পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব তক g এদের আদৌ নেই। সামান্ত ধে যা দেয় তাইতেই খুশী। সৰ্ব্বদাই হাসিমুখ। নারাণ পাগু কয়েক মিনিট সময়ের মধ্যেই আমাদের জন্য চায়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন মনে আছে। এ-কথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, কামাখ্যা পৰ্ব্বতের পাণ্ডামহল এত গোড়া নয় যে, চায়ের উপর এদের অপক্ষপাত আছে। পাহাড়ের পাশ দিয়েই ব্ৰহ্মপুত্র বয়ে যাচ্চে। পাহাড়ের উপর থেকে দূরগামী ষ্টীমার চোখে পড়ে। আবার তার উন্টে দিকে আসাম-বেঙ্গল-রেলওয়ের দূরবিলপিত লৌহপথ। দূরে বনান্তরেখার কোলে এই জলপথ এবং স্থলপথ ক্রমশঃ মিশে গেছে । জাতীয় জীবনে ঠাকুরমার দান শ্ৰীঅজিতকুমার মুখোপাধ্যায় গায়ের এবং সঙ্গে সঙ্গে বাঙালীর জীবন-প্রবাহ বুঝতে হ’লে, আমাদের চলে খেতে হয় সেই দূর বনানীর সবুজ ছায়ায় যেখানে মুক্ত আকাশের উদার বিস্তৃতি এসে ধরা দিয়েছে দেশের ছড়ায়, গাথায়, নৃত্যে, আলপনায় আর রূপকথার স্বপ্নপুরীতে। কিন্তু আরও নিভৃত কোণে মাটির সন্ধ্যাপ্রদীপ জালিয়ে যে-ঠাকুমাটি উবুথুবু হয়ে বসে মালা জপচেন তাকে আমরা অনেক সময়েই উপেক্ষা করে চলে আসি। আমর। ভুলে যাই যে, জাতীয় জীবনে ঠাকুমার কি অমূল্য দান, শুধু যার জন্যে বাংলার গায়ে গায়ে এখনও সমস্ত রসকলা-প্রতিভা জাঁইয়ে আছে, যার ঝোলাখুলি ঝেড়ে আমাদের এই হীন প্রাণধারণের গ্লানি স্বন্দর হয়ে ಆಡೆ ! বাংলা দেশের গায়ে শিশু যখন জন্ম নেয়, তার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় এই ঠাকুমাটির । ঠাকুমার উলুধ্বনির মধ্যে শিশুকে ঘরে আনা হয়। সেখানে শিশুর জন্মের পূৰ্ব্বেই তিনি আটকলাই ভেঙ্গে রাখেন, এই আটকলইউৎসবে পাড়াপরশীর সঙ্গে তিনি শিশুর পরিচয় ক’রে দেন। এখন শিশু ধীরে ধীরে হামাগুড়ি দিতে শিখেছে, তার সামনে ঠাকুমার অবিশ্ৰান্ত চীৎকার হাত ঘুরোলে নাড়ু দেব, এমন নাড়ু কোথায় পাব ? এন্ধপ কিছুদিন করার পর দেখা যায়, শিশু আর হামাগুড়ি দিতে চায় না, সে হাত ঘুরোতে চেষ্টা করছে, অমনি ঠাকুম তার হাত ধরে বলেন, সন্দেশ দিলাম, রসগোল্লা দিলাম, চাইকা রাখলাম, কোন বিড়ালটা খাল রে ?—গোড় মাও গোড় মাও, কুতু কুতু কুতু। ঠাকুমার এখানে উদ্দেশ্য যাতে শিশু তাড়াতাড়ি হাট শিখতে পারে। শিশুকে নিয়ে আর ঠাকুমার ব্যস্ততার সীমা নেই। সন্ধ্যায় উঠানে আনাচে-কানাচে ঘুরে ঠাকুমা শিশুর কৌতুহল লক্ষ্য করে আওড়ান, আয় চান্দ আয়, চান্দের কপালে চান্দ টিপ দিয়ে যা । মাছ কুটুলে মুড়ে দেব, ধান ভালে কুড়ো দেব, কালে গরুর দুধ দেব, দুধ খাবার বাট দেব, চীনের কপালে চান্দ টিপ দিয়ে যা । ঠাকুমার ছড়া শুনে ও চাদ দেখে শিশু তন্ময় হয়ে পড়েছে, তার এখন ঘুমের দরকার, তার ঘুম আসবে বেতের দোলনায় নয়, ঘুমপাড়ানী মাসী পিসি ঘুমের বাড়ি এপে, খাট নাই পালঙ নাই খোকনের চোখে বস । ঠাকুমার বাড়িতে খাট পালঙ ইত্যাদি আসবাবপত্র নেই, অতএব ঠাকুমা তাকে খোকনের চোখের উপর বসতে বলছেন। খোকন এখন একটু বড় হয়েছে, সে কথা বলতে চায়, ঠাকুম তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন, নাটার মত চোখ করে, বাটার মত মুখ ক’রে খোকন আমার কথা বলে । এই ওঠ-পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু এখন একটু বড় হয়েছে। এখন তার একটি স্বাভাবিক ক্রীড়াপূহ দেখতে