পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছাড়িয়া মাঝের ঘরের শেয দরজার কাছে আসিয়া দাড়াইল । ঐ ত জয়ন্তীর স্বম্পষ্ট সানন্দ কণ্ঠস্বর বীণার মৃছ ঝঙ্কারের মত শোনা যাইতেছে । জয়ন্তী বলিতেছে, “ কাছে তুমি রয়েছ তৰু তোমাকে তেমন ক’রে কাছে পাবার ত যো নেই। সব জায়গাতেই যে নিষেধ। সেই রাত্রির গভীর অন্ধকারে ছাড়া তোমার সঙ্গে দুটো কথা বলবার যে নেই। কিন্তু তোমার কাছে মনের সব কথা না ব’লে আমি কি বঁচিতে পারি ?” জয়ন্তীর কণ্ঠস্বর আশ্রতে রুদ্ধ হইয়| আসিল । উৰ্ম্মিল শিহরিয়| উঠিল । কে সে যে এত কাছে থাকিয়াও কাছে নাই ! উৰ্ম্মিলা আর ভাবিতে পারে না । আর সে গুলিতে চাঙ্গে না কোনে| কথা । আবার জয়ন্তীর কণ্ঠস্বরে আনন্দ জাগিয়া উঠিল, “তুমি না বলছিলে নীল শাড়ী আর মুক্তার চুড়িতে আমাকে অপ্সরীর মত দেথায়, এখন দেথ দিকি এই আগুন রঙের শাড়ী অর লাল ছল দুটিতে কেমন মানিয়েছে ? না, তুমি দেখবে না, কথা বলবে না ? কেন কিসের ভয় এত ?” কিসের ভয় তাহ উৰ্ম্মিল জানে। কথা কহিলেই ত উৰ্ম্মিল চিনিয়া ফেলিবে তাহার সেই চিরপরিচিত কণ্ঠস্বর। না কথা কহে ত তালই, সন্দেহ এমন পরিপূর্ণ রূপে সত্যে পরিণত হইলে উৰ্ম্মিল বাচিবে কি লইয়া ? উৰ্ম্মিল। ঘরে ফিরিয়৷ যাইতে গেল, কিন্তু তাহার পা নড়িল ন। । সে শুনিল জয়ন্তী আবার বলিতেছে, “দিনের বেল মানুষ জগতের যে নিয়ম আমাকে পালন করায়, তা আমাকে মেনে চলুতেই হয় । কিন্তু সে যে কত বড় মিথ্য ত, আমি জানি আর তুমি জান । তাই রাত্রে আমর এ-সংসার আমি নিজের মত ক’রে সত্যরূপে গড়ে তুলি । তুমি যে মধুর হাসিতে ঘর আলে৷ ক’রে তেল ওতেই আমার সকল দুঃখবেদন। ধন্স হয়ে ওঠে ।” উম্মিল ছুটিয়া গেল জয়ন্তীর দরজার কাছে, দরজা ধাঙ্গ দিয়া সে দেখিব কার এত মধুর হালি। কিন্তু তাহার সঞ্জমে শিক্ষায় বলি। এ-কাজ সে কি করিয়া করিবে ? অবশষে কাদিয়া আপনার ঘরে গিয় লুটাইয়। পড়িল । কতক্ষপ্ত ষে সে পড়িয়া পড়িয়া কঁদিয়াছিল মনে নাই । চোখ তুলিয়; যখন চাহিল দেখিল সম্মুখে দাড়াইয়া শমীন্দ্র। ఏSBS শমীন্দ্র তাহার হাত ধরিয়া তুলিয়া বলিল, “কি হয়েছে উৰ্ম্মি, কঁদছ কেন ?” উৰ্ম্মিল চোখের অশ্র মুছিয়া বলিল, “তোমাকেও তা বলে দিতে হবে ? তুমি এত বড় দুঃখ আমাকে দেবয় আগে কেন আমায় এখান থেকে বিদায় দিলে না ? আমি অনায়fস চলে যেতাম, কোনে কথা বলুতম না । স্বামী হয়ে আমার এ মর্যাদটুকু তুমি রাখতে পারলে না ? শমীন্দ্রর চোখমুৰ্থ আগুনের মত লাল হইয়া উঠিল । সে বলিল, “উৰ্ম্মিল, তুমি কি বল্ছ তা তোমার হু’স আছে কি ? তুমি পাগল ?” উৰ্ম্মিল বলিল, “হা, পাগল ত আমাকে এখন হতেই হবে । আমি নিজের কানে সব শুনেছি তোমাদের কথা ।” শমীন্দ্র গজ্জিয়া উঠিল, “ আমাকে কি কথা তুমি বলুতে গুনেছ, যা তোমার সমূনে আমি না বলতে পারি ?” উম্মিল বলিল, “তোমাকে বলতে শুনব কেন ? তুমি যে কত বড় বুদ্ধিমান তা কি আমি জানি না । যে পাগল বুদ্ধিশুদ্ধি হারিয়েছে একেবারে তাকেই বলতে শুনেছি ।” শমীন্দ্র গায়ের চাদর জাম রাথিয়া শয়নের আয়োজন করিতে যাই তছিল, উন্মিলার কথায় ঘর ছাড়িয়া ছিটক।ইয়। বাহির হইয় পড়িল । অন্ধকার রাত্রি-ত ঘরবাড়ি ছাড়িয়া সে বাহির হইয়া গেল কি-না উৰ্ম্মিল! তহও দেখিল না । আসিবার সময় শমীন্দ্র নিঃশব্দে ঘরের দরজা বন্ধ করিয়ছিল, যাইবার বেল ক্রুদ্ধ পবনের মত বেগে ফু-পাশে দুইটা দরজা ষ্ট্রেলিয়া বাহির হইয়া গেল । সমস্ত বfড়ট যেন কঁপিয়া উঠিল । জয়ন্তী ভীতস স্ত ভাবে ঘর হইতে ছুটির বহির হইয়া আসিল । তাহার পরণে লাল কলে। ফুলতল ঢাকাই গুলবাহার শাড়ী। সে কথা ভুলিয়াই সে উৰ্ম্মিলার খোল দরজার ভিতর ঢুকিয়৷ পড়িল । উৰ্ম্মিল তখন জানালার ধা-র একটা টুলে বসিয়া আছে, জানালার ফ্রেমর উপর হাতে ম{থ রাখিয়া । জাগিয়া কি ঘুম,ইয়া বোঝা যায় না । তখনও যে বিছানায় কেহ শোয় নাই ঘরে ঢুকিলেই বোঝা যায়। জয়ন্তী ডাকিল, “উৰ্ম্মি, এত রাত্রে এখানে চুপ করে বলে যে ? হয়ে