীনতার জন্য তাহাকেও নেতৃত্ব হারাইতে হইয়াছিল । বৰ্ত্তমান সময়ে বাংলা দেশ এ-বিষয়ে কোন সৎ দৃষ্টান্ত দেখাইবার সাহস ও ক্ষমতা রাথে কি ? বঙ্গের নারীদের উপর অত্যাচার আমরা বৈশাখের প্রবাসীর বিবিধ প্রসঙ্গে বলিয়াছিলাম, ষে, বঙ্গের ১৯৩২-৩৩ সালের সরকারী শাসনবিবরণীতে ইহা দেখান উচিত ছিল, যে, ১৯২৬ হইতে ১৯৩১ পর্য্যস্ত ছয় বৎসরে হিন্দু বদমায়েলদের দ্বারা হিন্দু-মুসলমান উভয়বিধ কত নারীর উপর অত্যাচায় হইয়াছে এবং মুসলমানদের স্বায়াই বা উভয়বিধ ক্ষেত মারীর উপর অত্যাচার হইয়াছে ।