পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wh8 সাহেবকে বাগে পাইয়া ফুিল ফেলিবে কিংবা তাহার নিকট হইতে হুবিধা আদায় করিবে ? হোক না সে নিজে একজন সামান্ত কেরানী—সে একজন স্পোর্টস্ম্যান ত বটে, সে সাহেবের কাছে উপস্থিত হইয়া নির্ভীক ভাবে বলিবে, থ্যাঙ্ক, ইউ সাহেব, এ দুর্ঘটনা, এর জন্ত কেউ দায়ী নয়।’ এই বলিয়া সে চলিয়া আসিবে। গোপীনাথের পক্ষে ঘরে থাকা অসম্ভব হইল। তাহার স্ত্রী তাহাকে খুটিয়া খুটিয়া জানূন্ধীর কথা যতই জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল ততই সে অস্থির ও উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল । বহুদিন সে ভাবিয়াছে যে জীবনে এমন একটা কাজ করিবে যtহাতে বিশ্বের যাবতীয় লোক একবাক্যে বলিবে **', স্পোর্টসম্যান বটে গোপীনাথ ' জীবন মহৎ কাজ করিবার সুযোগ কত কম আসে ! যদি বঙ্গাপসাগরে নিমজ্জমান ব্যক্তিকে ব্যাদিতমুখ হাঙ্গরের দল উপেক্ষ করিয়া বাচাইতে পারিত, যদি বরফস্ত,পের আঘাতে বিদীর্ণ জাহাজের তার ঘরে বসিয়া শেষ পর্যন্ত 'এসওএ পাঠাইতে পারিত, যদি নিজের জীবন উপেক্ষা করিয়৷ জলন্ত বাড়ির ত্রিতল হইতে কুকুর-শাবককে রক্ষা করিতে পারিশু, যদি বুদ্ধক্ষেত্রে মৃতকল্প শক্রকে নিজের পিপাসার বারি দীন করিয়া নাটকীয় ভাবে বলিতে পারিত “তোমার প্রয়োজন আমার চেয়ে বেশী, তবে বুঝি জীবন সার্থক হইত। জালুকী মরুক—কিন্তু তাহীর মৃত্যুর ভিতর দিয়া যেন সে পৃথিবীকে দেখাইতে পারে ম্বে সে একজন ‘স্পোর্টসম্যান । জানকী কিন্তু মারল না। সে জানুপর্যন্ত এক পা হারাইয়া হাসপাতালের শয্যা হইতে বাপ-মায়ের কোলে ফিরিয়া আসিল । গোপীনাথ ডাক্তার বেল্গার্ডের পদম্পর্শ করিয়া কহিল, স্তর, আপনি আমার জীবন দান করিয়াছেন। বেলগার্ড হাসিয়া উত্তর দিল, “কিছু না, অত্যন্ত সোঙ্গ অপারেশন : কিছুদিন পরে কৃত্রিম পা লাগাইতে হইব। একদিন সত্যই ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব গোপীনাথকে তলব করিলেন। অত্যন্ত দয়াত্র স্বরে কহিলেন, বাবু, তোমার কল্লার বে ক্ষতি আমি অনিচ্ছাসত্বে করিয়াছি, তাহার পূরণ হইবে না। ইহার চেয়ে তাহার মৃত্যু ভাল ছিল। কিন্তু উপায় নাই, সবই ভগবানের হাত। তুমি এই { প্ৰবামনী ; S98S পাঁচ-শ টাকার চেকখানি লও। ইহাতে আমীর বিবেক কিছু শাস্তি পাইব । গোপীনাথ গম্ভীর ভfব বলিল, “সাহেব, এ অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনার সুযোগ লইয়া আমি অর্থেfপার্জন করিতে চাই না। আমি দরিদ্র কিন্তু লেভী মই।” সাহেব বুঝিল লোকট এখনও মনস্থির করিতে পারে নাই। তাই বলিলেন, “তুমি ভাবিয়া কাল বলিও।” কথাট্য রাষ্ট হইতে বেণী দেরি হইল না । ডেস্পাচার' সঞ্জয় পরামর্শ দিল, ‘দে শালার নামে এক নম্বর ঠুকে। রসিক কাশিয়ার স্পষ্টই বলিল সে কখনও এরূপ মহীমুভবতা দেখে নাই, ইংরেজ বলিয়। এরূপ সম্ভব। একটি পায়ের মুলা পাঁচ শত টাকা হইতে পারে এ-কথা সে আগে জানিত ন । কেহবা পরামর্শ দিল যে নগদ টাকা ছ-দিনেই খরচ হইয়া যাইবে । সাহেবকে ধরিয়া একটি পাক চাকরি করিয়া লওয়াই ঠিক । পরদিন গোপীনাথ সাহেবের সঙ্গে দেখা করিল এবং পুৰ্ব্বদিনের মতই জানাইল যে টাকা সে লইবে না, কারণ সে এক জন ‘স্পোর্টস্মান । সাহেব এবীর একটু বিক্ষিত হইলেন এবং তাহীকে যলিলেন, ‘বাবু আর কোন প্রকারে তোমার উপকার করিতে পারি P একটু ইতস্ততঃ করিয়া গোপীনাথ উত্তর দিল, স্তর, আমাকে একটা রিভলভার যদি দেন তবে বড় কৃতজ্ঞ হইব ।’ সাহেব খুব খুশী হইয়া বলিলেন, “বেশ, কালই ধরধাস্ত করিও ; আমি নিজের রিভলভার তোনাকে উপহার দিব ।’ কিছুকাল মধাই বাহিরে কোমরবন্ধে লটকন রিভলভার ও ভিতরে একপদহীন কল্পা সমেত গোপীনাথের স্পোর্টস্ম্যানগিরির খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়াইয় পড়িল । কিন্তু এদিকে দিন যতই বাইতে লাগিল পিতানাতাঁর জীবনে জানুকী একটা ভারী বোঝার মত হইয় দ্বীড়াইল । অজাত সন্তানের কামনায় জনকজননীর মন বুভূক্ষু হইয় উঠে ; মত সস্তানের মমতীয় উহার কঁদিয়া আকুল হন, কিন্তু দিনের পর দিন অঙ্গহীন সন্তানের তাড়না বুঝি স্নেহমমতাকে ছাপাইয় উঠে। বিশেষতঃ ক্রমশ: এই ক্ষুদ্র শিশুকন্ঠা যেন শত ভূলকলায় মাতাপিতার স্নেহ আকর্ষণ করিতে শিথিল । সে বেড়া ধরিয়া ধরিয়া লাফাইয়া হাটিত ; হঠাৎ পড়িয়া