পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাত্র ৫ • কুরল বা তিরুবল্পবরের নীতি y-ve ৯ । কাম, ক্রোধ ও মোহকে যে সম্পূর্ণরূপে জয় করিয়াছে তাহার সকল কষ্ট নষ্ট হইয়া গিয়াছে। (৩৬.১০) ১০ । নিষ্কমন হইতে শ্রেষ্ঠতর সম্পদ মত লোকে আর নাই। যদি তুমি স্বর্গেও ধাও, সেখানে এমন কোন মূল্যবান বস্তু পাইবে ন সাহা ইহার সমকক্ষতা করিতে পারে। ( ৩৭৩) মানবজীবন সম্বন্ধে আশাপূর্ণ ভাবই কুরলের প্রথম অংশের বিশিষ্টতা। কবি বলিতেছেন, “সুসম্মানিত পবিত্র গৃহ মনুষ্যজীবনের সব শ্রেষ্ঠ বর এবং গুণশালী সস্ততি তাহার মহন্ধের পরাকাষ্ঠী ।“ তাহার বাৎসলা ভাব কি মধুর : “শিশুদের স্পর্শে শরীরের মুথ এবং কথায় কর্ণের তৃপ্তি। যাহার শিশুগণের কাকলি শুন নাই, তাহারাই সেতার এবং বংশীর ধ্বনির প্রতি আকৃষ্ট হয়।” কবি বলেন যে, মানবপ্রীতি ও অতিথি-সৎকার মনুষ্যের প্রধান কতব্য এবং মধুর সম্ভাষণ তাহার ভূযর্থ-স্বরূপ। কৃতজ্ঞতা, দ্যায়নিষ্ঠ, আত্ম-সংযম, ক্ষম, দান ও পরোপকার তাহার অমূল্য গুণ ; কিন্তু পরদার, ঈর্যn, লোভ, বুপভিাষণ, অনিষ্ট-চিস্তা ইত্যাদি ভয়ঙ্কর দোয । কিন্তু যাঁহাকে লোকে মৃত্যু বলে, উহা ত কেবল জীবের শরীরের বিনাশ । উহাতে ত জীবের সম্পূর্ণ লোপ হয় না। উহার একটি ভবিষ্যৎ জীবনও আছে। যখন মগ্ন্যা হিতকর ও সাধু জীবন যাপন করিয়া এবং এই অনন্ত জীবন-লটিকে স্বীয় স্থান অধিকার করিবার জন্ত পুত্রোৎপাদন করিয়া সমাজের প্রতি তাহার ষে কতব্য ছিল তাহ পালন করিয়াছে, তখন ভবিষ্যৎ জীবনের জg তাহার প্রেস্তুত হওয়া আবশুক । এখন গৃহস্থ নিজ সাধু আচরণের ফলস্বরূপ জীবনসোপানের কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করিয়াছে। এই উচ্চতর স্থান প্রাপ্ত হইবার ফলে একটি উচ্চতর সাধুতার ক্ষেত্র তাহার সম্মুখে প্রসারিত দেখিতে পাইতেছে এবং ঐ স্তরের উপযুক্ত হইবার কষ্ট আপনাকে অধিকতর শাসনাধীন রাখা উচিত বিবেচনা করিতেছে । সেই উদ্দেহে এখন সে সর্বভূতে দয়া, নিরামিষ-আহার, আত্মfমগ্রহ ও ধান-যোগের অভ্যাস করিয়া এবং ( এই উপায়ে অধিকতর আধাত্মিক বল ও দৃষ্টি-শক্তি সঞ্চিত হইলে ) প্রতারণা, অসত্য, ক্রোধ, হিংসা, পরপীড়ন হইতে নিবৃত্ত হইয়া, মনকে বিশুদ্ধ করিবার চেষ্টা করে । এই প্রকার আত্মশাসন দ্বারা অবিদ্যার নানা কোষ স্থলিত হওয়াতে তপন্থীর চক্ষু খুলিয়া যায় এবং সে স্বীয় অস্তরে অনুভব করে যে, এই প্ররিদৃপ্তমান জগৎ স্বপ্লবৎ মিথ্যা-আজি আছে, কাল অন্তর্হিত হইয়া যাইবে। এই হেতু সাংসারিক বস্তুতে তাহার পূববং অসিক্তি নষ্ট হইয়া যায়, এবং তাঁহার মনশ্চক্ষুর