পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অাম্বিন শবরীর প্রতীক্ষণ

  • なな

তাহাকে চক্ষে অঞ্চল দিতে দেখিয়াই বামুন-ঠাকুরাণীর মন গলিয়ছিল । এথন সমস্ত ঝগড়াবিবাদ বিস্তুত হইয়া তাড়াতাড়ি তাহার দিকে ফিরিয়া কহিল, “কেন কি হয়েছে রে রাতু ? ই৷ তই বল ত ভাই । আমাদের মধ্যে আর লুকোছাপা কি ? তোদের এই দিদিমণির কাগুকারখানা আমারও যেন কেমন-কেমন ঠেকে । তবে বলতে তে আর পারিনে কিছু, নুতন লোক ৷” “সব জানি, সব জানি । আমার চাকরি এই নিয়ে আজ দশ বছরের হ’ল । বিয়ের আগেও দেখেছি । সে কি কাও, পাত্তর গথিবীর জন্তে ! এই তথনই মোটরে করে গে বেড়িয়ে নিয়ে আসছে । তথনই আসছে রাশ রাশ গয়নাপত্তর । তার পরে মা সু-দিনও গেল না, সব কেড়েকুড়ে নিয়ে বাপের বাড়িতে দুম ক’রে ফেলে দিয়ে গেল । দেখিল নে (খুব নিম্নকণ্ঠে) সারা অঙ্গে সেই আইবুড়ে বেলাকার লিঙ্কলিকে দু-গাছি বালা ছাড়া আর অন্ত কিছুই নেই।” হাতেব বইটা মাটিতে পড়িয়া গিয়ছিল । যাইতে যাইতে সেইটা কুড়াইয়া লইবার জন্ত নিৰ্ম্মলা দাড়াইল, হেট হইয়া সেটা তুলিয়া লইবার সময় তাহারই বাড়ির পরিচারিক-মহলে তাহার সম্বন্ধে কি আলোচনা হইতেছে কীনে আসিল । নিমেষের জন্ত পাঘাণ-মূৰ্ত্তর মত সেখানে দাড়াইয়া থাকিয় সে সেখান হইতে চলিয়া আসিল । ক্রমশঃ শবরীর প্রতীক্ষা শ্ৰীবীণা দেবী আনন্দে সারাটি প্রাণ উঠিছে শিহরি আসিবেন আসিবেন আসিবেন হরি । আসিবেন আসিবেন আসিতেই হবে তার বৈকুণ্ঠ তাজিয়া দীন কুটীরে আমার । এ যে ভকতের ডাক প্রীণের আহবান এর চেয়ে দেবতার কোথা আছে স্থান । হে আমার উপাসিত তুে আমার নারায়ণ কখন আসিবে তুমি কোন সেই মহাক্ষণ । কোন ভাবে কোন বেশে দাড়াবে সমুখে এসে উছলি বিমল জ্যোতি আলোকিবে প্রাণমন । শৈশব উন্মেষ হ’তে বসে আছি প্রতীক্ষায় অগণিত কত শত সময় বহিয়া যায় । গ্রীষ্মশেষে বর্ষ আসে, শরত হেমস্তে মিশে, শীতীস্তে বসস্ত আসি কত শোভা পায়, ফলে ফুলে ভরি ডাল ধরণী সাজায় । তারি সনে মম চিত্ত নবসাজে সাজে নিত্য, তোমারি পূজার তরে ওগো প্রেমময়, আশাপথ পানে চাহি দিন বহে যায় । নারায়ণ নারায়ণ পূর্ণ কর প্রাণমন দুঃখ দূর করি কর চিত্ত ভরপুর দয়া কর দয়াময় প্রাণের ঠাকুর । বালিকা-বয়সে অামি শুনেছিছু ঋষিৰাণী “নারায়ণ আসিবেন দুয়ারে তোমার শবরী সাজায়ে রাখ পূজার সম্ভার ” জানি নাথ ! জানি আমি চণ্ডালতনয়। আমি অপবিত্র দেহ মম পরশে না কেহ, নীচ জাতি লাহি পাৰ মানবের স্নেহ । তুমি ত গড় নি জাতি, তুমি ত দিয়েছ প্রাণ তুমি কেন আসিবে না ভগবান ভগবান ।” না না তিনি আসিবেন টলিবে আসন তার প্রাণের আহবান এ যে নহে ব্যর্থ হইবার । শৈশবে ডেকেছি তোমা শিশুর সরল মন ভেবেছি খেলার সার্থী তুমি বুঝি নারায়ণ । যৌবনে তুলেছি ফুল এনেছি নদীর জল পরাব ফুলের মালা ধুয়ে দেব পদতল । তুমি ফুল ভালবাস আপনি সেজেছি ফুলে, তোমার মধুর নাম শিখায়েছি পার্থীকুলে । আজিও বিহগদল আজিও নদীর জল তোমার মধুর নামে করিতেছে ছলছল । যৌবন অতীত এবে জরা আসিয়াছে নামি । পূজার সম্ভার লয়ে এখনও বসিয়া আমি | নয়ন সমুখে মম নামিয়া আসিছে ঘোর, কতদূরে আছ তুমি প্রাণের দেবতা মোর। এখনও প্রভাতে উঠি বনে বনে যাই ছুটি পথের মলিন ধূলি দূর করি তায়, কাটাটি কুড়ায়ে রাখি যদি বাজে পায় । এই পথে আসিবেন আমার প্রাণের হরি উথলিবে নদী জল চরণ পৰ্ব্বশ করি । প্রকৃতি সাজিবে ফুলে পার্থীয় গ:হিবে গান, সে চরণ বুকে ধরিসার্থক হইবে প্রাণ । আগ্রহ উৎসুক প্রাণে চেয়ে আছি পথপানে পদতলে প্ৰাণমন করিয়াছি নিবেদন, তুলে লও বনফুল নারায়ণ নারায়ণ ।