পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ সকালে আমরা বাড়ির সামনে বেলতলায় খেলছিলাম। সীতা বাড়ির ভেতর থেকে বার হয়ে এল, আমি বললুম– চা হয়েচে সীতা ? সীতা মুখ গম্ভীর করে বললে- চা আর হবে না । মা বলেচে চা চিনির পয়সা কোথায় যে চ হবে ? কথাটা আমার বিশ্বাস হ’ল না, সীতার চালকি আমি যেন ধরে ফেলেচি, এই রকম স্বরে তার দিকে চেয়ে হাসিমুথে বললুম,— যা, তুই বুঝি থেয়ে এলি ? চা-বাগানে আমাদের জন্ম, সকালে উঠে চ। খাওয়ার অভ্যাস আমাদের জন্মগত, চ ন খেতে পাওয়ার অবস্থা আমর। কল্পনাই করতে পারিনে । সীতা বললে---- নী দাদা, সত্যি, তুমি দেখে এসে চ হচ্চে না । তারপরে বিজ্ঞের মূবে বললে বাবার যে চাকরি হচ্চে না, ম বলছিল fાન નtત કામitના છારુફ બ્રિટિશ ના ૮૭l bા !...ગામal এখন গরিব হয়ে গিয়েচি যে । সীতার কথায় আমাদের দারিদ্রের রূপটি নূতনতর মূৰ্ত্তিতে আমার চোখের সাম্নে ফুটল । জানতুম যে আমরা গরিব হয়ে গিয়েচি, পরের বাড়িতে পরের মুখ চেয়ে থাকি, মঙ্গল বিছানায় শুষ্ট, জলখাবার খেতে পাইনে, আমাদের কার র কাছে মান নেই, সবই জানি । কিন্তু এসবেও নিজেদের দারিদ্র্যের স্বরূপটি তেমন ক'রে বুঝিনি, আজ সকালে ৮ না খেতে পেয়ে সেটা যেমন ক’রে বুঝলুম । বিকেলের দিকে বাব! দেপি পথ বেয়ে কোথা থেকে বাড়িতে আসচেন । আমাক্ষ দেখে বললেন—শোন জিতু, চল শিমুলের তুলে কুড়িয়ে আনি গে--- আমি শিমুল তুলোর গাছ এই দেশে এসে প্রথম দেখেচি-- গাছে তুলো হয় বইয়ে পড়লেও চোখে দেখেচি এখানে এসে এই বৈশাখ মাসে । আমার ভারি মজা লাগল- উৎসাহ ও খুশীর স্বরে বললুম-শিমুল তুলে ? কোথায় বাবা ?...চল ধাই—সীতাকে ডাকৃবো ?... বাব বললেন-ডাকু, ডাকু, সবাইকে ডাকৃ–চল আমরা ६झे---- বাবাও আমার পেছনে পেছনে বাড়ি ঢুক্লেন। পরের দিন ষষ্ঠ ও দাদার জন্ম-বার । মা কোথা থেকে খানিকট। ছধ জোগাড় ক’রে রান্নাঘরের দাওয়ার উকুনে বসে বসে ক্ষীরের পুতুল গড়ছিলেন—বাবার স্বর শুনেই মুখ তুলে দৃষ্টি-প্রদীপ 令> চেয়ে এক চমক বাবার দিকে দেখেই একবার চকিত দৃষ্টিতে ওপরে জ্যাঠাইমাদের বারান্দার দিকে একবার কি জন্তে চাইলেন-- তারপর পুতুল-গড় ফেলে তাড়াতাড়ি উঠে এসে বাবার হাত ধরে ঘরের মধ্যে নিয়ে গেলেন । আমার দিকে ফিরে বললেন— যা জিতু, বাইরে খেলা কয় গে যা— আমি অবাক হয়ে গেলুম । বলতে যাচ্ছিলাম—ম, বাবা যে শিমুল তুলো কুড়োবার - কিন্তু মার মুথের দিকে চেয়ে আমার মুখ দিয়ে কথা বাৱ হ’ল না। একটা কিছু হয়েচে যেন–কিন্তু কি হয়েচে আমি বুঝলাম না । বাবা মদ থেয়ে আসেন নি নিশ্চম—মদ খেলে আমরা বুঝতে পারি- খুব ছেলেবেল থেকে দেখে আসচি, দেখলেই বুঝি। তবে বাবার কি হ’ল ?... অবাকু হয়ে বাইরে চলে এলুম। v3 এথানকার স্কুলে আমি ভৰ্ত্তি হয়েছি, কিন্তু দাদা আর পড়তে চাইলে না ব’লে তাকে ভৰ্ত্তি করা হয়নি। প্রথম কল্প মাস মাইনের জন্যে মাষ্টার-মশায়ের তাগাদার চোটে আমার চোথে জল আস্ত— সাড়ে ন’ আন পক্ষস মাইনে—তাও বাড়িতে চাইলে কারুর কাছে পাইনে, বাবার মুথের দিকে চেয়ে বাবার কাছে তাগাদ করতে মন সৰ্ব্বে না । শনিবার, সকালে সকালে স্কুলের ছুটি হবে । স্কুলের কেরাণী রামবাবু একখানা খাতা নিয়ে আমাদের ক্লাসে ঢুকে মাইনের তাগাদ সুরু করলেন । আমার মাইনে বাকী ছ-মাসের-আমাষ ক্লাস থেকে উঠিয়ে দিয়ে বললেন—বাড়ি গিয়ে মাইমে নিয়ে এস থোকা, নইলে আর ক্লাসে বসতে দেবে। না কাল থেকে । আমার ভারি লজ্জা হ’ল--দুঃথ তে৷ হ’লই । আড়ালে ডেকে বললেই তো পারতেন রামবাবু, ক্লাসে সকলের সাম্নে—ভারি— দুপুরে রোদ বা ঝ করচে । স্কুলের বাইরে একট। নিমগাছ । ভারি স্বন্দর নিমফুলের ঘন গন্ধটা । সেখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবলুম কি করা যায়। মাকে বল্ব বাড়ি গিয়ে ? কিন্তু জানি মায়ের হাতে কিছু নেই, এখুনি পাড়ায় ধার করতে বেঙ্কৰে, পাবে কি না-পাবে, ছোট মুখ করে বাড়ি ফিরবে-ওতে আমার মনে বড় লাগে ।