পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- চতুর্থ পরিচ্ছেদ পৌষ মাসের শেষে আমাদেব বাড়ি সরগরম হয়ে উঠল— শুনলাম ওঁদের গুরুদেব আসবেন বলে চিঠি লিখেচেন। এই শুকদেবের কথা আমি এদের বাড়িতে এর আগে অনেক শুনেচি —জ্যাঠামশাদের ঘরে র্তার একটা বড় বাধানো ফটোগ্রাফ দেখেছিলাম-গুরুদেব চেয়ারে বসে আছেন, জ্যাঠামশায় ও জ্যাঠাইমা ছু-জন স্থ-দিকে মাটিতে বসে তার পারে পুপাৰলি দিচ্চেন। অনেক দিন থেকে ছবিখান দেখে দেখে গুরুদেব সম্বন্ধে আমার মনে একটা কৌতুহল হয়েছিল— কি রকম লোক একবার দেখবার বড় ইচ্ছে হত। ষ্টেশনে তাকে জানতে লোক গিয়েছিল—একটু বেলা হ’লে দেখি দাদা এক ভারী মোট বয়ে আগে আগে আসচে– পেছনে ব্যাগ-হাতে জ্যাঠামশাদের কৃষাণ নিমু গোয়ালা । গুরুঙ্গেব হেঁটে আসচেন, রং কালো, মাথার সামূনের দিকে চাৰু-গাৱে চাদ, পারে চট। আমার জাঠতুতে, খুড়তুতে ভাইবোনের দরজার কাছে ভিড় করে দ্বাড়িম্বেছিল-পায়ের খুলে নেওয়ার জন্তে তাদের মধ্যে কাড়াকড়ি পড়ে গেল। আমি এগিয়েও গেলাম না, পায়ের ধুলোও নিলাম না। জ্যাঠাইম গুরুদেবের পা নিজের হাতে খুমে আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিলেন, খুড়ীমার বাতাস করতে লাগলেন-ছেলেমেয়েরা তাকে ঘিরে দ্বাড়িয়ে রইল, তিনি সেজখুড়ীমাকে জিজ্ঞেস্ করলেন—বেীম তোমার ছেলের তোতলামিটা সেরেচে । মেজখুড়ীমাকে বললেন—গোষ্ঠ ( মেজকাকার নাম) আজকাল কি বাদার কাছারী থেকে গরমের সময় একদম আসে না ... কতদিন আগে এসেছিল বললে । বাড়ির ছেলেমেষেদের একে, ওকে, ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন—দু-একটা কথা জিগোলও করলেন–কিন্তু দ্বাদ যে অত বড় ভারী মোট বন্ধে আনলে ষ্টেশন থেকে, সে-ও সেখানেই দ্বাড়িয়ে—তাকে ঐকট মিষ্টি কথাও বললেন না। আমার রাগ হ’ল, তিনি কি ভেবেচেন দাদা বাড়ির চাকর ? তাও ভাবা অসম্ভব এইজস্কে দৃষ্টি-প্রদীপ ঐবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে, ওখানে যতগুলো ছেলেমেন্থে দ্বাড়িয়ে ভিড় ক’রে আছে, তাদের মধ্যে দাদার রূপ সকলের আগে চোখকে আকৃষ্ট করে—এ গাম্বে দাদার মত রূপবান বালক নেই, শুধু এ বাড়ি তো দূরের কথা। আশা করে দ্বাড়িয়ে আছে, একটা কথাও তো বলতে হয় তার সঙ্গে । শুকদেবের জন্মে বিকেলে বাড়িতে কত কি খাবার তৈরি হ’ল—মেজখুড়ীম, সন্ধর মা, জ্যাঠাইমা-সবাই মিলে ক্ষীরের, নারকোলের, ছানার কি সব গড়লেন। মাকে এ-সব কাজে ডাক পড়ে না, কিন্তু দেখে একটু অবাক হ’লাম সন্ধর মাকে ওঁরা এতে ডেকেচেন। মা আর সম্বর মার ওপর শত উৰ কাজের ভার এ বাড়ির। সন্ধুর মা’র অদৃষ্ট ভাল দেখচি । - গুরুদেব সন্ধা আঙ্কিক সেয়ে বাইরে এলে তাকে যখন খাবার দেওয়া হ’ল তখন সেখানে বাড়ির ছেলেমেয়ে সবাই ছিল—আমরাও ছিলাম। কিন্তু হিরণ দিদি ও সেজকাকীম সকলকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলেন। শুরুদেব বললেনকেন ওদের যেতে বলুচ বেীমা, থাকুন, ছেলেপিলের গোলমাল করেই থাকে— গুরুদেব তিন-চার দিন রইলেন। তার জন্মে সকালে বিকেলে নিত্য-নতুন কি খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাই মে হল । পিঠে, পাম্বেস, সন্দেশ, ছানার পাস্থেল, ক্ষীরের ছাচ, চন্দ্রপুলি, লুচি-তিনি তো অত খেতে পারতেন না-আমর বাদে বাড়ির অঙ্গ ছেলেমেয়েরা তার পাতের প্রসাদ খেত। তিনি জলখাবার খেয়ে উঠলে তার রেকৰিতে বা খালা বা পড়ে থাকত, কাকীমার জেৰ ছেলেমেয়েদের দিতেন—আমরা সে সময় সেখানে থাকৃতাম না-কারণ প্রথম দিকে ছেলেমেয়ের সেখানে থাকলে কালীম বকৃতেন—তারপর গুরুদেবের খাওয়া হয়ে গেলে যখন তাদের । ডাক পড়ত, তখন বাড়ির ছেলের কাছে কাছেই থাকতে ব’লে তারাই যেত—আমি কারুর পাতের জিনিষ খেতে