পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰাব-t করিতে থাকিবে । আমাদের তথাকথিত ট্রাষ্ট বা বিশ্বাসভাঞ্জনতা এবং মিউনিসিপাল বোর্ড দ্বারা নগর-রক্ষকতা বস্তুতঃ এরূপ ভাবেই সম্পাদিত হইয়া গঙ্গা যমুনা সরস্বতী সঙ্গমস্থ ভারতে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ স্বাস্থ্যকর প্রাচীন তীর্থরাজ প্রয়াগ নগরের মোগলদিগের দ্বারা পরিবর্তিত ফকিরাবাদ বা এলাহাবাদের ইমপ্রুভমেণ্ট বা উন্নতি জগতে স্বসভ্য ব্রিটিশ আমলেও নিৰ্ব্বিবাদে হইয়া আসিতেছে । আমাদের বর্তমান রাজশক্তি যে নগর-সংস্থাপন বা তাহাদের প্রকৃত সংস্কাব বা উন্নতিবিধান না বুঝিতে পারে তাহী নহে। কিন্তু স্থানীয় লোকের প্রকৃত স্বাস্থ্যবিধান অর্থরুচ্ছ তার দোহাই দিয়া হইতে পারে না । ‘রাজকৰ্ম্মচারীসমূহ ও ‘ধনিক’ লোকের তাদৃশ পূতিগন্ধময় স্থানে বাস করে না। তাহাদের জন্ত সিবিল লাইন, মিলিটরি ক্যানটনমেন্ট প্রভৃতি স্বাস্থ্যকর পল্লীসমূহ রিজর্ত থাকে। এমন কি নগর-নগরীর তত্তৎপল্লীসমূহের বিপণি প্রভৃতিতে পযুষিত খাদ্যসামগ্রীর সরবরাহ পৰ্য্যস্ত হইতে পারে না। কুগদি সংক্রামক রোগে আক্রাস্ত লোকে সেরূপ পল্লীর নিজগৃহেও স্থলবিশেষে বাস করিবার অতুমতি পায় না । নগরশাসক ও সংস্কারকদিগের এরূপ বিশ্বাসভাজনতা রক্ষার ফলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নগরস্থ বাসগৃহের স্বাস্থ্যহীনতা অবশ্যম্ভাবী । লোকগণনায় দেখা গিয়াছে ধে, কলিকাতা বোম্বাই প্রভৃতি বড় বড় শহরে শিশুর মৃত্যুসংখ্যা হাজারে পাচ-ছয় শত । ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গণনা করিম হিসাব রক্ষা করিলে খুব সম্ভব দেখিতে পাওয়া যাইবে ষে, নগরের অধিকতর স্বাস্থ্যকর পল্লীসমূহের অধিবাসীদিগের বা তাহাদের শিশুসস্তানগণের অকাল মৃত্যুর সংখ্যা তাদৃশ অধিক नूंश् । বিস্ত রিতভাবে সমালোচনার অবসর অভাবেও সম্ভবতঃ পাঠকের পক্ষে এই কথা বুঝ শক্ত হইবে না যে, নগরংস্থাপনে, নগরস্থ পল্লী, বীথিকাদি ও বাসগৃহ নিৰ্ম্মাণে বৈজ্ঞানিক রীতি ও শাস্ত্রের অনুশাসন প্রাম কোথাও প্রতিপালিত হইতে পারে নাই এবং তাহার ফলে নগর ও গ্রামের অধিবাসীদেরও স্বাস্থ্যরক্ষা হইতে পারিতেছে না। বাসগৃহের কক্ষসমূহের সংস্থাপনে ও সরঞ্জামাদির মৌলিক ফটিবশতঃ আমরা কিরূপে ধ্বংসের পথে দিনের পর দিন শহর হইতেছি তাহ বৃত অনেকের বোধগম্য নহে। প্রাচীন ভারতে বাসগৃহের দিঙনিৰ্বাচন ও সংস্থাপন ব্যবস্থা Q