পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سياسيا

  • ***đĩ># # * * * SనఃQ

হইত। লেখাপড়া ও স্কুলমাষ্টারকে আরবেরা স্থণার চক্ষে দেখিত ; কেন-ন, প্রাচীন রোমে যেমন গ্ৰীক ক্রীতদাসগণ শিক্ষকতা করিত, প্রধান প্রধান শহরে এই সময় মাওয়ালারাই ছেলে পড়াইত। এজন্য একটি চলিত কথা ছিল—তাতী ও মাষ্টারের মূর্ধতা। এই সময় প্রকৃতপক্ষে আরবেরা অৰ্দ্ধসভ্য অবস্থায় ছিল। রাজ্যের হিসাবনিকাশ কিংবা কোন দপ্তরে আরবদের চাকরি দেওয়া হইত না । যে-দেশের মাটিতে চাষ হয় না, যে-জাতি যতদিন কৃষিকে অবজ্ঞা করে ততদিন সেদেশে সভ্যতার অভু্যদয় হয় না। বাস্তবিকপক্ষে আরব সভ্যত বলিয়৷ কোন বস্তু নাই। আরবের মরুবেষ্টনীর বাহিরে প্রাচীন আসীরিয় বাবিলনীয় ও ইরানীয় সভ্যতার মহামিলন-ক্ষেত্র ভাইগ্রীস ও ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবৰ্ত্তী ভূভাগে যে সভ্যতা আব্বাসী খলিফাদের সময় গড়িয়া উঠিয়াছিল উহা মুসলমান সভ্যতা। এই সভ্যতা বিজিত মাওয়া গণের কীৰ্ত্তি । তাহারাই প্রাচীন সভ্যতার জ্ঞানভাণ্ডার হইতে দর্শন, সঙ্গীত, গণিতশাস্ত্র, জ্যোতিষ, রসায়ন, প্রকৃতিবিজ্ঞান ইত্যাদি আহরণ করিয়া আরবের শূন্ত ভাণ্ডার পূর্ণ করিয়াছে। ইসলাম জাতিভেদ ও বর্ণভেদ স্বীকার করে না ; মানুষ মাত্র না হউক, অন্ততঃ মুসলমানের পরস্পর সমান। খোদতালার রাজ্যে আরব-হাবলী ধনী-দরিদ্র, ব্রাহ্মণ-শূত্রে তফাৎ নাই। তাহার দরবারে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি সংকার্য ও পুণ্যের পরিমাণ—ঐশ্বৰ্য্য কিংবা বংশমর্যাদা নয়ে । কিন্তু ওীয়-বংশের রাজত্বকালে রাষ্ট্র ও সমাজে ,ৈ ম্য সাম্যের ঘৃণা প্রীতির এবং বর্ণবিদ্বেষ একত্তার স্থান অধিকার করিল। এই সময়ে মনুষ্য জাতির তিন ভাগ পরিকল্পিত হইত, যথা— আরব, মাওয়ালা ( ইরানী, গ্ৰীক প্রভৃতি বিজিত জাতি যাহারা ইসলাম গ্রহণ করিয়াছিল ) এবং আহেল-ইকেতাব, অর্থাং য়িহুদী ও খৃষ্টান যাহারা মুসলমানদের পূৰ্ব্বে অপৌরুষেয় গ্রন্থ বাইবেল ও পেন্টটিউক পাইয়াছিল। এই তিন শ্রেণীর মধ্যে আরব যোল-আন মানুষ, মাওয়াল অৰ্দ্ধ-মনুষ্য, এবং জাহেল-ই-কেতাব অমানুষ (non-men ) জর্থাৎ, মনুষ্য-পর্যায়ের অন্তর্গত নহে। আরবের ভাষা, আরবের ধর্শ্ব এবং আরব-প্রভুত্ব মেরুদণ্ডহীন স্থলভ গ্ৰীক অভিভূত করিয়াছিল যে, আরবীভাবাপন্ন মাওয়ালারী নিজেদের ছোট জাত বলিয়াই মনে করিত । আরব-কস্তার সহিত মাওয়ালার বিবাহু শূদ্র ও ব্রাহ্মণীর প্রতিলোম-বিবাহের চেয়েও অধিকতর নিন্দনীয় ছিল । কথিত আছে, এক আরবকন্যা একজন পরম বিদ্বান ব্যক্তিকে বিবাহ করিয়াছিল । বর আরবী ভাষায় দিগগজ পণ্ডিত হইলেও স্ত্রীকে বাসরঘরের বাতি নিবাইতে বলিবার সময় ধরা পড়িলেন। তিনি জাতিতে আরব ছিলেন না। স্বামীর অশুদ্ধ আরবী উচ্চারণ শুনিয়া স্ত্রী তৎক্ষণাৎ তাহাকে তালাক দিলেন । কোন মাওয়াল আরবকন্যা বিবাহ করিয়াছে, এই সংবাদ সরকারী কর্তৃপক্ষের কর্ণগোচর হইলে স্বামী স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য হইত, এবং এই অপরাধের জন্য মাথার চুল ও চোখের ভুরু কামাইয় মাওয়ালাকে দু-শ ঘা বেত দেওয়া হইত।* প্রসিদ্ধ কবি মুছেবের পুত্র তাহার আরব-প্রভুর কন্যার প্রেমে পড়িয়াছিল ; এবং কন্যার অভিভাবকগণও এ বিবাহে সম্মতি প্রকাশ করিয়াছিল । ইহা শুনিয় কবি তাহার হাবসী গোলামদিগকে হুকুম দিলেন, ছেলেকে বেদম প্রহার করিয়| বেন তাহার এ বাতিক দূর করে ; কারণ মাওয়াল-কবি তাহার পুত্রের এ ধ্রুপ অভিলাষ আমাজনীয় অপরাধ বলিয় মনে করিলেন । মা ওয়ালাদের মধ্যে র্যাহার। শিক্ষা, চরিত্রের উৎকর্ষতা ও জ্ঞানে আরবদের চেয়ে শতগুণ শ্রেষ্ঠ ছিলেন র্ত্যহাদের মধ্যে এক দল ছিলেন দাস-মনোভাবসম্পন্ন আরব-ভক্ত--যে ভক্তি ব্রাহ্মণের প্রতি সদ্ধম্মী শূদ্রের ভক্তির সহিত তুলনা করা যাতে পারে। শুধু ওর্মীয় রাজত্বকালে নয়, যখন আব্বাসী খলিফাদের দরবারে মাওয়ালাদের পূর্ণ প্রাধান্ত, তখনও এই শ্রেণীর মাওয়ালাদের অহেতুকী আরব-ভক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। খলিফা মনম্বরের দরবারে সর্বশ্রেষ্ঠ পণ্ডিত ইবন-উল-- মোকাপ ফ একজন ইরানীয় মাওয়াল ছিলেন। বসোর শহরে একজন বিশিষ্ট পারস্তবাসীর বাড়িতে এক বৈঠকে ইবন-উল-মোকাপ ফ প্রশ্ন তুলিলেন—পৃথিবীর মধ্যে কোন জাতি বুদ্ধিতে শ্রেষ্ঠ ? উপস্থিত ব্যক্তির স্থান ও পাত্র বিবেচনা করিয়া বলিল-ইরানী জাতি। ইবন মোকাপ ফ বলিলেন – ইহা ঠিক নহে ; ইরানী জাতি মহাপরাক্রাস্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্য Ummayyad and Abbasides, p. 119.