পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর্ষিন কি বলে দেখি : কাল অত রাত্রিতে হুটোপুটি ক’রে এসে হাজির ৷ এদিকে চেহার fথান দাড়িয়েছে যেন ঝোড়ে কাকের মত । কি হয়েছে ? ঝগড়া ? কিন্তু কার সঙ্গে ? ম-বাপের সঙ্গে না নববধূর সঙ্গে ? শেষেরটাই অবগু বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হচ্ছে । কারণ তা না হ’লে শুধু মা-বাপের কাছে ফুট বকুনি খাওয়ায় চেহারার উপর এতটা চিহ্ন থাকত না ’ § যামিনী ক্ষীণ হাসিয়া কহিল, “ঝগড়া আবার কি ? ফেল করেছি পরীক্ষায়, বীজে কথার সময় নেই | উঠে পড়ে লাগতে হবে ।” এই বলিয়া চা খাওয়া শেষ হইবামাত্র সে তাড়াতাড়ি উঠিয়া দরজায় খিল দিল । নিখিল সামিনীর রুচি এবং প্রকৃতি জানিত । তাই দু-তিন দিন আগে থবর পাইলেও তাহার দুইথান ঘর যথাসাধ্য সাজ ইয়া-গুছাইয়া Y: বৃষ্টিল । টেবিলের উপর সজ্জিত পুস্তকের কাছে একটা চেয়ার টানিয়া লইয়া যমিনী বসিল । খুব নিবিষ্ট চিত্ত একটা বই টালিয়া লইয়া পড়িবার চেষ্টা করিল। কিন্তু ম:ম পড়িতে লাগিল নিৰ্ম্মলfর কথা । সেই প্রথম তাহার সহিত কেমন করিয়া আলাপ হয় । কেমন করিয়া এক দিন তহিকে হামূলেটের কিয়দংশ আবৃত্তি করিতে শুনিয়া মুগ্ধ হইয়া গিয়াছিল । সেই তাহার সরল আত্মবিস্তৃত ভাব । পুব দিকের জানালাটা খোলা ছিল সেই দিকে জর পড়িতে চোখে পড়িল সামনের যে দোতাল বাড়িটা এতদিন থালি ছিল তাঁহারই উপরের মাঝখানকার ঘরটায় জানালীয় জানালীয় জাফরানি রঙের পর্দা উড়িতেছে, খোলা দুয়ারের অবকাশ-পথ দিয়া সাজান ঘরের কিয়দংশ চোখে পড়িতেছে । পালঙ্কের উপর দুগ্ধশুভ্র বিছান, মাটিতে ঢালাও বিছানার উপর জরির মছলনা পাতাশপায়ের দিকে কাহার এক জোড়া লাল মখমলের চটি । কে এ-ঘরের অধিবাসিনী যামিনী তাহ জানে না, কিন্তু সেই ঘরখানার পানে চাহিবামাত্র তাহার মনট করিয়া উঠিল । মনে পড়িয়া গেল তাহার সেই ঘরের স্মৃতি । নিজের ছাত্তে সে সজাইয়াছিল, দেয়ালের কোন দিকে কোন ছৰি টাঙাইবে, পর্দার রঙ কেমন ইষ্টবে এ লইয়া কত জল্পনা-কল্পনা কত আলোচনা, कृष्ट छु মুক্তি tూtr్స 曼 নিজের মনে সে কত ভাঙাগড় । সারেঙের শব্দের সহিত স্ত্রী-কণ্ঠের কোমল স্বরের আওয়াঙ্গ আসিল । যামিনী কিছু কিছু হিনী জানিত, গানের প্রথম লাইনটা ঘুরিয়াফিরিয়া গীত হইতে শুনিতে লাগিল “পলপন সে পাগে ঝরারীমূ--- যব ম্বর আওয়ে প্যান্ত্রে মোরি-••" অনেক ক্ষণ ধরিয়া বৃথা পড়িবার চেষ্টা করিয়াও যখন কিছুতেই মন বসিল না তখন বিরক্ত হইয়া যামিনী সশব্দে দরজাটা খুলিয়া মিথিলের কাছে গিয়া বলিল, “এ কোন হতভাগা ঘর ঠিক করলে আমার জন্তে ? সামনের ওই বাড়িটা যে জানালার গায়ে লাগাও, আর গান-বাজনার শব্দ উঠছে অহমিশি ।” নিখিল মুখ টিপিয়া হাসিয়া কহিল, “জানি নে ভাই, আজি ক’দিন থেকে দেখছি কে একটা পার্সি মেয়ে ঐ ঘরটা ভাড়া নিয়েছে । তা তোমার আর এমন অংেবিধ কি ? যে-স্বপ্নে এখন তোমার দিন কাটছে তাতে আইন মুখস্থ করার চেয়ে গানের ঝঙ্কার এমন কি মন লাগবে ?” দরোয়ান একটা রেকবীতে করিয়া একরাশ থাম ও পোষ্টকর্ড লইয়: সকালের ডাক বিলি করিয়া বেড়াইতেছিল । “চিট ঠি আপকা ভি হ্যায় একঠো” যামিনীর কাছে আসিয়া সে থামিল । যামিনীর বুকের ভিতরটা হঠাৎ ধ্বক্ করিয়া উঠিল । নিৰ্ম্মল চিঠি লেখে নাই তো তাহীকে ? কথাটা মনে হইতেই একটা মধুর সম্ভাবনায়, অধীর আগ্রহে তাহার সমস্ত মন ভরিয়া উঠিল । চিঠিখানা হাতে লইতেই কিন্তু আশা নিবিয়া গেল । নিৰ্ম্মলার চিঠি নয় । বাড়ি হইতে মা লিখিয়াছেন রাগ করিয়া যে, বেী যখন এখানে থাকিতেই পারে না তখন তাহাকে আর এখানে মা-আনাই ভাল । তাহারা যামিনী বা নিৰ্ম্মলা সম্বন্ধে কিছু জানেন না । যামিনী যতদিন নিজে উপাৰ্জ্জন করিয়া তাহার স্ত্রীকে প্রতিপ tলন না করিতে পারে তত দিন সে যেন নিজের বাপের বাড়ি:তই থাকে । যামিনী চিঠিটা দল পাকাইয়া জানালার বাইরে ছুড়িয়া ফেলিয়া দিল । ওবাড়ি হইতে গানের সুরের সঙ্গে অনেকের একত্ৰ-মিলিত একটা হাসির গরুরী উঠিতেছিল । যামিনী বিরক্ত হইয় ঘরের ওইদিককার