পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ নিৰ্ম্মিত করা উচিত। তৎপরস্থ মণ্ডলীতে রাজপরিষৎ, পরিষদের সভ্য ও কৰ্ম্মচারীসমূহের গৃহনিৰ্ম্মিত হওয়া উচিত। চতুর্থ মণ্ডলীতে যুদ্ধবিগ্ৰহাদি কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহের জন্য যথোপযুক্ত প্রাসাদাদি সংস্থাপিত হওয়া উচিত। প্রমোদোদ্যান, পুষ্পোদ্যান, কুঞ্জ ও দীর্ঘিকাদি যথাস্থানে সন্নিবেশিত করা উচিত । উদাহরণস্বরূপ মানসার শিল্পশাস্ত্র ( অধ্যায় ৪০, পং ১১৭-২২১ ) হইতে উদ্ধৃত করা যাইতে পারে যে, আস্থানমণ্ডপ, রাজদর্শনপ্রাসাদ যম, সোম, বায়ু বা নৈঋত প্রকোষ্ঠে নিৰ্ম্মাণ করা উচিত। বায়ুকোণে পুষ্করিণী, নাগপ্রকোষ্ঠের বামভাগের দক্ষিণে আরামদেশ বা বিশ্রামাগার নিৰ্ম্মাণ করা উচিত । সেই আরাম দশ হইতেই আরম্ভ করিয়া মুথ্য ও ভল্লাট প্রকোষ্ঠে পুষ্পোদ্যান স্থাপন করা হয় । তৎসংলগ্ন প্রদেশ হইতেই নৃত্যাগার ও নৃত্যাঙ্গনার বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ করা হয়। তৃতীয় মণ্ডলের বীথির অংশবিশেষে রহস্তাবাসমণ্ডপ করিতে হয় এবং ঈশ বা বিতর্থ প্রকোষ্ঠে রঙ্গমগুপের স্থান হওয়া উচিত ( পং ১৪৭, ১৫২ ) । বহিমগুলের সিংহদ্বার পাশ্বের দক্ষিণ দিকে ব্যাঘ্ৰাদি জন্তুর আলম এবং দৌবারিক পদে ময়ুরালয় করিতে হয় ( পং ১৪৪-১৪৫ ) l তৎপাশ্বে মেষশাঙ্গা, এবং সত্যকপ্রকোষ্ঠে বানরালয়, সোম-প্রকোষ্ঠে ( উত্তর ) হইতে আরম্ভ করিয়া ঈশান কোণ পৰ্য্যন্ত প্রদেশে বাজিশালা, যম (দক্ষিণ ) হইতে অগ্নিকোণ পৰ্য্যন্ত প্রদেশে গজশাল, তথা হইতে নৈঋত্যন্ত প্রদেশে কুকুটালয় এবং বায়ুকোণ হইতে আরম্ভ করিম মুখ্য প্রকে ঠান্ত প্রদেশে হরিণ ও মৃগ বা অন্ত পশুর জন্ত বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ করা যাইতে পারে পং ১২৮ ১৩২ ) । কৃত্রিম যুদ্ধ পরিদর্শন করিবার জন্তু দ্বারপাশ্বে উচ্চ মঞ্চ নিৰ্ম্মাণ করা উচিত (পং ১৪৮-১৫ 0 ) । দ্বারসন্নিকটস্থ কোন সৰ্ব্বজনদর্শনযোগ্য স্থানে প্রাণদণ্ডের জন্য শূলকম্প স্থান নিৰ্ম্মাণ করিবার ব্যবস্থা আছে। প্রাচীরের দূরদেশে ভূশ বা অন্তরীক্ষ প্রকোষ্ঠে কারাগার স্থান । হিমগুলের দূরদেশে শ্মশান ও সমাধি প্রভৃতির স্থান নির্দিষ্ট ইয়াছে । তত্তং প্রদেশে দেবতা-বিশেষের মন্দিরও স্থাপন করা উচিত । নানাবিধ রাজপ্রাসাদের সমুদ্ধি, ঐশ্বৰ্য্য, সৌন্দৰ্য্য ও প্রাচীন ভারতে বাসগৃহের দিঙনিৰ্বাচন ও সংস্থাপন ব্যবস্থা