ቈህሙ চেয়ে নিতে পাৰ্বতে ভায়ের কাছে চোখের জলে তারি জন্যে ভিক্ষার মত হাত পাততে হবে।” কল্যাণী বলিল, “যেদিন হবে, সেদিনও এই মনে করে মনে একটা তৃপ্তি হবে, যে মরার সময় মা’র কাছে টাকার কাঙাল হয়ে যাইনি, ম হারাবার শোকটা অন্তত ছিল খাটি।" হীরালাল অত্যন্ত বিস্মিত হইয়া বলিল, “তুমি কি সত্যি সত্যি কিছুষ্ট পাও নি ?” কল্যাণী মুখ ফিরাইয় চোখের জল লুকাইয়া বলিল, “আমন সময় মার কাছে কি একটা কাণ কড়িও চাওয়! যায় ?” হীরালাল আরও ব্যগ্রতার স্বরে বলিল, কিন্তু তিনি নিজে - ? তিনি কি তোমার কোনো ব্যবস্থাই ক’রে গেলেন না। ছেলে রাজ ঐশ্বৰ্য্য ভোগ করবে, আর মেয়েটাকে কি পথে বসিয়ে গেলেন ?” কল্যাণী বলিল, অমন করে কেন বল্ছ ? তোমার হাতে তিনি কি আমায় সাপে দিয়ে যান নি ? তোমার অন্নে আমার কি দাবী নেই ?” হীরালাল বলিল, “ অয় ত আমার আছে অষ্টরস্ত ! আমায় কে দেখে তার ঠিক নেই, আমি যাব পরের দায় নিতে! সে যাক গে-- এখন পষ্ট করে বল দেখি, ম! তোমায় কি দিয়ে গেলেন ?” কল্যাণী ইতস্তত করিতে লাগিল, ইচ্ছা করিতেছিল বলে, “কিছুই না," কিন্তু মিথ্যাটা মুখে বাধিল তাই বলিল, “গহনাগাটি ত প্রায় সবষ্ট অ্যমায়ু পরিয়ে দিয়েছিলেন ।” হীরালাল সম্মুখে ঝুঁকিয় পড়িয়া বলিল, “প্রায় সব মানে ? তাতেও কি বে। আধাআধি বখরা করেছেন ? সে সব কত টাকার হবে শুনি ? পাচ-সাত হাজার হবে, না আরও কম ?” কল্যাণী ঠোট উল্টাইয়া বলিল, “অত আমি জানি না” বলিয়া চোখের জল মুছিতে মুছিতে বাহিরে চলিয়া গেল । হীরালাল পিছন হইতেই বলিল, “জিনিষগুলো দেখাও না দেখি, কোথায় আছে ? পরিয়ে ত তিনি দিয়েছিলেন, কিন্তু তুমি যেখানে সেখানে ফেলে আস নি ত ছেলেমানী করে ?” কল্যাণী জানিত আদালতেও যেখানে ফাকি চলে, সেখানেও তাহার স্বামীর হাত এড়াইয় সে যাইতে পরিবে প্ত প্রবাসী; S3DBO না। স্ত্রীর মনের একটা সাময়িক শোকাবেগকে হীরালাল এতখানি সম্মান দিতে রাজি নয় যাহার জন্য গহনার কথাটা দুই-চার দিন চাপা দেওয়া যায়। কল্যাণী বলিল, “ন, ন, মা’র গহনা ফেলে আসব, আমি কি এতই পাগল ? সে আমি লোহার সিন্দুকে তুলে রেখেছি।” হীরালাল বলিল, “তোমার ঐ পচা সাতকেলে • লোহার সিন্দুকটায় ? ওর চেয়ে ত ক্যাওড়া কাঠের সিন্ধুকও মজবুত ! চল দেখি একথানাও আছে না চোরের পেটে গেছে।” চাবি খুজিতে অনেক সময় গেল। কাপড়ের আলমারীর তলার থাক হইতে চাবি বাহির হওয়া পৰ্য্যস্ত হীরালাল কল্যাণীর সঙ্গে সঙ্গে ঘুরিতে ও অসহিষ্ণু ভাবে প্রশ্ন করিতে লাগিল, “লোহার সিন্দকের চাবি আবার খুজে বেড়াতে হয় শুনি নি কখনও।” ‘ কোথায় রেখেছ বল, আমিই বার করছি ” “বাপের বাড়িডে ত আর যাওনি, তবে যাবে কোথায়” ইত্যাদি ; চার পুরুষ পূৰ্ব্বেকার মরিচৗধরা জীৰ্ণ আলমারা ক্যাচ র্কোচ করিয়া খুলিল, কিন্তু তাহাতে কল্যাণীব পুরাতন গহনার বাক্স ও দুই-চারিটি কীটদষ্ট দলিলপত্র ছাড়া আর কিছু নাই। হীরালাল চীৎকার করিয়া উঠিল, “কল্যাণী, তোমার কি মাথ পারাপ হয়েছে ? ঠিক কবে বল গম্বন কোথায়, নয়ত এখুনি পুলিসে খবর দেব।” কল্যাণী মাথায় হাত দিয়া বসিয়া পড়িল তারপর শ্রান্ত দৃষ্টি স্বামীর মূপের দিকে তুলিয়া বলিল, “দেখছ আমীর মনের ভুল ? মা’র ঘরের সিন্দুকেই চাবি দিয়ে রেখে এসেছি, এ বাড়ি মোটে আনাই হয় নি। আসবার সময় আনব মনে ক'রে ভুলে গেলাম।” হীরালাল বলিল, "এখন আর গাড়ী চেয়ে পাঠাবার সময় হবে না, চাইলেও তোমার স্বচতুর ভাই ঠিক কারণটি বুঝবে চল আমিই একটা ঠিকে গাড়ী করে তোমায় পৌছে দি, চ{ ক’রে জিনিষ গুলো নিয়ে আসবে।” কল্যাণী একেবারে কাঠের মত আড়ষ্ট হুইম্ব দাড়াইল “মায়ের শেষ সময়ে তুমি একবার গিয়ে দাড়াতে পারবে না, আর এরি মধ্যে ছুদিন না যেতেই তোমার সঙ্গে আদি গয়না আনতে যাব ? যেতে পারব না ” হীরালাল রাগিয়া আগুন হক্টয়া বলিল, “ত যাবে কেন ।
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।