পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

துரச "প্রবচনা টr হয় না। বিশ্ৰুতকীৰ্ত্তি খলিফা মনম্বর, হারুণ-অল-রশিদ এবং এবং মামুনের দরবারে জ্ঞানচর্চার বিবরণ হইতে এই উক্তির সার্থকতা বুঝা যাইবে । খলিফা মনসুর মনস্থর নিষ্ঠাবান মুসলমান হইলেও শাস্ত্রচর্চায় জায়েজ, ন-জায়েজ, হারাম ও হালাল বিচার করিতেন না। ইসলামের অনুশাসনে মুসলমানের ফলিত জ্যোতিষ (astrology) আলোচনা নিষেধ। মনস্কর সর্বপ্রথমে এই নিষেধ উপেক্ষা করিয়া জ্যোতিষ শাস্ত্রের সমাদর করিয়াছিলেন। র্তাহার দরবারী জ্যোতিষীর নাম ছিল নে বখত। নো-বখতের দ্বারা লগ্ন ৪ শুভমুহূৰ্ত্ত বিচার না করাষ্টয়া খলিফা এক পা-ও চলিতেন না। ইনি ও ইহার বংশধরগণ বহু জ্যোতিষ গ্রন্থ ফার্স ভাষা হইতে আরবী ভাষায় অহুবাদ করেন। মনস্করের গুণগ্ৰাহিতায় আকৃষ্ট হইয়া কয়েক জন হিন্দু জ্যোতিষী বাগদাদ গিয়াছিলেন। এই সমস্ত পণ্ডিতের সাহায্যে অল ফজরি ব্রহ্মগুপ্তের * (Sind-hind) s Rs TsPK (Ar-kand ) নামক জ্যোতিষ গ্রন্থের আরবী অনুবাদ প্রকাশ করেন। মনস্করের রাজত্বকালে পঞ্চতন্ত্রের করটক-দমনক উপাথ্যান ইস্লামের বহু পূৰ্ব্বে ফাসী ভাষায় তর্জমা হইয়াছিল। মন্‌স্করের আদেশে ইবন-উল-মোকাপ ফ এই ফাসী তর্জমার আরবী অনুবাদ ( Kalitana Damna ) করেন। চিকিৎসা-বিজ্ঞানের চর্চাও মন্তরের সময় হইতে আরম্ভ হয়। জুরজিস (George ) নামক সিরিয়ান খৃষ্টান ছিলেন র্তাহার দরবারী হকিম । তিনি সিরীয়, গ্রীক ও আরবী ভাষায় স্থপণ্ডিত ছিলেন। খলিফা মন্তরের পুত্র মেহদীর রাজত্বকালে মানী প্রভৃতি তাকিকগণের গ্রন্থ আরবী ভাষায় তর্জমা হওয়ায় শিক্ষিত মুসলমানদের ধৰ্ম্মবিশ্বাস শিথিল হইয়া পড়ে। ইহার ফলে ইসলামে চাৰ্ব্বকদের ন্যায় একদল কুতর্কিক দেখা দেয় – ইহাদিগকে জিনিক বলা হইত। এই গভীর জ্ঞানসম্পন্ন, চিন্তাশীল, অবিশ্বাসী তার্কিকদের তর্কের হামলায় ইসলামের আলেমসমাজ পরিত্রাহি ডাক ছাড়িলেন। চাৰ্ব্বাকেরা যেমন বৈদিক ক্রিয়াকলাপ, পরজন্ম, ঈশ্বরের অস্তিত্ব, ইত্যাদিকে SనOBO হেয় প্রতিপন্ন করিয়াছিলেন, সেইরূপ জিন্দিকদের তর্কের বিরুদ্ধে রস্কল, কোরাণ ও খোদাকে রক্ষা করা সেকেলে মৌলানাদের অসাধ্য হইয়া উঠিল। কেননা, প্রকৃত মুসলমানের ধৰ্ম্মকে লৌকিক যুক্তির বহু উৰ্দ্ধে মনে করে। মৌলানা ও গোসাইরা এ বিষয়ে একমত—অর্থাৎ “বিশ্বাসে মিলয়ে কৃষ্ণ তর্কে বহু দূর ” গোসাইরা “কৃষ্ণনিন্দী"গুনিলে কানে আঙুল দিয়া “স্থানতাগেন” দুর্জনকে বর্জন করেন। কিন্তু মৌলানারা ছিলেন অন্য ধাতের লোক কথায় আঁটিয়া উঠিতে না পারিলে তাহারা সকল যুক্তির সেরা “লাঠৌষধি” ব্যবস্থা করিতেন । “ইসলাম গেল” রব তুলিয় তাহারা অন্ধবিশ্বাসী জনসাধারণকে ক্ষেপাইয়া তুলিতেন, কিংবা খলিফার দরবারে নালিশ করিয়া জিদিকদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করিতেন । কিন্তু ইহাতেও জিন্দিক-বাদ ধ্বংস হইল না ; মুখে হার না মানিলেও জিদিকদের কাছে মৌলানার মনে মনে পরাজয় স্বীকার করিতেন কেননা ভাবের ঘরে কেহ বেশীদিন চুরি করিতে পারে ন। খলিফা মেহদী বুঝিতে পারিলেন, যুক্তিদ্বারা কুতার্কিকগণকে পরাস্ত করিয়া ধৰ্ম্মকে প্রতিষ্ঠা করিতে ন পারিলে যুক্তিতর্কের যুগে ইস্লামের প্রভাব ক্রমশঃ গৰ্ব্ব হুইবে । মৌলানার নিরুপায় হইয়। জিন্দিকগণের প্রদর্শিত পথে বিরুদ্ধবাদী তর্ক ও দর্শন শাস্ত্র অধ্যয়ন করিতে লাগিলেন । কিন্তু ধৰ্ম্মে দৃঢ়বিশ্বাস থাকতে অমুসলমান-শাস্ত্র চর্চার বিষক্রিয় ইহাদের উপর দেখা গেল না। পরবর্তী কালে বরং এই বিষকে হজম করিয়া ইমাম গজ্জালী অমর হইয়াছেন । র্তাহার পবিত্র লেখনী ইস্লামকে নূতন রূপ দিয়াছে । তাহার কৃপায় বহু জিদিক নিজেদের ভ্রম বুঝিতে পারিয়া ধৰ্ম্মবিশ্বাস ফিরিয়া পাইয়াছে। জিন্দিকগণের সহিত বাদ-প্রতিবাদের ফলে এই সময়ে ইলম-ই-কালাম বা ইসলামীয় ধৰ্ম্মশাস্ত্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। - খলিফা হারুণ-অল-রশিদের সময় বাগদাদ শুধু মুসলমানের শহর ছিল না । সকল দেশের ও সকল ধর্শের লোক তখন বাগদাদে বাস করিত। ইহারা তখন অনেকে রাজদরবারে চাকরির লোভে আরবী শিথিত । খলিফা হারুণ বাগদাদে এক বাণীধাম প্রতিষ্ঠা করেন। ইহার যুক্তি ও উপহাসের তীব্র বাণে বিদ্ধ করিয়া লোকসমাজে নাম ছিল বায়েৎ-উল-হিক্মং ( Bait-ul-Himal )