পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3Q3 দেখিয়াছেন । বিষ্ণুপুরাণও বলিয়াছেন যে, প্রলয়কাল উপস্থিত হইলে মহবিগণ পলাইয় জনলোক প্রভৃতিতে আtশ্রয় লন । অনেকের মতে জন লোক চীনদেশের প্রাচীন নাম । পুরাণে প্রলয়কালের বর্ণনা আছে । দৈবমানের চতুর্য,গসক্ষত্ৰ অতীত হইলে নৈমিত্তিক ব্রাহ্ম প্ৰলয় উপস্থিত হয় । প্ৰথমে অত্যন্ত উগ্র শতবর্ষব্যাপী অনাবৃষ্টি হয় । রুদ্র-রূপী ভগবান স্বৰ্য্যরশ্মিতে অবস্থানপূর্বক পুথিবীস্থ যাবতীয় জল পান করিয়া নিঃশেষ করেন । সুর্য্যের সপ্তরশ্মি সপ্তস্থৰ্য্যরূপ ধারণ করে ও ভূমণ্ডল অশেষরূপে দগ্ধ হইতে থাকে । যাবতীয় পদার্থ বিশুদ্ধ হইয়া বহুধা কুৰ্ম্মপৃষ্ঠবং প্রতীয়মান হয় । তৎপরে পাতালবাসী সঙ্কর্ষণাত্মক রুদ্র পাতাল হইতে আরম্ভ করিয়া পুথিবীতল ভস্মসাৎ করেন । স্বর্গ প্রভৃতি লোকও দগ্ধ হইয়। বার । অখিল ভূমণ্ডল এক বৃহৎ ভঞ্জন কটাহে পরিণত হয়। তৎপরে রুদ্রমুখনিঃশ্বাস হইতে বিদ্যুৎ ও বজধ্বনিবিশিষ্ট ভীষণাকার বিভিন্ন বর্ণের সংবর্তক মেধ সমূহ উৎপন্ন হয় ও অবিশ্রাস্ত জলধারা শতবর্ষেরও অধিক কাল বর্ধিত হইতে থাকে । অগ্নি নিৰ্ব্বপিত হইলে ভূমণ্ডল জলপ্লাবিত হইয়া যায় । তথন শতবর্ষব্যাপী প্রচণ্ড বায়ু প্রবাহিত হইতে থাকে ও ভগবান নারায়ণ রূপে নাগশয্যায় শয়ন করেন । এই অবস্থা সহস্ৰ চারি-যুগকাল বর্তমান থাকে। ইহাই ব্রাহ্মরাত্রি । রাত্রিশেষে ব্রহ্মা জাগরিত হইয়া পুনরায় স্থষ্টি আরম্ভ করেন । বরাহ অবতার তথন জল হইতে পৃথিবীকে উদ্ধার করেন । পুথিবীর পর্বতাদি বিভাগ পরিস্ফুট হয় ও ব্রহ্মার বৈকারিক স্বষ্টি বা বিসর্গ আরম্ভ হয়। প্রথমে উদ্ভিদ, তৎপরে কীট, পতঙ্গ, পক্ষী, পশু প্রভৃতি তিৰ্য্যকযোনি, তৎপরে অসুর, তৎপরে দেবতা ও সৰ্ব্বশেষে মমু-বংশীয় মানব স্বস্ট হয় । ইহাই পুরাণোক্ত স্বষ্টিক্রম । স্বষ্টিব্যাপার পূর্বকল্পানুযায়ী প্রবর্তিত হয় । প্রতিদিন অনুক্ষণ যে জীবাদি সৃষ্ট হইতেছে তাহার নাম নিত্যসর্গ। জীবের যে স্থিতি বৃদ্ধি তাহ নিত্যস্থিতি, তরূপ জীবের মৃত্যুতে নিত্য লয় সংঘটিত হইতেছে। বিষ্ণু ১ । ২২ । ৩৬ । শ্লোকগুলিতে কথিত আছে এক প্রাণী হইতে অপর প্রাণী সৃষ্ট হইসে জন্মদাত প্রাণীকে sહ્ય નિરાકના