প্ৰ GIES সংস্থাপন বিষয়ে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান প্রভৃতির যথাযথ ব্যাখ্যা বিশদভাবে এই ক্ষুদ্র প্রবন্ধে সমালোচিত হইবার স্থান ও অবসর নাই । ক্ষুদ্র পরিবারাগার, মধ্যবিত্ত গৃহস্থের আবাস এবং ধনশালী ব্যক্তি ও রাজন্তবর্গের প্রাসাদ-নিৰ্ম্মাণে প্রাচীন শিল্পশাস্ত্রকার আলোক, বায়ুসঞ্চালন ও অপর স্বাস্থ্যরক্ষা উপযোগী বিষয়সমূহ সমভাবেই রক্ষার ব্যবস্থা দিয়াছেন । বৰ্ত্তমান নগর, নগরী, পুর, বন্দর ও পত্তনাদি, এমন কি গ্রামস্থ গৃহাদির সংস্থাপন দেখিয়া কাহারও পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয় যে, ভারতবর্ষে হিন্দুরাজত্বের সময় বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে বাসগৃহ-সংস্থাপনের ব্যবস্থা ছিল যাহার ফলে লোকের স্থখ সুবিধা ও স্বাস্থা রক্ষিত হইতে পারিত । হিন্দুরাজত্বের নাশ ও তৎসঙ্গে-সঙ্গে হিন্দুর শাস্ত্রাদির নির্দেশ গ্রীসীয়, শকীয় ও হুণাদির আক্রমণ হইতে আরম্ভ করিয়া পাঠান, মোগল ও বর্তমান ইউরোপীয়, পর্তুগীজ, ওলন্দাজ, ফরাসী ও ইংরেজাদির ভারতবর্ষে রাজ্যস্থাপনের ফলে বিজিত হিন্দু একেবারে বিস্মৃত হইয়া গিয়াছে। বিভিন্ন দেশীয় বিজেতার স্থানীয় রীতিনীতি ও শাস্ত্রাদির নির্দেশ ভারতবর্ষে গৃহাদি নিৰ্ম্মাণ বিষয়ে সংমিশ্রিত হওয়ার ফলে আমাদের বর্তমান বাসগৃহ কোন দেশ বা আবহাওয়ারই উপযোগী নহে । গ্রীষ্মপ্রধান মিশর বা গ্ৰীসদেশীয় গৃহপ্রণালীর উপর শীতপ্রধান মধ্য-এশিয়ার শর্কীয়াদি রীতি ভারতের নগর ও গ্রামস্থ গৃহ নিৰ্ম্মাণে প্রযুক্ত হইয়াছিল । তাহারই উপর পাঠান ও মোগলদিগের স্ব-স্ব দেশীয় পদ্ধতি অবলম্বিত হইয়াছিল । পিণ্ডের উপরে বিস্ফোটকের মত পাঠান ও মোগলের ঈদৃশ পরিবর্তিত ভারতীয় নগর, গ্রাম ও গৃহাদিতে পূৰ্ব্ব, দক্ষিণ, মধ্য, উত্তর ও পশ্চিম ইউরোপের বিজেতাদিগের স্থানীয় পদ্ধতির সংমিশ্রণবশতঃ কোন দেশেরই বৈশিষ্ট্য লক্ষিত হয় না। উহারণস্বরূপ, বম্বে, লক্ষ্মেী, কাশী, কলিকাতা, কটক, পুরী ও মাদ্রাজ প্রভৃতি নগরের গৃহাদির সংস্থাপন-ব্যবস্থা উল্লেখ করা যাইতে পারে। বোম্বাইয়ের স্থলবিশেষের গৃহ সম্পূর্ণ ইউরোপীয় সমুদ্রতীরস্থ গৃহের পদ্ধতি ধারণ করে, যদিও আবহাওয়৷ শীতগ্রীষ্মাদিভেদে বোম্বাই ও ইউরোপীয় নগরের মধ্যে আকাশপাডাল প্রভেদ রহিয়াছে। দিল্লী, মিরাট, আগ্রা, লক্ষ্মেী, এমন কি কাশী ও কলিকাতারই স্থানবিশেষ, যে কেবলই মোগলপুর বা ‘পাঠান