পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৃষ্টি-প্রদীপ ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ు এই ঘটনার পরে আমার ভয় হ’ল আমার সেই রোগ আবার আরম্ভ হবে । ও যখন আসে তখন উপরি-উপরি অনেক বার হয়—তার পর দিনকতকের জন্তে আবার একেবারেই বন্ধ থাকে। এই বার বেশী ক’রে সুরু হ’লে আমার চাকুরী ঘুচে ঘাবে—সীতার কোন কিনারাই করতে পারব না । মেজবাবু হিসেবের খাতা লেখার কাজ দিলেন নবীনমুহুরীকে । তার ফলে আমার কাজ বেঙ্গায় বেড়ে গেল—ঘুরে ঘুরে এদের কাজে খিদিরপুর, বরানগর, কালীঘাট করতে হয়—আর দিনের মধ্যে সতের বার দোকানে বাজারে যেতে হয় চাকরকে সঙ্গে নিয়ে । খাওয়া-দাওয়ার নিদিষ্ট সময় নেই, দিনে রাতে শুধু ছুটোছুটি কাজ। এই দোকানের হিসেব নবীন-মুহুরীকে বুঝিয়ে দেওয়া একটা ঝঞ্চাট—রোজ সে আমাকে অপমান করে ছুতোয় নাতায়, আমার কথা বিশ্বাস করে না, চাকরদের জিজ্ঞেস করে আড়ালে সত্যি সত্যি কি দার জিনিষটা এনেচি সীতার মুখ মনে ক’রে সবই সহ ক’রে থাকি । কাৰ্ত্তিক মাসে ওঁদের দেশের সেই মহোৎসব হবে g সকলকে দেশে পাঠানো হ’ল । আমি নক আগে থেকেই শুনে আসচি—অত্যন্ত কৌতুহল ংেব জর সম্প্রদাবি কাহান কি রকম। * গ্লামে এদের প্রকাগু বাড়ি, ‘বাগান, দীঘি, এরাই ৰ ৭ জমিদার। তবে বছরে এই একবার ছাড়া আর \\দেশে অলেন না। কুঞ্জ-মায়েব ৰাকী দশ মাস মালিক । খুব বড় ফাঁকা মাঠে মেলা বসেচে—এখানকার বেশী । অনেকগুলো খাবারের দোকান, fর দোকান, মাকুরের দোকান। জীবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় একটা বড় বটগাছের তলাটা বাধানে, সেটাই না-কি পীঠস্থান। লোকে এসে সেইখানে পূজো দেৱ— আর বটগাছটার ডালে ও ঝুরিতে ইট বাধা ও লাল নীল নেকুড়া বাধা । লোকে মানত করবার সময় ওই সব গাছের গায়ে বেঁধে রেখে যায়, মানত শোধ দেওয়ার সময় এসে খুলে দিয়ে পূজো দেয়। বটতলায় সারি সারি লোক ধর্ণ দিয়ে শুয়ে আছে, মেয়েদের ও পুরুষদের ধর্ণ দেওয়ার জায়গা আলাদা আলাদা । বড়বাবু ও মেজবাবুতে মোহীস্তের গদীতে বসেন— কৰ্ত্ত নীলাম্বর রায় আসেন নি, তার শরীর সুস্থ নয়। এদের বেদীর ওপরে আশপাশে তাকিয়া, ফুল দিয়ে সাজানো, সামূনে ঝকঝকে প্রকাও রূপোর থালাতে দিন-রাত প্রণামী পড়চে । ছুটে থালা আছে—একটাতে মোহান্তের নজর, আর একটাতে মানত শোধ ও পূজোর প্রণামী । নবীন-মুহুরী বেচারাম ও আমার কাজ হচ্চে এই সব টাকাকড়ির হিসেব রাখা । এর আবার নানা রকম রেট বাধা আছে, যেমন—পাচ সিকের মানত থাকলে গদীর নজর এক টাক, তিন টাকার মানতে দুটাকা ইত্যাদি। কেউ কম না দেয় সেটা মুহুরীদের দেখে নিতে হবে, কারণ মোহাস্তুর টাকাকড়ির সম্বন্ধে কথা বলবেন না । কাজের ফঁাকে আমি বেড়িয়ে দেখতে লাগলাম চারি ধারে, সবারই সঙ্গ মিশে এদের ধৰ্ম্মমতটা ভাল ক’রে বুঝবার আগ্রহে যাদের ভাল লাগে তাদেরই নানা কথা জিজ্ঞাসা করি, আলাপ করে তাদের জীবনট বুঝবার চেষ্টা করি । কি অদ্ভুত ধৰ্ম্মবিশ্বাস মানুষের তাই ভেবে অবাক হয়ে যাই । কতদূর থেকে যে লোক এসেচে পোটুলাপ:টুলি বেঁধে, ছেলেমেয়ে সঙ্গে নিয়েও এসেচে অনেকে। এখানে থাকবার জায়গা নেই, বড় একটা মাঠে লোকে