পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন মুক্তি

  • B*

আজও সে বিচ্ছিন্ন করিয়া পৃথক করিয়া দেখে নাই । ঐ সোফাতে বসিয়া সে যামিনীকে বই পড়িয়া শুনাইয়াছে, টুলে বসিয়া গান গাছিয়াছে, ঐ জানালার কাছের কাউচটায় বসির স্বৰ্য্যস্ত দেখিয়াছে। তাহার সমস্ত অস্তিত্বের সঙ্গে এই ঘরখানার সত্তা এমন করিয়া এই কিছুদিন মিশিয়া ছিল ষে, নিজের প্রয়োজনের বহিরে তাহীকে কোন ছলেই মনে পড়ে নাই ! আজি মনে হইতে লগিল এ শুধু বড় লকের বাড়ির এক ধন সজান ঘর । কিন্তু বড়লে কের বাড়িরই এক জন শে সমস্ত হৃদয় ঢলিয়া ইহ সজাইয়াছে, আপনার আদির দিয়া তহিকে অবৃত করিয়াছে এ-কথাটাও নিৰ্ম্মল আজ আর ভাবিল না । কারণ এ-কথাটা ভাবিতে হইলে আর এক জনকে সৰ্ব্বাস্তঃকরণ যতটা গ্রহণ করিতে হয় নিৰ্ম্মল! তহর স্ব মীকে এখনও তাহা করিতে পারে নাই । বিবাহের কুবা ছড়ি বাস্তব জীবনে প্রেম কি বিবাহ লইয়। সে কেন দিন ম:থা ঘাম য় নাই । এ-সম্বন্ধে এই বয়সের মেয়ের হৃদয় সচরাচর যতটা সচেতন হয় নিৰ্ম্মল'র মন বিব’হর পূৰ্ব্বে ত হা হয় নাই । যেটুকু সচেতন ত হর হৃদয় হইয় ছিল, আজিকার প্রচণ্ড আঘাতে ত'হ র সব সড়ই যেন চলিয়া গেল । যামিনী দরজার বাহিরে থমকিয় দাড়াইল । আশা করিয়া আসিয় ছিল নিজের মনোভার প্রেয়সী নারীর কাছে নিবেদন করিয়া ধরিবে । আসিয়া দেখিল ঘরে আলো মই, শেfকপরায়ণ লারী আপন মনোব্যথা লইয়া স্তন্ধ হইয়া মূৰ্ত্তিটির মত জানালার গরাদেতে একটা হাত রাখিয়৷ ধাড়াইয়া আছে । তখন সে নিজের কথা ভুলিয়া গেল । কাছে আসিয়া নিৰ্ম্মলার কাধের উপর পিছন হইতে একটি হাত রাখিয়া স্নিগ্ধ স্বরে কহিল, “অন্ধকারে এক দাড়িয়ে কি করন্থ নিৰ্ম্মল ?” নিৰ্ম্মল মুখ ফিরাইল । চাদের আলোয় তাহার চোখের জল চিক্-চিক্‌ করিতেছে । “কি হয়েছে ?” “কিছু না ।” যামিনী তাছার মাথার চুল আঙুল দিয়া নাড়িয়া দিত দিত কছিল, “কি হয়েছে আমাকে বলে না । আমার কাছে কোন নি কিছু লুকিও না । আমি যে তোমার | г. জন্তে কত ব্যাকুল ।” পাইতেছিল । নিৰ্ম্মলা দৃঢ় পরিষ্কার স্বরে কহিল, “আচ্ছা, আমার বাবা যে খুব দরিদ্র সে-কথা কি তোমরা জানতে না ?” যামিনীর কোন কথাই যেন তাহার কানে যায় নাই । যামিনী অবাক হইয়া কহিল, “আজি হঠাৎ এ-কথা কেন ? কিন্তু তোমার বাবা তো দরিদ্র নন । তাঁর মত হৃদয়ের প্রাচুর্য এবং মানসিক ঐশ্বৰ্য্য কণ্ট লোকের শু,াছে ?” “সে-বিচার আমি তোমাদের সঙ্গে করতে চাইনে । কিন্তু তিনি যে দরিদ্র, তার বে যথেষ্ট অর্থ নেই, এ-কথাটা । কি তোমরা জানতে না ?” স্ট্রীর কঠোর কথায় যামিনী আহত হইল । নিৰ্ম্মলা মত দিন এ-বড়িতে আসিয়াছে কখনও তােহর মুখে এমন কথা শেfল নাই । কিন্তু নিজেকে সংবরণ করিয়া লইয়া যামিনী কহিল, “আজি হঠাৎ এমন প্রশ্ন করবার প্রয়োজন তে ম:র কেন হ’ল ?” নিৰ্ম্মলা আর কোন কথা না বলিয়া সামনের চেয়ারে বসিয়া পড়িয়া দুই হাতে মুখ চকিল । তাহার অশ্রব্যাকুল ঘন নিঃশ্বাসে সন্ধার স্তন্ধ অবিরণ যেন উতলা হইয়া উঠিল । যামিনী কুইচ টিপিয়া আলো জ্বলিল । আরও একটা চৌকি টানিয় তাহার পাশে বসিল । গম্ভীর স্বরে কহিল, “শোন নিৰ্ম্মলা, আমি আজ প্রতিজ্ঞ করেছি যত দিন না নি:জ উপার্জন ক’রে তোমাকে " প্রতিপালন করতে পারব তত দিন তোমাকে আর এ-বাড়িতে - আনিব না । তত দিন তোমার বীপের বাড়িতে থাকতে নিৰ্ম্মলা কাঙালের মত বলিয়া উঠিল, “আমি কি আমার বীপের বড়ি যেতে পাব ? আমার ব:বীর কাছে থাকতে পাব তো ?” যেন জীবনের এই নুতন সম্বন্ধের কথা সে একেবারে ভুলিয়া গিয়াছে এমনই ভাবে ব্যাকুল হইয়া সে প্রশ্ন করিল। তাহার এই ব্যাকুলতার কারণ ছিল । আঞ্জই সন্ধাবেলীয় অলঙ্কারের প্রসঙ্গে সমস্ত কথা জানিতে পারিয়া শাশুড়ী দতে দাত চাপিয়া কটু কণ্ঠে বলিয়াছিলেন, “ঘাঁ হৰরি হয় গেছে, কিন্তু আর কোন সূত্রেও সেই ছোট · তাহার কণ্ঠস্বরে কাতর স্নেহ প্রকাশ