পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vペ উপস্থিত হইবেন। স্বামী ও ভ্রাতার লোভ ও হিংসার দুরন্ত অনলের গ্রাস হইতে তাহার মনের স্নেহ ভালবাসার কোমল অঙ্কুরগুলিকে বাচাইয় রাখিবে কি করিয়া ? তাহার স্বামীগৰ্ব্ব ও ভ্রাতৃগর্বের মাঝখানে আপনি দাড়াইয়া সে এত দিন দুই দিক রক্ষা করিয়াছিল ; কিন্তু আজ যখন পরম্পরের আঘাতে সে দুইটি সৌধই এক সঙ্গে তাহদের সকলের চোখের সম্মুখে ধূলিসাৎ হইয়া পড়িবে তখন উভয়ের লজ্জার বোঝা লইয়া সে লুকাইবে কোন থানে ? সন্ধ্যা হইয়া আসিল, কিন্তু কল্যাণী আলো জালিল না । ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বাহিরের গুড় বৃষ্টির ঝাপট আসিয়া তাহার চোখে চুলে ও উত্তপ্ত ললাটে শীতল স্পর্শ দিয়া যাইতেছিল। কল্যাণী বলের অতীত স্থতির ভিতর ডুবি ভাবিতেছিল চৌদ্ধ বংসর আগেকার তাহার জীবনের আনন্দময় মুহূৰ্ত্তগুলির কথা। গাত্রহরিত্রার দিনে তাহার বালক দাদা নিরঞ্জন স্কলারশিপের টাকা জমাইয়া তাহাকে যখন সোনার হার গড়াইয়া আনিয়া দিয়াছিল তখন সে বলিয়াছিল, "দাদার গয়নার সঙ্গে অন্য গম্বন মেশাব না । আজ শুধু এইটাই আমি পরব। হাতে আমার রুলি থাকলেই হবে।” বিবাহের পর স্বামী তাঁহাকে ঠাট্ট করিত, “কি এমন হার দিয়েছে ভাই যে অষ্টপ্রহর না পরে থাকতে পার না ? আমি ষে অমন তাবিজ দিলাম তাত একবার স্বৰ্ঘ্যির মুখ দেখতে পেলে না।” কল্যাণী বলিল, “ত যাই বল বাপু, নিজের মায়ের পেটের ভাইয়ের চাইতে কাউকে বেশী ভাল বাসতে পারব না।” বাহিরে নিরঞ্জনের গলা শোনা গেল, “কি রে কলি, গয়না হারিয়েছে নাকি ? তাই একেবারে আঁধার ঘরে খিল দিয়েছিস । খোল দরজা কি হয়েছে শুনি ।” কল্যাণী বলিল, “বোঁদির কাছে কি কিছুই শোননি। কখানা ইরের গহ পাচ্ছি না, বাক্সেই সব ছিল, তুমি ত জানই । যদি না পাওয়া যায় দাদা, ত তোমাকেই এখন কোথা থেকে এনে দিতে হবে। তারপর আমি আস্তে আস্তে দাম শোধ করব কিম্বা আর যা ভাল হয় ব্যবস্থা করব। আপাতত ও বাড়ির কাছে আমার বাপের বাড়ির মুখ রক্ষা করতেই হবে ।” ় প্রবাসী SOBO কল্যাণী দাদার দুই পায়ের উপর মাথা রাখিয়া গুইম্বা পড়িল । - নিয়ঞ্জন বলিল, “দেখ কলি, যা ঢাকা যাবে না, তা তোর কাছে, অন্তত ঢাকতে চেষ্টা আমি করব না। ও গয়না মা হাজার বার বেীকে বলেছিলেন বুলবুলের বিয়ের যৌতুক দেবেন ; শেষকালে তার কি মতি হ’ল নাতনীর কথা একবার মনেও করলেন না, মেয়েকেই সব ঢেলে দিয়ে গেলেন। কিন্তু তুই ত ওর পিসি, তুই জানিস ও সব কথা । দুখান৷ গম্বন আমি তার গায়ে দিয়ে যদি তুলে রেখে থাকি, তার জন্যে আমাকে লজ্জা না দিয়ে পারলি না ? আমি জোর করে কেড়ে নিলেও তুই ফিরে চাইবি না এ বিশ্বাস আমার এতদিন ছিল ।” কল্যাণী বলিল, "দাদা, আমি সত্যি বলছি বুলবুলকে ও গয়না দেবার কথা আমি কোনো দিন ঘুণাক্ষরেও জানতাম না। তা জানলে সেদিন মা’র সাম্নেই আমি ও গয়না খুলে তাকে পরিয়ে দিতাম। আমার নিজে পরার চেয়ে তা হাজার গুণে বড় আনন্দের কথা হত।” নিরঞ্জন হাসিয়া বলিল, “তাই যদি হত, তবে আজ মা'র কাছে বাহব পাবি না বলে মনটা একেবারে বদলে গেল কি করে ?” কল্যাণী বলিল, “দাদা, তুমিও আমাকে ভুল বুঝবে ? তুমি কি জান না যে তোমারই মানের জন্যে আমি তোমার কাছে ও গয়না ভিক্ষ চাইছি । মা’র নিজের হাতে পরানো গহন যদি আমি ও বাড়িতে দেখাতে না পারি তোমাকে তাহলে তারা কি বলতে বাকি রাখবে বল ত !” নিরঞ্জন ঠোঁট উন্টাইয় বলিল, তারা মনে ? গৌরবে বহুবচন ত ? তোমার স্বামী-রত্ন ছাড়া আর কার এত বড় আস্পদ্ধা হবে যে আমার মায়ের গয়না নিয়ে আমাকে কথা শোনাতে আসবে ? নিজে ত শ্বশুরবাড়ির ঘাড় মুচড়ে যা কিছু আদায় করেছিলেন সব জলে দিয়ে শেষ করেছেন, এখন স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে শাশুড়ীর সব গল্পনা কট আত্মসাৎ না করলে হবে না ?” কল্যাণী মানমুখে বলিল, “কেন মিথ্যে তাকে গাল দিচ্ছ ? তার পাওনা টাকা সে যা খুণী করেছে, গয়নাও কারুর কাছে সে ত চাইতে আসেনি। গাল যা দেবে জামাকেই लांe " -