পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tyతోtro নিৰ্ম্মল মাকে প্ৰণাম করিয়া সেখান হইতে উঠিয়া গেল । লগে ন জলিইয়াই অন্ধকারের মধ্যে আস্তে আস্তে সিড়ি দিন তাহদের ত্রিতলের ছাদের এক কোণে আসিয়া স্বাডাইল । তখন আকাশে কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ উঠে নাই । মাথার উপর তারাগুলি অত্যন্ত দীপ্ত হইয় ফুটিয়াছে। নক্ষত্রম্পদিত নিঃশব্দ অন্ধকারে নিৰ্ম্মল! তাহার মাথার অবগুণ্ঠন ফেলিয়া asছল, তাহার আশৈশব-অভ্যস্ত এই অবারিত মুক্তিকে সমস্ত হৃদয় দিয়া গ্রহণ করিতে চাহিল। অন্ধকারে কত ক্ষণ এমনই করিয়া দাড়াইয়াছিল খেয়াল নাই। পায়ের শব্দে মুখ ফিরাইয়া দেখিল যামিনী আসিয়া পাশে দীড়াইয়াছে । দুজনেই অনেক ক্ষণ চুপ করিয়া রহিল। নিৰ্ম্মলা প্রথমে কথা কহিল, “আমাকে কিছু বলবে ?” “কিছু বোলে না। অন্ধকারের মধ্যে কেবল তোমাকে অনুভব করতে দাও 1" “আমি এক-এক সময় ভাবি, অবাক হয়ে কিছুতেই ভেবে পাইনে—” নিৰ্ম্মল যেন আপন-মনে তন্ময় হইয় বলিয়। চলিল, “আমার মধ্যে“” “তোমাকে মিনতি করছি নিন্মলা, চুপ করে । কত যুদূর থেকে তারার আলো এসে তোমার মুখে পড়েছে । রাত্রি স্তন্ধ, অন্ধকার। এরই মাঝখানে আমার সমস্ত তোমাকে দিয়ে ভরিয়ে নিতে দাও । এখন কথা কওয় সইবে না। আশ্চর্যা, আমি তোমার কাছে এলুম, নিজেকে উন্মোচিত ক’রে তোমার সামনে ধরলুম অথচ তুমি যে আমার মাঝে কিছুই খুজে পেলে না সে-কথাটা আজ এই অন্ধকাবে চুপ করে তোমার মুখোমুথি দাড়িয়ে যতটা টের পেয়েছি এর আগে কোনদিন তা পাই নি " নিৰ্ম্মল চুপ করিয়া ছাদের আলিসায় ভর দিয়া যেমন দাড়াইয়াছিল তেমনই থাকিল যামিনী বলিল, “এবারে আমি যাই ।” “কোথ। যাবে ?” “আমার সেই সাবেক মেসে । নিখিলকে বলে রেখেছি আমার ঘর দু'টো খুলিয়ে রেখেছে।” নিৰ্ম্মল যামিনীকে জোর করিয়া ধরিয়া রাখতে পারিত, কিন্তু তাহার ৰে মন নবাধিস্কৃত সংসার হইতে মুক্তির জন্ত পাগল হইয়া উঠিয়ছিল, সেই মনই যেন যামিনীর প্রতি ఏ98S স্বল্পমুরক্ত নববধূর মন হইতে প্রবল হইল । নিৰ্ম্মলা শুধু বলিল, “মেসে কেন যাবে ? এখানেও তো থাকতে পার ।” “ন, পারি নে। নিৰ্ম্মল! তুমি রাগ ক’রো না, কিন্তু আজ একটা কথা বলব। তোমাকে আমার ঘরে নিয়ে গেলুম, মনে আশা ছিল আমার ঘর তোমারও ঘর হয়ে উঠবে । ভুল ভাঙলে । টের পেলুম সে তোমার হ’ল না । তাই আজি তোমারওঁ আমন্ত্রণে সাড়া দিতে পারছি নে । তোমাদের ঘরে নিজের মনে ক’রে থাকতে বাধছে । কোথায় ব:ম গেল একট অদৃশু বাধা । কোনদিন এটা কাটবে কি না জানি নে ; কিন্তু এইটুকু আমার মনে সাত্মনা থাকবে মিথ্যাকে আমি চাই নি । যাকে চেয়েছিলুম তাকে সৰ্ব্বতোভাবে সত্য ক’রে পাব ব’লেই প্রতীক্ষা ক’রে এসে৫ি আজও যদি প্রতীক্ষার দিন না ফুরিয়ে থাকে তাহ’লে জািনব এখন আমার সাধনার পালা ফুরোয় নি । কিন্তু অভিYে, করব না করিও কাছে । আমি চললুম নিৰ্ম্মল।” *** - যাইবার সময়ে সে নিৰ্ম্মলার হাত দুইখানি আপনার হাতে টানিয়া লইয় তাহাতে আধর স্পর্শ করিয়াই দ্রুতপদে চলিয় গেল । সে চলিয়! যাইবার পরে ছাদে আবার তেমনি অখণ্ড নিস্তব্ধতা বিরাজ করিতে লাগিল । অন্ধকার ছিন্ন করিয়া সারি সারি বাড়ির ছাদগুলার এক প্রাস্ত হইতে কৃষ্ণপক্ষের এক খণ্ড চদি উঠিল । কিন্তু নিৰ্ম্মলার মনে তাহার পুৰ্ব্বদিনের প্রশস্তি আর ফিরিল না । মনে হইতে লাগিল কে যেন অধীর বেদনায় ফিরিয়া গিয়াছে । তাহার সেই বেদনার ছায়ায় প্রকৃতি স্তম্ভিত, ভারাক্রান্ত । তাহাকে সমস্ত দিয়া গ্রহণ করিতে চাহিলেও মনের একট দিক অতৃপ্তিতে ভরিয়া উঠে, মনে হয় মুক্তির অপরিসীম আকাশ হইতে যেন কাহার লালসার্জীর্ণ অন্ধকার কারাগারের মধ্যে ঢুকিতে হইতেছে, আবার তাহারই নিরস্তর ব্যাকুলতায় তাহাকে ছাড়িয়া দিতেও মনের আর একটা দিক উদাস হইয়া যাইতেছে। নিৰ্ম্মলা একাকী ছাদে ঘুরিতে লাগিল । কিন্তু তাহার মনের ভিতর যুগল নিৰ্ম্মলার দ্বন্দ্ব চলিতে লাগিল । 发● সকালবেলায় চায়ের পেয়ালায় চিনি মিশাইতে মিশাইতে যামিনীর পূৰ্ব্বতন সহপাঠী বন্ধু নিখিল কহিল, “ব্যাপারখানা