পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&్చ • Y مسن " 虹位之 উৰ্ম্মিল জয়ন্তীর খাটের উপর হইতে ছেলেদের ছোট তোষক ও ছে"ড় লেপের বোঝা সরাইতেছিল । সে বলিল —“তা হোক, আট বছর পশ্চিমের ঘরে যদি বেঁচে থাকি ত পরেও টিকে থাকব ।” মোক্ষদ। ঝি ঘোমটার ভিতর হইতে বলিল,—“ম, গরম কাপড়ের বাক্সন্টাক্সগুনে এই ঘরেই থাক না ; ও ত আর রাত-দিন নাড়ানাড়ি হবে না। তোমার ঘরে রাখলে মিথ্যে ঘর-জোড়া হয়ে থাকবে ।” উৰ্ম্মিল বিরক্ত মুখে বলিল—“দেখ, তিনি বাড়ির বড়বে, আমার চেয়ে তার মান বেশী, সৰ্ব্বদা একথা বুকে চলবি ।” উৰ্ম্মিলার সাধের ড্রইং-রুম অসংখ্য জিনিষে বোঝই হইয়া উঠিল। দক্ষিণের বারান্দায় দুই দিকে পরদা দিয়া কয়েকটা চেয়ার ও টেবিল গোল করিয়! আপাততঃ সেইখানেই সাজাইয়া রাখা হইল। শমীন্দ্র বলিয়ছে, পরে বারানায় কাচ লাগাইয় দিলে দামী জিনিষপত্রও অনায়ালে রাখা চলিবে । সন্ধ্যার অন্ধকারে জয়ন্তীর গাড়ী আসিয়া বাগানের ফুই সারি নারিকেল গাছের ভিতর ঢুকিল । উৰ্ম্মিল ছুটিয়া নীচে নামিয়া আসিল ছেলেমেয়েদের কোলে তুলিয়া লইতে। সাত ও পাচ বছরের ছবি ও কেবি দুইটি অধিফোট গোলাপের মত মুখ জানালার কাছে বাড়াইয়৷ বসিয়াছিল । এ-ঘরবাড়ি সবই তাহদের অজানা, তাহাদের বড় বড় চোখে বিস্ময়ের সীমা ছিল না। উৰ্ম্মিল দুই হাতে দুই জনকে জড়াইয়া ধরিয়া গাড়ী হইতে নামাইয়া ওলইল । জয়ন্ত্রীর দিকে তাকাইয় তাহার চোখ জলে ভরিয়া উঠিল। চোখ মুছিয়া প্ৰণাম করিয়া দেখিল শুভ্র অবগুণ্ঠনে জয়ন্তীর মুখ ঢাকা, চোখের পাতা পর্যন্ত দেখা যায় না। উৰ্ম্মিল বুঝিতে পারিতেছিল না, সাহস করিয়া তাহার হাতখান ধরিবে কি-না । কত দিনের পর দিন যে স্থাতে হাত দিয়া অফুরন্ত আনন্দের স্রোতে তাহারা ভাগিয়াছে, এ যেন সেই চিরপরিচিত মেহম্পর্শমাথ হাত নয়। একটা মানুষ সংসার হইতে বিদায় লইয়াছে, তাহাতে আর একটা মানুষ ষে এমন আগাগোড়া বদলাইয়া যাইতে পারে কে জানিত ? উৰ্ম্মিল ভীতভাবে বলিল,—“দিদি, ఫినిES মুখ তুলে চাও। আমাদের দিকেও কি তাকবে না ?” জয়ন্তী মুখের ঘোমটা সরাইয়া উৰ্ম্মিলার মুখের দিকে চাহিল। উৰ্ম্মিল কখন প্রণাম করিয়াছে, এতক্ষণে জয়ন্তী তাহাকে জড়াইয়' ধরিয়া শিরশ ঘন করিল। টপ, টপ, করিয়া দুই ফোট জল উৰ্ম্মিলার কপালের উপর পড়িল । কিন্তু শুধু হাত দু-খানা নয়, এ সমস্ত মানুষটাই যেন নুতন। আট বৎসর আগে যে ক্ষীণকায় কিশোরী বধু বাল্যলীলার মাঝখানেই সবে যৌবন স্বপ্ন দেখিতে হরু করিয়াছিল তাহার কৈশোর যেন আজ ইতিহাসের কথা । ঝিনুকের বুকের মত কোমল গোলাপী রঙের মুখখানি আজ প্রথর যৌবন দীপ্তিতে জল জল করিতেছে, যেন বিজুলী প্রদীপের উপরের শুভ্র কাচের ফানুস। ক্ষীণ দেহ নিটোল হইয়া ভরিয়া উঠিয়াছে, কোথাও এতটুকু অপূর্ণতা নাই। বিগত দিনের সে আনন্দ-উজ্জ্বল চপল চোখের দৃষ্টি বেদনায় গভীর হইয়া উঠিয়াছে। অশ্রজলে ধুইয় আঁখিপল্লব ঘনকৃষ্ণ কাজলের মত দেখায়, চোখের কোণের চিস্তারেখাগুলি চোখ দুটিকে যেন আরও আয়ত করিয়া তুলিয়াছে। মৰ্ম্মরশুভ্র রেখাহীন ললাটের উপর অন্ধকারসমুদ্রের ঢেউয়ের মত ঘনকুঞ্চিত কালে চুল। পশ্চিমে থাকিয়া লম্বাতেও যেন সে মাথাঝাড় দিয়া উঠিয়াছে। কে বলিবে ব্রাহ্মণের ঘরের সুন্দরী বধু জয়ন্তী এ, এ যেন লক্ষ্ণৌত্রর কোন নবাবের বেগম রঙীন পেশোয়াজ, জরির কাচুলি, আশমনি ওড়না ও মৃন্ম আতর মেহেদির রং ছাড়িয়া অকস্মাৎ বাঙালীর বিধবা সাজিয়া আসিয়াছে। আধুনিক উপমা দিলে বলিতে হয় য়ালবাষ্টারের ভিনাস মুর্কির ভিতর কে যেন বিদ্যুতের আলে জালিয়া দিয়া উপরে শুভ্র ওড়না জড়াইয়াংদিয়াছে । বেশপরিবর্তনের সময় ব-হাতের বড় নীলার আংটিটা কেবল সে খুলিতে ভুলিয়া গিয়াছিল । বিধবা বড়বৌয়ের অঙ্গে একমাত্র অলঙ্কার এটি ! ছেলেপিলের মা, কিন্তু তবু গলায় একছড়া সরু হারও নাই | সাদা সেমিজের উপর ফরাসডাঙ্গার সাদা ধুতি পরিয়া সে যখন বাড়ির বারান্দায় নামিয়া দাড়াইল, সমস্ত বাড়িটা যেন তাহার রূপে আলে হইয়া উঠিল । - মাসখানেক না ঘাইতেই জয়ন্ত্ৰী তাহার গাজীৰ্যের