সম্মুখে সত্যের যথার্থ মূর্তি প্রতিভাত হয়। কিন্তু বাসনা এখনও তাঁহার মনের নিকট বিদায়গ্ৰহণ করে নাই । উহা নানা বর্ণেও নানা আকারে তাহার মনকে কলুষিত করিতে থাকে। বড় বড় ধনাত্মাগণও তাঁহার ছলনা হইতে অব্যাহতি পান না এবং বেপৰ্য্যস্ত তাহার সম্পূর্ণ বিনাশ না হয়, সে-পর্যন্ত অস্থিা বিশুদ্ধ আনন্দের অধিকারী হইতে পারে না। সেই গুল্প গ্রন্থকত। এই অংশের উপসংহারে বলিতেছেন-বাসন কধনও তৃপ্ত হয় না, কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি বাসনা ত্যাগ করিতে সমর্থ হয়, তাহা হইলে সে তৎক্ষণাৎ সম্পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় । (৩৭.১০ ) - ২। অর্থ ( রাজনীতি ) গ্রন্থের দ্বিতীয় অংশে কবি রাজনীতির আলোচনা করিয়াছেন। তিনটি অংশের মধ্যে ইহাই সর্বাপেক্ষ বড়। ইহা হইতে বুঝা যাইতেছে যে, জীবনের পরিকল্পনায় কবি রাজনীতিকে কিরূপ স্থান দিয়াছেন। এই অংশটির নাম দিতে গিয়া কবি বোধ হয় কৌটিল্যের অমুসরণ করিয়াছেন, কিন্তু ইহাতে কেবল রাজনীতির প্রসঙ্গই আছে, কারণ রাধ দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচালিত শাসনাধীন না থাকিলে নিরুপদ্রবে ধনের সঞ্চয় বা উপভোগ করা যায় না। কবি বলেন যে, অত্যাচারী রাজার শাসনে দরিদ্রের অবস্থাপেক্ষ ধনীর অবস্থা অধিক সঙ্কটাপন্ন। { ৫.৬৮) রাজাকে যে-সকল উপদেশ দেওয়া হইয়াছে তাহা ধনীর উপরও প্রযোজ্য । প্রথম অংশ পড়িয়া আমরা বুঝিতে পারিস্কাছি যে, এই কাব্যের লেখক একজন গাহস্থিণীতি-বিশারদ। ষেঅংশের আলোচনা এখন অখ্রিস্তু হইতেছে, তাহা হইতে প্রমাণিত হইবে যে, তিনি একজন অসাধারণ রাজনীতিজ্ঞ এবং সাংসারিক জ্ঞানে পুর্ণমাত্রায় অভিজ্ঞ। রাজনীতির এমন কোনো অংশ সাই যাহা ঠাঁহার স্বপরিচিত ছিল না। রাজ্য-শাসনব্যাপারের মৌলিক তত্ত্বগুলি ধরিবার বিশেষ ক্ষমতা প্তাহার ছিল বলিয়া বুঝা যায়। কোনো স্থানে অস্পষ্টতা, যকৃচ্ছা-কল্পনা বা শব্দ-বাহুল্য দৃষ্ট হয় না। প্রত্যেক বিষয় যথাস্থানে ও উচিত পরিমাণে সন্নিবেশিত দেখিতে পাওয়া যায় । রাজনীতি-বিষয়ক সমগ্র ক্ষেত্র তাহার হযুক্তি-কিরণে সমুজ্জ্বল ৮ কি উপায়ে সুনিপুণ ভাবে রাজ্য-শাসন-কাৰ্য সম্পন্ন হইতে পারে তাঁহার পথপ্রদর্শন করাই এই অংশের উদ্দেশ্য । এই অংশের প্রথম খণ্ডে মুখ্যতঃ রাজাকে উপদেশ দেওয়া হইয়াছে, কারণ তিনিই রাজ্যের শাসন-কত" । কতকগুলি উপদেশ সাধারণ লোকদিগকে দেওয়া হইলেও, তাহ ব্রাঙ্গার প্রতিও প্রযোজ্য। আবার কতকগুলি রাজাকে মম্বোধন করিয়া বলা হইলেও, তাহা হইতে সাধারণ লোকও উপকার পাইতে পারে, যেমন—“আত্মপ্রসঙ্গি J