পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একখানা চোর টানিয়া আনিয়া নিকটে ধসিল, বসিয়া একদৃষ্টি সোমেজের মুখের দিকে চাহিয়া রছিল। ইহার মুখে .তেজেন্দ্রের সাদৃশ্ব এত কোথা বোধ হয় ? দেহের গঠন ড এক নয়, সোমেস্ত্ৰ তেজেজ্ঞের চেয়ে লম্বী চওড়ায় অনেকখানি বড়, মুখের কাট একই রকম, তবে রং বিভিন্ন। চোখ দু-জনেরই নীল, কিন্তু সোমেন্ত্রের চোখের দৃষ্টি গম্ভীর, চিঙ্কাকুল, তেজেক্সের চোখ হইতে সারাক্ষণ যেন আলো ঠিক্রাইমা পড়ে, সে-চোখে নিত্যনূতন ভাবের অভিাগ। গম্ভীর, ধীরস্বভাব, সোমেন্দ্রকে দেধিস্থা কেন ধে চিরতরুণ, উচ্ছ্বাসপ্রবণ তেজেন্দ্রকে এত বেশী করিম মনে পড়ে, তাহ বুঝিতে পারা শক্ত। বদিও তেজেন্দ্র সোমেন্দ্রের চেয়ে দশ বৎসরের বড়, যদিও তাহার চুলে পাক ধরিতে আরম্ভ করিয়াছে, তবু তাহার মুখ যেন কুড়ি বৎসরের তরুণের মুখ, কৰা মনের ভাব প্রকাশ করিবার আগেই মুখের ভাবেই তাহা ধরা পীড়ম্বা ষায় । রাত্রে সকলে থাইরা শুইতে খাইবার পরেও সোমেন্দ্র অনেকক্ষণ বারাদায় বসিয়া রহিল। অতীতের কত স্থতিই না তাহার মনে জাগিতে লাগিল। শকুন্তলাকে সে হত প্রথম যৌবনে ভালই বাসিয়াছিল। সে বহুদিনের কথা, সে বেদনাও সে প্রায় জুলিয়া গিয়াছে, তবু কোনো নারীই তাহার জীবনে শার স্থান পায় নাই। সোমেন্দ্রের বোধ হইতে লাগিল ৭ে যেন কত শত বৎসর ধরিয়া বাচিমা আছে, এই না-পাওয়ার ব্যথাও যেন তাহার চিরসাণী । শকুন্তলা তখন তেজেজ্ঞের অতি প্রিন্থ ছাত্রী ছিল, দুই জনের প্রতিভার চরমতম বিকাশ ঘটিয়াছিল পরস্পরের সাধ্যে। তাহাদের সঙ্গীতের মোহিনীশক্তি সমস্ত রাজধানীকে মন্ত্ৰমুগ্ধ করিয়া ফেলিয়াছিল। সেমেক্স যসি৷ বসিয়া দেখিত, গুনিত, তাহার বুকের ভিতর নিরাশা ফ্রমেই জমাট হুই৷ আলিত। যে দ্বার খুলিহার কোনো আপাই তাহার নাই, সে-স্বারে আঘাত করা সে অবশেষে ছাড়িম্বাই দিল । শকুন্তলার হৃদয়ে সে কখনও স্থান পাইল না। সোমেশ্র স্থির করিয়া আসিআছিল যে এখানে এক সপ্তাহ মাত্ৰ থাকিবে, কিন্তু এক সপ্তাহ গড়াইতে গড়াইতে শেষে তিন সপ্তাহে গিম্বা ঠেকিল। কি করিম ষে সে মুক্তি পাইবে তাহলে ভাবিয়া পায় না। একটা দ্বার আছে বটে,

  • প্রবামী শুa

ఎ983 কিন্তু সেটার কথা ভাবিতে তাহার মন শিহমিয় ওঠে। রোজই চিঠি এবং টেলিগ্রাম আসিতেছে, তাহার কৰ্ম্মজীবনের অসংখা তাগিদ। কিন্তু সে নড়িবার নাম করে না, নড়িবার তাহার উপায় নাই। সকালবেলাটা সে বেড়াইয়া কাটাইয় দেয়, মাইলের পর মাইল ইটিস্থা চলিয়া যায়। দুপুরে থাeয়ার পর হইতে, সে নিজের কঠোর কৰ্ত্তব্য পালন করিতে বসে। ভাগ্যবিধাতা তাহাকে বেশ এক অদ্ভুত অভিনয়ের ভার দিয়াছেন। জীবনের প্রথম হইতেই সে এই অভিনয় করিয়া আসিতেছে, যদিও স্থান, কাল এবং অন্য অভিনেতাগুনি বার-বার বদলাইয়াছে। সোমেন্দ্রের একই কাজ, সে অন্তের স্থান পূর্ণ করিবার জন্যই আছে । সকল ক্ষেত্রে, সকল কালে সে তেজেক্সের ছবি মাত্র, সেইরূপেই তাহার একমাত্র মূল্য, সোমেন্দ্র বলিয়া জগতে তাহার কোনো স্থান নাই। তেজেন্দ্রের জীবন বেগবান নদের মত, শত শত ক্ষুদ্র স্রোত তাহাতে বিলীন হইঙ্গা তাহার বিস্তৃতিসাধন করিয়াছে। সোমেন্দ্রের জীবনও সেইরূপ একটি ক্ষুদ্র স্রোত মাত্র । তেজেদের জীবনের রথ অতি দ্রুত চলিয়াছে, তাহাঁর চক্রের তলে মিস্পিষ্ট হইয়াছে কত দুৰ্ব্বল প্রাণী । সেগুলির ব্যথা মোচনের চেষ্টা সোমেন্ত্র ইতিপূৰ্ব্বেও করিয়াছে, এই প্রথম থার নয়। সে নিঞ্জের মনের ভাব বিশ্লেষণ করিবার কোন চেষ্টা করিল না, কিন্তু এই মেয়েটির পরলোক-প্রমাণের পথটিকে একটু সহজ, একটু স্বগম, করিবার কাজটা সে ভ্রাতার কাজ বলিয়াই গ্রহণ করিল। প্রতিদিনই সে বেশী করিয়া বুঝিতে লাগিল যে তাহার প্রয়োজন শকুন্তলার কাছে বাড়িয়াই চলিয়াছে অথচ প্রয়োজনটা সত্যই তাহার নয়, সোমেন্দ্রের নয়। নিয়তির কি অদ্ভুত খেয়াল ! সে শকুন্তলাকে একটুও বে সাহায্য করিতে পারিতেছে, তাহার কারণ ধে সে তেজেজ্ঞের ছবি। ঘূতক্ষণ শকুন্তলা তাহার কাছে বসিয়া থাকে, ততক্ষণ সোমেন্দ্রের রূপ, লোমেন্দ্রের কথা, সোমেন্দ্রের হাতমুখ নাড়ার ভঙ্গীর মধ্যে সে তেজেন্দ্রকেট খুজিয়া বেড়ায়। যেটুকু পায় তাহ অবলম্বন করিম্বাই সে বঁাচিয়া আছে। ভাংrর মৃত্যুছায়াচ্ছন্ন চিত্র ইহাতেই অভিভূত, কত স্বখের স্বপ্ন, কত বিগত দিনের স্বধৰ্ম্মতি তাহার দিনগুলি জুড়িয়া থাকে, রাত্রে সে গভীর ঘুমে অচেতন হইয় পড়ে। নিষ্ঠুর মরণের কথা শকুন্তলা আর ভাবিবার অবসর পায় না।