BN* গ্রাম, নগর ও বাসগৃহের সম্মুখ ভাগ নির্বাচন বিষয়ে বায়ু ও উত্তাপাদির উপযোগিতা সম্বন্ধে পূর্বেই সংক্ষেপে আলোচনা করা হইয়াছে। বাসগৃহের ষে-সকল কক্ষে অধিবাসীরা অধিকাংশ সময় যাপন করে সে-সকল কক্ষে যাহাতে বিশুদ্ধ বায়ু, স্বৰ্য্যের কিরণ, আলোক ও উত্তাপ প্রচুর পরিমাণে সঞ্চালিত হইতে পারে তাহার ব্যবস্থা মানসারাদি শিল্পশাস্ত্ৰে দেখিতে পাওয়া যায় । শয়ন-মন্দিরের কোন দিকে মস্তক রাখিয়া শয়ন করিলে নিদ্রিতাবস্থায়৪ বিশুদ্ধ বায়ু প্রভৃতির উপকারিত পাওয়া যাইতে পারে তাহারও ব্যবস্থ৷ শাস্ত্রে আছে। সেজন্ত বাসগৃহের দ্বার, গবাক্ষ ও অঙ্কিম বিষয়ে মানসার শিল্পশাস্ত্র বিশেষভাবে ব্যবস্থা করিয়াছে * এমন কি রন্ধনশালার ধূম, মলমূত্র ত্যাগের স্থানের পূতিগন্ধ যাহাতে বাসকক্ষসমূহে প্রবেশ করিতে না পারে সে বন্দোবস্ত মনসার শিল্পশাস্ত্রের অনুশাসনে দেখিতে পাওয়া যায়। ক্ষুদ্রবৃহৎ সকল প্রকার বাসগৃহেই ভ্ৰব্যাগার ও গৃহপালিত পশু পক্ষীর স্থানও এমন ভাবে করা হইয়াছে যাহাতে অধিবাসীদিগের বিশ্রামাদির ব্যাঘাত না হয় । উপরিউদ্ধৃত বাসগৃহের কক্ষসমূহেব তালিকা হইতে ইহাও লক্ষিত হইয়া থাকিবে যে পারিবারিক দেবতা-গৃহ বা নিত্যনৈমিত্তিক উপাসনার মন্দির গৃহের সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট কক্ষে স্থাপিত হইত। ইহা ধৰ্ম্ম প্রাণ হিন্দুর পক্ষে স্বাভাবিক। উদরসৰ্ব্বস্ব পাশ্চাত্য লোকের বাসগৃহের সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট কক্ষে ভোজনাগার স্থাপিত হয়, তাহাও স্বাভাবিক । এই স্বাস্থ্যামুকুল শাস্ত্রীয় অতুশাসন দ্বারা আমাদের বর্তমান বাসগৃহের কক্ষসমূহের সংস্থাপন-রীতি পরীক্ষা করিয়৷ দেখিতে বস্বতঃ সম্রাস উপস্থিত হয়। পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে, নগর, গ্রাম ও গৃহাদির দিঙ নিৰ্ব্বাচন বা সম্মুখ ভাগ নির্দেশ বিষয়ে রাজনৈতিক কারণ বা বিভিজ্ঞদেশীয় বিজেতাদের রাজ্য ও কৃষ্টি বিজিতদের উপর দৃঢ়ভাবে সংস্থাপনের অভিপ্রামে শাস্ত্রীয় ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বিত হইতে পারে নাই। তাহার পর মুসলমানাদির রাজত্বকালে ধনসম্পত্তি ও যুবতী রূপসী স্ত্রীলোকের রক্ষার জন্ত দ্বার,

  • পূৰ্ব্বোজ আনসার শিল্পশাস্ত্রের অধ্যায় ৩৩, ৩৮,৩৯ : मूल ५. ২১৯-২২৭, ২৬৪-২৭৩. অনুবাদ পৃ. ৩৩৬-৬৩৭, ৪১-৪২২, এবং শিল্প

শান্তীয় অভিধানের দ্বার ও গবাক্ষ জষ্টৰ ।