পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- ہمیـی-بی، چست۔ -- ২২ "প্রবাসীস্ট হঠাৎ আমি অবাক হয়ে পথের ওপারে চেয়ে রইলুম– ওপারে সামু নাপিতের মুদীখানার দোকানটা আর নেই, পাশেই সে ফিতে ঘুন্সির দোকানটাও নেই -- তার পাশের জামার দোকানটাও নেই- একটা খুব বড় মাঠ, মাঠের ধারে বড় বড় বঁাশগাছের মত কি গাছের সারি কিন্তু বাঁশগাছ নয় । দুপুরবেলা নয়, বোধ হয় যেন রাত্রি-জ্যোৎস্না রাত্রি-দূরে সাদা রঙের একটা অদ্ভুত গড়নের বাড়ি, মন্দিরও হ’তে পারে । নিমগাছের গুড়িটাতে ঠেস্ দিয়ে দাড়িয়েছিলুম, সাগ্রহে সাম্নের দিকে ঝুকে ভাল দেখতে পাওয়া গেল, তখনও তাই আছে জোৎস্নাভর একটা মাঠ, কি গাছের সারি-দূরের সাদ বাড়িট । দু-মিনিট । পাচ মিনিট । তাড়াতাড়ি চোখ মুছলাম আবার চাইলুম--এখনও অবিকল তাই । একেবারে এত স্পষ্ট, গাছের পাতাগুলো যেন গুণ তে পারি, পার্থীদের ডানার সব রং বেশ ধরতে পারি ... তার পরেই আবার কিছু নেই, খানিকক্ষণ সব শূন্য— তার পরেই সামু নাপিতের দোকান, পাশেই ফিতে খুন্সির দোকান ৷ বাড়ি চলে এলুম। ধখনই আমি এই রকম দেখি, তগন আমার গা কেমন করে – হাতে পায়ে যেন জোর নেই, এমনি হয় । মাথা যেন হালকা মনে হয় । কেন এমন হয় আমার ? কেন আমি এ-সব দেখি, কাউকে একথা বলতে পারিনে, মা, বাবা, দাদা, সীত, কাউকে নয় । আমার এমন কোনো বন্ধু বা সহপাঠী নেই, যাকে আমি বিশ্বাস ক’রে সব কথা খুলে বলি। আমার মনে যেন কে বলে-এর এ-সব বুঝবে না । বন্ধুরা হয়ত হেসে উঠবে কি ওই নিয়ে ঠাট্টা করবে । ওবেলা থেয়ে যাইনি । রান্নাঘরে ভাত খেতে গিয়ে দেখি শুধু সিমভাতে আর কুম্ড়োর ডাটা চচ্চড়ি । আমি ডাটা খাইনে-সিম যদি বা খাই সিমভাতে একেবারেই মুখে ভাল লাগে না । মাকে রাগ করে বললুম –ও দিয়ে ভাত থাবো কি ক’রে ? সিমভাতে দিলে কেন ? সিমভাতে আমি খাই কখনও ? কিন্তু মাকে যখন আমি বকৃছিলুম জামার মনে তখন মামের ওপর রাগ ছিল না। আমি জানি আমাদের ভাল ఏ98ఎ খু9ওয়াতে মায়ের ধত্বের ত্রুটি কোনো দিন নেই, কিন্তু এখন ম অক্ষম, অসহাম – হাতে পয়সা নেই, ইচ্ছে থাকৃলেও নিরুপায় । মায়ের এই বর্তমান অক্ষমতার দরুণ মায়ের ওপর যে করুণা সেটাই দেখা দিল রাগে পরিবর্তিত হয়ে । চেয়ে দেখি মামের চোখে জল । মনে হ’ল এ সেই মা—চবাগানে থাকৃতে মিস নটনের কাছ থেকে আমাদের খাওয়ানোর জন্তে কেকু তৈরি করবার নিয়ম শিখে বাজার থেকে ঘিময়দা কিচমিচ ডিম চিনি সব আনিয়ে সারা বিকেল ধরে পরিশ্রম ক’রে কতকগুলো স্বাদগন্ধহীন নিরেট ময়দার ঢিপি বানিয়ে বাবার কাছে ও পর দিন মিস নর্টনের কাছে হাস্যাস্পদ হয়েছিলেন । তারপর অবিশি মিস নর্টন ভাল করে হাতে ধরে শেখায় এবং মা ইদানীং খুব ভাল কেকৃষ্ট গড়তে পারতেন । ম। বাংলা দেশের পাড়াগায়ের ধরণ-ধারণ, রান্ন, আচারব্যবহার ভাল জানতেন না। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে চা-বাগানে চলে গিয়েছিলেন, সেখানে একা একা কাটিয়েছেন চিরকাল সমাজের বাইরে— পাণ্ডাগায়ের ব্রত নেম্ পূজোআচ্ছা আচার এ-সব তেমন জানা ছিল না । এদের এই ঘোর আচারী সংসারে এসে পড়ে আলাদা থাকলেও মাকে কখা সহ করতে হয়েচে কম নয় । পয়স থাকুলে যেটা হয়ে দাড়াত গুণ – হাত খালি থাকাতে সেট হয়ে দাড়িয়েছিল ঠাট্র, বিদ্রুপ, শ্লেষের ব্যাপার-জংলীপনা থিরিষ্টানি বা বিবিয়ান । মার সহগুণ ছিল অসাধারণ, মুখ বুজে সব সহ করতেন, কোনদিন কথাটিও বলেন নি । ভক্সে ভয়ে ওদের চালচলন, আচারব্যবহার শিখবার চেষ্টা করতেন-নকল করতে যেতেন— তাতে ফল অনেক সময়ে হ’ত উল্টো । আরও মাসকতক কেটে গেল । এষ্ট ক-মাসে আমাদের যা অবস্থা হয়ে দাড়ালে, জীবনে ভাবিনিও কোনো দিন ষে অত কষ্টের মধ্যে পড়তে হবে । দু-বেলা ভাত খেতে আমরা ভুলে গেলাম। স্কুল থেকে এসে বেলা তিনটের সময় খেয়ে রাত্রে আর কিছু খাওয়ার ইচ্ছেও হ’ত না । ভাত খেয়ে স্কুলে যাওয়া ঘটত না প্রাঞ্জই, অত সকালে মা চালের জোগাড় করতে পারতেন না, সেটা প্রায়ই ধার ক’রে নিয়ে আলতে হ’ত । সব সময় হাতে পয়সা থাকৃত ন-এর মানে, আমাদের চা-বাগানের সৌধীন জিনিষপত্র, দেরাজ, বাক্ষ—