পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2* চড়েন—তাও খাসিয়া স্ত্রীলোকের নয়। স্বস্থ ব্যক্তি হেঁটেই ওঠা-নামা করেন, যদিচ এ ওঠা-নামার ব্যাপারটা পরিশ্রমসাধ্যও বটে এবং সময়ও ব্যয় হয় যথেষ্ট। এই অন্ধবিধা দূর করবার উদ্বেপ্তে রোপণ্ডয়ে কোম্পানী পাহাড়ের গা বেয়ে বেয়ে স্তম্ভ পুতেচেন এবং সেই স্তম্ভে রোপ লাগিয়ে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত মাল-চলাচলের এক ব্যবস্থা করেছেন। এই পথে ভোলাগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের কয়েক জন কণী ৬ মাইল হবে এবং কোন মাল ভোলাগঞ্জ থেকে চেরা পৌছতে এবং চেরা থেকে ভোলাগঞ্জ পৌছতে ৪৫ মিনিট সময় লাগে। 'রোপ মানে এখানে মোট লোহার তার। শুধু মালই এই পথে পাঠান হয়—আলু এবং মাছ প্রচুর আমদানি হয় দেখলুম। মাঝে মাঝে ইঞ্জিন বিগড়ে এই মাল মধ্যপথে আটকে থাকে, এদিকেও আসে না, ওদিকেও যায় না। স্বতরাং খুব নির্ভরযোগ্য নয় বলে এ-পথে এখনও ডাক পাঠানো হয় না। যদি ক্রমশঃ উন্নতি ক’রে এই পথে মানুষের গমনাগমনের ব্যবস্থা ভবিষ্যতে হয় তবে খুব সুবিধা হবে, কিন্তু সে সম্ভাবনাও হয়ত স্বদরপরাহত, কেন-ন, এখন শিলং থেকে শ্রীহট্ট পর্য্যস্ত সোজা মোটরের পথ খোলা হয়েছে। গত মার্চ মাসে আসামের গবর্ণর এই পথ খুলেছেন । মৃতরাং মনে হয় এখন অধিকাংশ পথযাত্রী ঐ পথেই যাতায়াত করবেন। কিন্তু তবু এ কথা স্বীকাৰ্য্য যে, রোপওয়ে কোম্পানী দেশের একটি প্রকৃত অসুবিধা দূর করতে চেষ্টা করেছেন এবং ঐ কোম্পানীতে অনেক শ্রমিকের চাকরি জুটেছে। তারা উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে এবং আর্থিক S38O লোকসান সহ করে সম্প্রতি একজন স্থদক্ষ ইঞ্জিনিয়ারও নিযুক্ত করেছেন। রোপওয়ের নিকটেই রামকৃষ্ণ আশ্রম। এই প্রতিষ্ঠানটির কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। খ্ৰীষ্টীয় মিশনের তরফ থেকে ওয়েলশ প্রেস্বিটেরিয়ান, রোমান ক্যাথলিক, চার্চ অব গড, ইউনিটেরিয়ান চার্চ প্রভৃতি পাদ্রীরা খাসিয়া জয়স্তিয়া পাহাড়ে শেলা মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী প্রায় এক শত বৎসর ধরে কার্য্য করছেন । এর ফলে এই পাহাড়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ অধিবাসী খৃষ্টান হয়ে গেছেন । খৃষ্টান হয়ে এদের চাকরি-বাকরিরও স্ববিধা হয়। কিন্তু সাধারণ খাসিয়া গৃহস্থ খৃষ্টান হয়ে যে-রকম বিলাসী হয়ে ওঠেন তাই দেখে খাসিয়াদের মধ্যে র্যার চিস্ত করতে শিখেছেন র্তারা এখন এর কুফল বুঝতে পেরেছেন। তারা যে সংবাদপত্র চালান তাতে এখন এই কথাই প্রচার করছেন যাতে বেশী লোক খৃষ্টান না হয়। যখন এই রকম অবস্থা তখন রামকৃষ্ণ মিশন ওখানে গিয়ে তাদের একটি শাখা খুলতে চাইলেন। চেরাপুঞ্জি যদিচ শিলঙের ডেপুটি কমিশনারের আয়ত্তাধীনে, তবুও জমির উপর সেখানে অধিকার তাদের রাজার । এই রাজার নাম চেরাপুঞ্জির সিম অর্থাৎ মোড়ল । এই সিমের রাজদরবার, মন্ত্রী প্রভৃতি রাজার সমস্ত উপকরণই আছে। সিম রামকৃষ্ণ মিশনকে জায়গা দিতে স্বীকৃত হলেন, কিন্তু এই সৰ্ত্তে যে, তারা সেখানে কোন প্রকার ধৰ্ম্মপ্রচার করতে পারবেন না—এমন কি ধৰ্ম্মের কোন উৎসব করাও তাদের পক্ষে নিষিদ্ধ। তারা খুব-জোর স্কুল ক’রে ছেলে পড়াতে