পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ساذة. " পূর্ণেন্দু বলিল, “যাতে ঘটক আমার পিছনে আর না লাগে, তারই ব্যবস্থা করছি।” মা অবিশ্বাসের হাসি হাসিয়া বলিলেন, “আহ৷ ” পূর্ণেদুর যতই তাড়া থাক, ব্ৰজনাথেরও তাহার চেয়ে কম কিছু ছিল না । জমিদার-বাড়ির মেয়ে, ঘটকবিদায়টা ভালই পাইত, পূর্ণেন্দুও তাহাকে খুশী করিয়া দিত। আজকালকার মন্দা বাজারে এমন কেস কটাই বা হাতে পাওয়া যায়? পত্রিপাত্রীর দল সেয়ান ও বেহায় হইয়া এমনিতেই বলে ঘটকদের জাতব্যবস মারিতে চলিয়াছে । পরদিন দুপুরেই সে পূর্ণেন্দুর রুমে গিয়া হাজির হইল। পূর্ণেন্দু তখন একটু বৃদ্ধ ইাপানী রোগীকে লইয়া মহাব্যস্ত। একটা চেয়ার দেখাইয়া দিয়া ব্ৰজনাথকে বলিল, “বোসে।” অনেক কষ্টে হাপানীর রোগী ত বিদায় হইল। তখন দরজাটা একটু ভেজাইয় দিম। পূর্ণেন্দু জিজ্ঞাসা করিল, “কিছু খবর আছে ?” ব্ৰজনাথ বলিল, “মশায়, ওরা অতি গোড় পরিবার । বলে, মেয়ে দেখাতে আপত্তি নেই, তবে পুরুষ মানুষের সামনে বার করব না।” পূর্ণেন্দু চটিয়া বলিল, “পুরুষ মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিতে হ’লে তার সামনে বার করতেই হবে।” ব্ৰজনাথ বলিল, “তা ত অবশুই । কিন্তু মেয়ে-দেখানোর জন্তে তারা না-কি কখনও পুরুষের সামনে বার করেন না। আপনার মাতাঠাকুরাণী গিয়ে দেখলে তার সানন্দে রাজী আছেন।” র্তাহারা যতই সানন্দে রাজী হন, পূর্ণেন্দুর একটুও আনন্দ হইল না। তাহার মা কি করিয়া চিনিবেন ? স্বন্দরী কন্য ত তাহার চাই না, চাই ঝুমুকে । তখনই তখনই কিছু ভাবিয়া ন পাইয় সে ঘটককে বলিল, “আচ্ছা যাও, ভেবে দেখি এখন। সন্ধ্যায় ও-বাড়ি একবার যেও ” ব্ৰজনাথ চলিয়া গেল । ব্ৰজনাথ সন্ধ্যায় আসিল বটে, কিন্তু ভাল খবর কিছু লইয়৷ আসিল না । মহিলাদের মেয়ে-দেখানোর মত কিছু বদলায় নি। পূর্ণেন্দু রীতিমত ভাবনায় পড়িয়া গেল। শেষে মায়েরই শরণ লইতে হুইবে না-কি ? কিন্তু তাহাকে এ সব রোম্যাটিক "প্রবাসী স্ট SOBO কাহিনী বলিতেই যে লজ্জ করে ? ছেলে ডাক্তার করিতে গিম৷ প্রেমে পড়িয়া গিয়াছে, এ-কথা কি মায়ের সামনে বলা চলে? সুবিধামত একটা বৌদিদি বা বোনও নাই যে একটু কাজ উদ্ধার করিয়া দিবে। মাকেই অবশেষে বাধ্য হইয়া বলিতে হইল । তিনি ত আকাশ হইতে পড়িলেন, বলিলেন, “হ্যা রে পেটে পেটে তোর এত ? আমি বলি ছেলে আমাদের একেবারে ভোলানাথ, কোনোদিকে মন নেই। আমি বাপু জমিদার-বাড়িটাড়ি যেতে পারব না । । গরিব বলে আমাদের কি মান-সন্ত্রম নেই ? মেয়ের বাপের এত জাক কেন, হ’লই বা জমিদার ?” পূর্ণেন্দু অপ্রস্তুতও হইল, চটিয়াও গেল। বলিল, “বেশ না যাও ন-যাবে, কিন্তু এর পর জন্মে আর আমার কাছে বিয়ের নাম উচ্চারণ করবে না।” মা কিছু বলিবার আগেই সে হন হন করিয়া চলিয়া গেল । বৌদিদি বা বোন নিতান্তই যখন নাই, তখন কোনো বন্ধুপত্নীকে দিয়া কাজ উদ্ধার করা যায় কি-না তাহাই সে ভাবিতে বসিল । নিজে মহিল| সাজিয়া যাইতে পারিলে সবচেয়ে ভাল হইত, কিন্তু ও সব কি আর বাস্তব জীবনে ঘটিয়৷ ওঠে ? নাটক-নভেলেই চলে। দুনিয়াটা অতি “রটন” জায়গা । সকালবেল পূর্ণেন্দুর মেজাজ অত্যস্ত খারাপ দেখা গেল । গুটিতিনেক পুরাতন রুগী আসিয়াছিল, তাহাদের ত খ্যাকাইয় খ্যাকাইয়৷ অস্থির করিয়া তুলিল । সমর প্রায়ই কনসালটেশন রুমে বসিয়া থাকিত, সে পূর্ণেন্দুর রকম দেখিয়া বলিল, “কি হে, বিক্রমাদিত্যের চেয়ারে বসেছ বলে মেজাজও সেই রকম হয়ে গেল না-কি ?” হঠাৎ টেলিফোনের ঘণ্টা বাজিম উঠিল, টি টিং টিং। পূর্ণেন্দু ব্যস্তভাবে টেলিফোন ধরিয়া বলিল, “হালে ?” যাক, বাচ গেছে। আবার ভবানীপুর হইতে 'কল আসিয়াছে। সেই “হার্ট ডিজিজের রোগিণী । পূর্ণেন্দু এক রকম একলাফেই বাহির হইয়া চলিয়া গেল । সমর ই করিয়া তাহার দিকে তাকাইমু রহিল। বেল নটী-দশটার সময়, বাড়িটা একটু খালি-থালি বোধ হইল । বৈঠকখানাগুলিতে বিশেষ কেহ নাই, এমন কি