পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હિરા -ઉમા કરવામાં જૈન ఏ98S. জুটিতে পারে, তাহাতে মহিলাটি যেন অত্যন্তই বিম্মিত হইয়াছিল। যুবকের সরল উত্তর শুনিয়া গৃহস্বামিনীর সন্দেহ দূর হইল বোধ হয়, সে বলিল, “আপনি অপেক্ষা করুন, আমি জর স্থা খুলিতেছি, এই ভীষণ রাত্রে আপনার পক্ষে কোনো গ্রাম খুজিয়া পাওয়া অসম্ভব । পথও অতিশয় বিপৎসস্কুল ।” কিছু পরেই দরজাটা খুলিয়া গেল এবং একটা কাগজের লণ্ঠন হাতে করিম একটি নারীমূৰ্ত্তি দরজার সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল। লণ্ঠনট সে এমন ভাবে উচু করিয়া ধরিয়ছিল যাহাতে সব আলোটা যুবকের মুখে পড়ে এবং তাহার নিজের মুখখানা অন্ধকারেই থাকিয়া যায়। নীরবে কয়েক মুহূৰ্ত্ত চিত্রকরের দিকে চাহিয়া থাকিয়া রমণী বলিল, “আপনি অপেক্ষা করুন, আমি জল লইয়া আসিতেছি ।” সে তৎক্ষণাৎ ঘরের ভিতর হইতে জলের পাত্র ও তোৱালে লইয়া আসিয়া যুবককে পায়ের ধূলামাটি ধুইয়া ফেলিতে অনুরোধ করিল। যুবক নিজের পায়ের জুতা খুলিয়া পা ধুইল এবং তাহার পর গৃহস্বামিনীর সঙ্গে ঘরের ভিতর প্রবেশ করিল। একখানিই মাত্র ঘর, পিছন দিকে শুধু একটি ছোট রান্নাঘর আছে। তরুণী তাহাকে বসিবার জন্ত আসন পাতিয়া দিল এবং হাত পা গরম করিবার জন্য অগ্নিপান্ত্ৰ লইয়া আসিল । চিত্রকর এইবার গৃহস্বামিনীর দিকে ভাল করিয়া তাকাইয় দেখিল । তাহার আশ্চৰ্য্য সৌন্দর্ঘ্য দেখিয়া যুবক একেবারে বিস্থিত হইয়া গেল। তরুণী তাহার চেয়ে দুই-চার বৎসরের বড় হুইতে পারে, কিন্তু তখনও সে পূর্ণযৌবন । সে যে কৃষকের কস্তা নয় তাহা তাহার দিকে একবার দৃষ্টিপাত করিলেই বুঝা যায়। তরুণী অতি স্বমধুর কণ্ঠে বলিল, “আমি এখন একলাই আছি এবং এখানে অতিথিঅভ্যাগতকে কখনও নিমন্ত্ৰণ করি না । কিন্তু এই অন্ধকার রাত্রে পথ চলিতে চেষ্টা করিলে আপনি বিপদে পড়িবেন । কিছু দূরে কয়েক ঘর কৃষক বাস করে, কিন্তু কেহ দেখাইয়া না দিলে আপনি কখনও তাঁহাদের ঘর খুজিয়া পাইবেন না। এইখানেই ভোর হওয়া পৰ্য্যস্ত থাকুন। আপনার হয়ত অন্ধবিধা হইবে, কিন্তু উপায় নাই। আপনাকে ঘুমাইবার জন্ত বিছানা দিতে পারিব এবং খাদ্যও কিছু দিব, কারণ আপনি নিশ্চয়ই ক্ষুধাওঁ হইয়াছেন। ঘরে চাল এবং সামান্য শাকসঙ্গী ভিন্ন কিছু নাই, আপনি কিছু মনে করিবেন না।” যুবকের তখন ক্ষুধায় প্রাণ বাহির হইয়া যাইতেছে, যাহা হউক, কিছু পাইলেই সে বঁাচিয়া যায়। তরুণী ভিতরে গিল্প উকুন জালিয়া, অল্প সময়ের মধে ই ভাত এবং কিছু শাকসঙ্গীর তরকারি প্রস্তুত করিয়া আনিল এবং সযত্বে তাহাকে পরিবেশন করিল। যুবক যতক্ষণ আহার করিল, ততক্ষণ সে প্রায় নীরবেই বসিয়া রহিল। যুবকও কয়েকবার প্রশ্ন করিয়া যখন ‘ই’ বা ‘না ভিন্ন অন্য কোনো উত্তর পাইল না, তখন অপ্রস্তুত হইয়া চুপ করিয়া গেল । সে বসিয়া বসিয়া চারিদিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিল । ঘরখানি পরিষ্কার তক্‌ তক্‌ করিতেছে, বে-সকল বাসনে তাহাকে খাইতে দেওয়া হইয়াছিল, সেগুলিও ঝকঝকে । ঘরথানিতে মূল্যবান আসবাব কিছু নাই, কিন্তু যা দুই-একটি সামান্ত জিনিষ আছে তাহ দেখিতে অতি স্বন্দর। দেওয়ালের গায়ে কাপড়চোপড় রাখিবার ও জিনিষ-পত্র রাখিবার যে আলমারীগুলি রহিমাছে তাহার সম্মুখের পর্দাগুলি শাদ কাগজ মাত্র দিয়া প্রস্তুত । কিন্তু সেই কাগজের উপর আশ্চৰ্য্য স্বন্দর ভাবে ফুল, পাতা, পৰ্ব্বত, নদী, আকাশ, তারকা প্রভৃতির ছবি আঁকা। ঘরের এক কোণে একটি নীচু বেদী, তাহার উপর একটি ‘ব্যুৎস্থদান । উহার গালার কাজ করা ছোট দরজা ছুটি খোলা, ভিতরে একটি স্মৃতিফলক দেখা যায়, উহার দুই ধারে পুষ্পের অর্ঘ্য এবং সম্মুখে একটি প্রদীপ জলিতেছে। এই বেদীটির উপরের দেওয়ালে একটি অপূৰ্ব্ব হুন্দর চিত্র ঝোলান ; চিত্রটি দয়াদেবীর, তাহার মাথায় চন্দ্রকলা, মুকুটের মত শোভা পাইতেছে। যুবকের খাওয়া শেষ হইতেই তরুণী বলিল, “আমি আপনাকে আরামদায়ক শয্যা দিতে পারিব না এবং মশারীটাও কাগজের তৈরি, তবু এই দুইটিই গ্রহণ করিয়া আপনি বিশ্রাম করুন। শয্যাটা আমারই, কিন্তু আজ রাত্রে আমার অনেক কাজ আছে, ঘুমাইবার সময় আমি পাইব না।” যুবৰু বুঝিল যে, এই অপূৰ্ব্ব স্বনারী তরুণী কোনো অজ্ঞাত কারণে একাকী এই বনে বাস করিতেছে। সে ইচ্ছাপূর্বক নিজের শ্যাটি অতিথিকে দান করিতেছে, রাত্রে কাজ থাকার কথাটা ছুতামাত্র । বুৰক প্রবল আপত্তি করিয়া