পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দীপালি-জলে প্রদীপ ভাসান ঠাকুম সমাজের কড়া নিয়ম, বাধাবন্ধন সত্ত্বেও আপ্রাণ চেষ্ট৷ করেছেন এই গাথা ও ছড়ার মধ্য দিয়ে একটি স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া ও শিশুর মনে পরস্পরের প্রতি একটি স্বাভাবিক ভাব ফুটিয়ে তুলতে। সমাজে যখন ভালবাসার প্রকাশ্ব স্থান নেই, সদর দরজ যখন তার পক্ষে একেবারেই বন্ধ তথন সন্ধ্যাবেলার অন্ধকারে ঘরের দাওয়ায় বসে, মদনকুমার মধুমালাকে ভালবেসে বলে, কোথায় পাব কলসী কন্য। কোথায় পাব দড়ি তুমি হও গহীন গাঙ আমি ডুইবা মরি। এই ছড়া ও গাথার পিছনে বাংলার কত দৈনন্দিন জীবনের স্বখদু:পের চিত্র, কত শত কাহিনী আত্মগোপন ক’রে রয়েছে তার সংখ্যা নেই। এই সব সংগ্রহের আশায় গ্রামে গিয়ে যখন ঠাকুমার কাছে বসেছি তখন তাদের ভাটিয়াল স্বর শুনে মনে হ’ত যেন আবার সেই হারানো অতীতের কোলে ফিরে এসেছি,—আবার ছোট শিশু হয়ে নবজন্ম নিমেছি । ঠাকুম নাতিপুতিকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ধোপার মেয়ে কাঞ্চনমালার সঙ্গে গায়ের জমিদার-পুত্রের ঘটল ভালবাসা। পুকুরের ঘাটে জমিদার-পুত্র এলে পুষ্করিণীর চাইর ধারে রে ফুটল চাম্প ফুল, ছাইরা দেরে চেংরা বন্ধু বাইর বাল্ব চুল । কিন্তু জমিদার-পুত্র কাঞ্চনমালার প্রেমে পাগল, প্রহসনে ঠাকুরমার বুতা আখির পুতলী করি মুই বন্ধুরে রাখৰ । লোকে জানাজানি হৈলে পলকে ঢাকিব । বারে বারে বন্ধু শোরে যাওরে ভাড়াইয়া । বিরলে পাইলে বন্ধু না দিব ছাড়িয়া । পরের দিন রাত্রে আসবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাঞ্চনমালা ছাড়া পান । কিন্তু সত্য ভঙ্গ হইল রে কুমার পারলাম না জাসিত । মা ও বাপ জাইগ্যা আছে আদিবাম কেমনে ॥ এ সত্ত্বেও কাঞ্চনমালার চিত্ত এত উদভ্ৰাস্ত ষে নিজের সমস্ত সত্তা ভুলে গিয়ে ঘর কইলাম বাহির রে বন্ধু পর কইলাম আপন । অবলার কুলভয় হইল দূৰ্যমণ ॥” এখানে ঠাকুম তার নাতিপুতিকে ধাপ্পাবাজী দিয়ে ঠাণ্ড রাখতে চেষ্টা করছেন না, এই রুদ্ধ সমাজে ভালবাসায় অনেক বিপদ, মা-বাপ ত জেগে থাকবেই, প্রকৃতিও এর অন্তরায় হবে, তাই “জাসমানেতে কাল মেঘ ডাকে ঘন বন । হায় বন্ধু আজি ৰুঝি না হইল মিলন । বাপ-মা কাঞ্চনমালাকে কত রকমে বোঝাতে চেষ্টা করছেন, কিন্তু যা চিরন্তন সত্য, সেই কথারই জাভাল দিচ্ছেন ঠাকুমা যৈখন হ’ল ভারী রে বন্ধু ধৈবন হ’ল ভাল্পী । সবে খান ন চিডন ডোলেতে ভৰি আনি ॥