পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরাণে প্রাকৃতিক বিপর্যায় ঐগিরীন্দ্রশেখর বসু অধিকাংশ শিক্ষিত ব্যক্তির ধারণা যে, পুরাণগুলি রূপকথার স্থায় নানাপ্রকার অবাস্তব, অসম্ভব ও অতিপ্রাকৃত ঘটনার ববরণে পূর্ণ; পুরাণে বিশ্বাসযোগ্য কোন ব্যাপারের উল্লেখ প্রায় নাই বলিলেই হয় ; যদি বা কিছু থাকে তবে তাহা এত অতিরঞ্জিত যে তাহা হইতে সার উদ্ধার করা দুঃসাধ্য । এইরূপ বিশ্বাসের বশবৰ্ত্তী হইয়াই যুক্তিবাদী আধুনিক পণ্ডিতগণ পুরাণে মনোনিবেশ করন নাই । অষ্টাদশ মূল পুরাণ ও বহু উপপুরাণ লিখিত হইয়াছে। সকল পুরাণ এক সময়ের নহে। কোনটি প্রাচীন, কানটি নিতান্ত অৰ্ব্বাচীন । একই পুরাণে প্রাচীন ও অৰ্ব্বাচীন অংশ আছে । অধুনা-প্রচলিত পুরাণগুলির মধ্যে বিষ্ণুপুরাণ ও বায়ুপুরাণ পৰ্ব্বাধিক গ্রামাণিক ও প্রাচীন বলিয় মুধীগণ বিবচনা করেন । পুরাণে কি কি বিযয়ের আলোচনা থাকে, তাহ বায়ুপুরাণের ৪১০ শ্লোক দেখ লাইবে ; যথা, সৰ্গশ্চ প্রতিসর্গশ্চ বংশো মম্বস্তরাণি চ | বংশু মুচরিতং চেতি পুরাণং পঞ্চলক্ষণম্ ॥ অর্থাৎ, স্বষ্টি ও প্রলয়ের বিবরণ, মস্বস্তরের বিবরণ, বিভিন্ন রাজবংশের বিবরণ ও সেই সকল বংশজাত ব্যক্তিগণের বিবরণ পুরাণে থাকিবেই। এতদ্ব্যতীত বিশেষ বিশেষ ঘটনার বিবরণ ও বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্ম ও মোক্ষ-প্রতিপাদক আখ্যায়িকাও পুরাণে দেখা যায় । স্থত নামক বিশেষ সম্প্রদায়গত ব্যক্তিগণ পুরাণ-বক্ত ছিলেন । বায়ুপুরাণে আছে, “প্রাচীন পণ্ডিতগণ নির্দেশ করিয়াছেন যে, অমিততেজা দেবতা, ঋষি, রাজা ও অন্তান্ত মহাত্মাদিগের বংশবৃত্তান্ত জানিয়া রাখাই স্বতের স্বধৰ্ম্ম।”। বায়ু ৩,৩১,৩২ ৷ স্থতকে বহুস্থানে সত্যব্রতপরায়ণ বিশেষণে অভিহিত করা হইয়াছে । পুরাকালে ভারতবর্ষ বহু খণ্ড খণ্ড রাজ্যে বিভক্ত ছিল । প্রত্যেক রাজার সভায় এক জন করিয়া মাগধ থাকিতেন । মাগধগণ নিজ নিজ প্ৰভু রাজার বংশ-বিবরণ ও কীৰ্ত্তিকলাপ giftại gifstrza i dž5 fềÈfặņ= ( State Historian ) বলিলে আমরা বাহ বুঝি, মাগধ তাঙ্গাই । পূর্ববর্ণিত স্থতগণ বিভিন্ন দেশের মাগধগণের নিকট হইতে সমসাময়িক “ডিষ্টরি’ সংগ্ৰহ করিতেন। কোন মাগধ স্বীয় প্রভু সম্বন্ধে কোন অতুক্তি করিয় থাকিলে বা প্রভুর কোনও দোষ গোপন করিয়া থাকিলে সূতগণ তাত সংশোধন করিতেন । এইজন্তই স্থতগণকে সতীব্রতপরায়ণ বলা হইয়াছে। স্বতগণ সকল রাজারই বংশবিবরণ।fদ জানিতেন । পুরাকালে রাজা ও ঋষিগণ প্রায়ই যজ্ঞ অনুষ্ঠান করিতেন । যজ্ঞে নন দেশ হইতে বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ ও বিদ্বান ঋষিগণ নিমজ্জিত হইয়। অসিতেন। যজ্ঞে স্বতগণ আগমন করিয়া নিজ নিজ সংগৃহীত বিবরণ পাঠ করিতেন । এই স্থতোক্ত কাহিনী লিপিবন্ধ করিয়া রাখা এক শ্রেণীর ঋধির কার্য ছিল। পরম্পরাপ্রাপ্ত স্বত-কাহিনী ঋষিগণ কর্তৃক গ্রন্থাকার নিবদ্ধ হইয়। পুরাণ নামে পরিচিত হইয়াছিল । পুরাণ-সংগ্রহ বহু প্রাচীন কাল হইতে প্রচলিত আছে । পুরাণকৰ্ত্ত ঋধিগণ বিভিন্ন কালে পুরাণকে পরিবদ্ধিত করিয়াছেন ও বিশেয বিশেয় ঘটনার মন্বস্তর নিন্দেশ করিয়াছেন। মন্ধস্তর নিদেশ ও কাল নিদেশ একই কথা । মম্বস্তরের সঙ্কেত অন্তক্র আলোচনা করিয়াছি । পুরাণকার ঋধিগণের মতে জগতের স্বষ্টি, স্থিতি ও লয় বার-বার আবৰ্ত্তিত হইতেছে । অতি অতি দীর্ঘকালে এইরূপ একটি আবৰ্ত্তন সম্পন্ন হয় । পুরাণকার ঋষি স্বষ্টির আদি হইতে আরম্ভ করিয়া প্ৰলয়কাল পর্যাস্তু বিভিন্ন জাগতিক ঘটনার বিবরণ কাল-নিদেশ সহকারে লিপিবদ্ধ করিতে চাহেন । এইজন্তই তিনি পুরাণে সৃষ্টি ও প্রলয়কালের অবস্থা আলোচনা করিয়াছেন । পুরাণের পঞ্চ লক্ষণ বিচার করিলে পুরাণকে হিষ্টরি বলিতে কোন বধ৷ থাকিবে না । পুরাণকার চাহেন যে, তাহার