છેઃ ఎన98S সৃষ্টিবিষয়ে হরির অবতার বলিয়া জানিবে, পেইরূপ যদি এক প্রাণী অপর প্রাণীকে বধ করে, তবে বধকর্তা প্রাণীকে রুদ্রের অবতার বলিয়া জানিও । মনুয্যের যে যে নিত্য প্রবৃত্তির বশে জন্ম, মৃত্যু প্রভৃতি সাধিত হয় সেই সকলে স্বষ্টি লয়াদির কর্তৃত্ব আরোপিত হইয়াছে । এজন্য ইহাদিগকে ব্রহ্মার নররূপী মানসসস্তান বলা হয় । দক্ষ, মগ্ন প্রভৃতি ব্রহ্মার মানস-পুত্র । কারণ, এই সকল নামধারী প্রকৃত মনুষ্য হইতে এককাল মানব-বংশ বিস্ত তিলাভ করিয়াছিল । মনুষ্য দক্ষ হইতে বংশ বিস্তার হইয়াছিল বলিয়া দক্ষ প্রজনন শক্তির দেবতা কল্পিত হইয়াছেন । এজন্য দক্ষ ব্ৰহ্মার এক মানস-পুত্র। প্রজাস্বষ্টি করেন বলিয়া ইহার প্রজাপতি । এখনও বিবাহের নিমন্ত্রণ-প ত্র প্রজাপতিকে প্রণাম জ্ঞাপন করা হয় । মানবী দক্ষকন্য:গণের নামানুসারে নক্ষত্রের নামকরণ হইয়াছিল এজন্য নক্ষত্রেরাও দক্ষ-সন্তান । পৌরাণিক অধিষ্ঠাতৃ বা অভিযানিদেবতা এবং অবতারকল্পনার স্বত্র মনে রাখিলে পুরাণ-বর্ণিত সৃষ্টি স্থিতি লয় ব্যাপারকে একেবারেই অতিরঞ্জিত ব৷ কাল্পনিক মনে হুইবে ন; বরং দেখা যাইবে ষে সেগুলি অনেক স্থলেই বিজ্ঞান-অনুমোদিত । বার-বার স্মৃষ্টি স্থিতি ও লয় সংঘটিত হইতেছে কি-না আধুনিক বিজ্ঞানী বলিতে পারেন না । কিন্তু পুরাণবর্ণিত স্থষ্টিব্যাপারকে বিজ্ঞান অনুমোদন করিবেন । অন্যত্র ইহার বিশদ আলোচনা করিয়াছি । সঙ্কর্ষণাত্মক রুদ্র সম্বন্ধে পুরাণ যে-সকল কথা বলিয়াছেন, পূৰ্ব্বোক্ত স্বত্রানুযায়ী ব্যাখ্যা করিলে তাহাদর প্রকৃত অর্থ ধর। পড়িবে। সঙ্কর্ষণ রুদ্র পাত,সবাসী । পাতাল অর্থে ভূ-বিবর বা ভূগর্ভ ও দক্ষিণ দেশ উভয়ই বুঝায়। সাপ পাতালে থাকে, অর্থাৎ সাপ মাটির মধ্যে গৰ্ত্তে থাকে । মাটির নীচে হইতে যে-জল ও শ্রবণের ছায় নির্গত হয় তাহা পাতালগঙ্গা । অপর পক্ষে পুরাণ বলেন, পাতালে বহু সুন্দর নগর ও উপবন ও ভূতি আছে ; পুরাকালে পাতালে বলি রাজ ছিলেন । অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ প্রভৃতি বলির রাজ্য । বিন্ধ্য চলের দক্ষিণে পাতাল । পুরাণের বর্ণনার এক আশ্চর্য্য স্থত্র এই যে, কোন শব্দের দুই প্রকার অর্থ থাকিলে উভয় অর্থই গ্রহণীয় এবং দেখা যাইবে যে