পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নুলিয়া সমাজ ষ্ট্রনিৰ্ম্মলকুমার বস্তু পুরী হইতে দক্ষিণে যেখানে গোদাবরী নদী সমুদ্রের সঙ্গে মিশিয়াছে, সেইথান পর্য্যন্ত মুলিয়াদের বাস । উড়িয়া ভাষায় ইহাদের মুলিয়া বলিলেও ইতাদের প্রকৃত নাম ভিন্ন । ইহাদের মধ্যে একটি জাতির নাম ওয়াড়বালিজি, অপরের নাম জালারি। আরও দক্ষিণে যেসকল জুলিয়ার মত জাতি বাস করে তাহদের নাম কালিঙ্গী | ওয়াড-বালিজি এবং জালারিগণের মধ্যে ওয়াড-ৰালিজিগশই অপেক্ষাকৃত ধনী। জালারিগণ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও কৃশকায়। ওয়াড-বলিজিগণ আগে সমুদ্রে জাহাজের কাজ করিত, এখন দেশী জাহাজের ব্যবসায় উঠিয় গিয়াছে বলিয় তাহারা অপরের মত মাছ ধর এবং তাহীদের মেয়ের শহরে মজুরের কাজ করে । ওয়াড-বালিজিদের জাতির মধ্যে সৰ্ব্বপ্রধান ব্যক্তি হইলেন মান্দাসার রাজা মাইলিপিলি নারায়ণ স্বামী। তিনিও ওয়াড়-বালিজি জাতির লোক, এবং তাঙ্গাকে মধ্যে মধ্যে সমস্ত প্রধান ওয়াড়ী-বালিজি গ্রামে গিয়া গ্রামের কয়েক বৎসরের জমা ঝগড়-বিবাদ অথবা সামাজিক গণ্ডগোল মিটাইয়া আসিতে হয়। ওয়াড়ী-বালিজিদের পক্ষে মান্দাসার রাজাই সুপ্রীম কোর্ট বলা যাইতে পারে, র্তাহার উপরে আর আপীল নাই । ওয়ার্ড-বালিজি অথবা চুলিয়াদের বসতির মধ্যে গঞ্জাম জেলায় গোপালপুরেব যত পুরীও একটি প্রধান জায়গা। এখানে প্রায় ৫০০ ঘর মুলিয়ার বাস ; তাহ ছাড়া জালারি মুলিয়াও কিছু আছে। মুলিয়াদের মধ্যে একটি বংশের বিশেষ আদর আছে। তাছাদের নাম অঙ্ক । এই বংশের লোকের নাম এইরূপ হয়—অঙ্ক করলাম্বা, অঙ্ক রামাইয়৷ ইত্যাদি । মুলিয়াদের গ্রামে অঙ্ক পলান্ম প্রধান দেবী। সেই দেবী নাকি অঙ্ক-বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, সেইজন্য অন্ধ-বংশের পুরীতে এত সন্মান আছে । পুরীর নুলিয়-বস্তির শাসনভার গ্রামের একজন অগ্রণীর হাতে আছে ; তাহাকে “উর-পেডী” বলা হয় । র্তাহার একজন কার্যাধ্যক্ষ বা “কারিজি” অাছে এবং তদুপরি একজন চাপরাসীও আছে, তাহার নাম “সায়িটেডু” । অঙ্ক-বংশের লোকের একটি বিশেষ পরিবার হইতে উর-পেড’কে নিৰ্ব্বাচন করেন । নিৰ্ব্বাচন সিদ্ধ হইলে উর-পেড়া মান্দাসার রাজার নিকট হইতে একটি সন্মতিপত্র পান । অঙ্ক-বংশের লোকেরা যদি কোন উর-পেড়া নিৰ্ব্বাচন করিতে ন পারে, তাহ হইলে গ্রামের লোকসাধারণ নিৰ্ব্বাচনের সে ভার গ্রসণ করিয়া থাকে । উর-পেন্ড যদি নিজের কাজ ঠিকমত ন করেন, তাহা হইলে গ্রামের লোক র্তাহাকে সরাইয় সেই পদে নুতন লোক বাহাল করিতে পারে ; তবে নুতন লোকটি উরপেড়ার বংশের লোক হওয়া চাই। একবার পুরীতে হইয়াছিলও তাই । শেষে মান্দাসার রাজা পুরীতে আসিলে তাহার কাছে অনেক কাকুতি-মিনতি করিয়', সাধারণের কাছে ক্ষম। চাহিবার পর তবে পুরাতন উর-পেড়াকে স্বপদে প্রতিষ্ঠিত করা হইয়াছিল। উর-পেড়ার কাজ আগে হয়ত অনেক বেশী ছিল । কিন্তু অনেকাংশে এখন দণ্ডের ভার ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের হাতে চলিয়া যাওয়ায় তাহার কাজ অনেক কমিয়া গিয়াছে । বিবাহ, সামাজিক ক্রিয়াকৰ্ম্ম, যথা—গ্রামদেবতার পূজা প্রভৃতিতে যোগ দেওয়াই এখন তাহার প্রধান কাজ হইয় দাড়াইয়াছে। উর-পেড, কারিজি এবং সাক্ষিটােডুর কাজ আজীবন থাকে। তাহার মারা গেলে লোকে পুনরায় তাহাদের পদে লোক নিৰ্ব্বাচন করিয়া দেয় । কুলিয়াদের গ্রামে ষে *াচ শত ঘরের কথা বলা হইয়াছে গ্রামের সাধারণ কাজে তাহাদের একত্র হইতে দেখা গেলেও বিবাহ সম্পর্কে এই ৫০০ ঘরের মধ্যে একটি বিচিত্র ভাগ দেখা যায় । নুলিয়াদের বাড়িগুলি ছোট ।