পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ፃ8 {EET., - نجات دهد হয় তাহাই তিনি খান, যাহা পরিতে দেওয়া হয় তাহাই তিনি পরেন এবং যাহা শুনিতে বলা হয় নীরবে তাহ শুনিয়া যান। অবশ্য এ ব্যবস্থায় তাহার নিজের কোনো অমত ছিল না । জন্মাবধি কোনো-না-কোনো রমণীকে ভাগ্যবিধাত্রী হিসাবে সমীহ করিয়া চলিতে তিনি অভ্যস্ত, সেই হিসাবেই তিনি নীহারিকাকেও মানিয়া চলিতেন। বরং আগে আগে যাহারা তাহার দগুমুণ্ডের কত্রী ছিলেন, এটি তাঙ্গদের চেয়ে অনেক অংশে দমাবতী, ইহার অধীনে আদর যত্নটা ঢের বেশী পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে যত্নের আধিক্যটা অসহ লাগিলেও রামহরি সহ করিয়া যাইতেন, কারণ স্ত্রীজাতির কথার যে প্রতিবাদ করিতে নাই, এ শিক্ষা তাহার ভাল রকমই হইয়াছিল । সুতরাং স্বামী হইয়াও তিনি অতি সাধবী পত্নীর মত নীহারিকার একান্ত অমুগত হইয়৷ রছিলেন এবং নীহারিক আসলে গৃহিণী হইলেও কাৰ্য্যতঃ কৰ্ত্ত হইয়া উঠিলেন । ইহাদের সংসারে যে-দুইটি শিশুর আবির্ভাব হইল, তাহারাও যেন ঠিক যাহা হওয়া উচিত, তাহার উল্টাটাই হইল। ছেলেটি হইল অতি স্বন্দর দেখিতে, মেয়েটি হইল শুামবর্ণ অতি সাধারণ চেহারার। যত দিন যাইতে লাগিল, ততই বুঝা যাইতে লাগিল যে, ক্রমান দেখিতেই শুধু স্বন্দর, ভিতরে বিশেষ কোনো বস্তু নাই । বুদ্ধি মুদ্ধি নাই, লেখাপড়া শিখিবার প্রবৃত্তি নাই, তবে স্বথের বিষয় এইটুকু যে, কুবুদ্ধিও বিশেষ নাই। চুপ করিয়া এক জায়গায় বসিয়া থাকিতে পাইলে সে সবচেয়ে খুশী হয়, একমাত্র স্বখাদ্যের প্রলোভনে তাহাকে একটু নড়িতে চড়িতে দেখা যায় । স্বাস্থাও ভাল নম্ব, অল্পতেই তাহার ঠাণ্ড লাগে, পান হইতে চুণ খসিলেই তাহার হজমের গোলমাল উপস্থিত হয় । নীহারিকা দেখে শোনে কপাল চাপড়ায়, আর বলে ভগবান একে গরিবের ঘরেই বা কেন পাঠালেন ? অার বেটাছেলে করেই বা কেন পাঠালেন ? রাজবাড়ির রাজনন্দিনী হলেই এর শোভা পেত। কিন্তু সমস্ত হৃদয় তাহার এই অকৰ্ম্মন্ত সুন্দর ছেলেই জুড়িয়া থাকে। মেয়ের দিকে মন দিবার তাহার অবসরই হয়না, যদিও মেয়েই ছোট । ত৷ কপালগুণে মেয়ের তাহাকে খুব বেশী দরকারও হয় না । মেয়ে ত নয় যেন লোহান্ন বঁটুল । বেশ গুীমবৰ্ণ, গোলগাঁল । চেহারা, মাথায় এক মাথা অমরকৃষ্ণ কোকড়ান চুল । সে দশ মাসে হাটিতে শিথিল, এগারো মাস পুরিতে ম৷ পুরিতে কলরব তুলিয়া কথা বলিতে আরম্ভ করিল। দুধ কোথায় থাকে, ফল কোথায় থাকে, মিছরী চিনি কোথায় থাকে, তাহার কিছুই জানিতে বাকি নাই।, ছেলের তদারক করিতে করিতে নীহারিক হয়ত খুককে খাওয়াইতেই ভুলিয় গেল, কিন্তু খুক দমিবার মেয়ে নয় । সে বাটি হাতে করিয়া, সিকি কড়া দুধ উন্টাইম দিয়া, খানিক দুধ খাইয়া, থানিক বুকে পেটে মাথিয় কাজ উদ্ধার করিয়া বসিয়া আছে । রাত্রে নিজের কাথা টানিয়া নিজে পাতে, দাদার বালিশ ঠিক করিয়া দেয়, খোক ভয়ে ভ্যা করিয়া উঠিলে খুকী তাহাকে বসিয়া সাম্ভনা দেয়। নীহারিক অবাক হইয়া বলে, “একে ভগবান করলেন কি-না মেয়ে, এ যে জেলার ম্যাজিষ্টর হবার যুগ্যি ।” যত দিন যাইতে লাগিল, ছেলেমেয়ের অসাধারণ তফাৎট বড় বেশী উগ্র হইয়া উঠিতে লাগিল । ছেলের নাম হইল কান্তিচন্দ্র, তিনি শুধু কাস্তিসৰ্ব্বস্বই হইয়া রহিলেন। স্কুলে তাহাকে ভৰ্ত্তি করিতে না করিতে ছেলে অমুখে পড়িয়া শয্যাগ্ৰহণ করিল, মাল কয়েক শুধু শুধু মাহিনী গণিয়া নীহারিক শেষে ত্যক্তবিরক্ত হইয়া ছেলের নাম কাটাইয়া দিলেন । ঘরেই অল্প মাহিনার এক ছোকৃর-মাষ্টার রাখিম৷ দেওম হইল, সে রোজ নিয়মমত হাজিরা দিতে লাগিল, তবে কাস্তিচন্দ্রের বিদ্যালাভ কতটা হইল, তাহার কেহ কোনো খোজ করিল না । চেহারাটা কিন্তু দিনের দিনই বেশী খুলিতে লাগিল, পাড়াপড়শীর নজরের ভয়ে কাস্তির মা ক্রমেই বেশী করিয়া সশঙ্কিত হইয়া উঠিতে লাগিলেন। মেয়ের নাম রাখিলেন বাপ শুামলতা, ডাকনামটা লতাই থাকিয় গেল । সাধারণ হিন্দু গৃহস্থঘরের মেয়ে, তাহার শিক্ষার ভাবনা বড় একটা কেহ ভাবে না। আর ভাবিয়াই বা হইবে কি ? বড় হইয়াত দেবী সরস্বতীর সহিত কোনো সম্পর্কই তাহার থাকিবে না, দিন কাটিবে রান্নাঘরে জার স্থতিৰাছে, তখন তাহাকে আবার অত ঘটা করিয়া লেখ পড়া শেখান কেন ? তাহার উপর লতা দেখিতে হুমারী নয়, নীহারিকার ইচ্ছ। খুব ছোট থাকিতে থাকিতে কোনগতিকে তাহার বিবাহ দিয়া পার করিয়া দেওয়া । ৰুচিবেলাঃ