পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীমুধীরকুমার চৌধুরী Σ δ মাথাটা তখনও অবধি কেমন ভার হইয়া আছে, কোনও ভাবনাই ভাল করিয়া গুছাইয়া ভাবিবার ক্ষমতা নাই, তবু অজমের মনে হইতে লাগিল, হয়ত আজ আবার নদকে উপলক্ষ্য করিয়া নিজেকে নিজে আঘাত করিয়া বেদনা পাইবার এই স্থযোগকে সে স্বষ্টি করিয়াছে। কে এই মহাশক্র একেবারে তাহার অস্তিত্বের মূলে আসন পাতিয়া বসিয়া এমন করিয়া তাহার তুচ্ছতম মুখেও বাদ সাধিতেছে। কতবার ভাবিছে, নিজের মধ্যে দ্বিধাবিভক্ত হইয়া ইহার সঙ্গে সে যুদ্ধ স্থর করিবে, কতবার যুদ্ধ করিয়াছেও, কিন্তু কোটি যে তাহার আসল ‘আমি বেশীক্ষণ তাহ ঠিক রাখিতে পারে নাই বলিয়া জয়-পরাজয়ে কোনও আগ্রহ শেষ অবধি তাহার অবশিষ্ট থাকে নাই। এমনই ভাবে চিরকাল চলিয়াছে। এমনই ভাবে চিরকাল চলিবেও। নিজেকে লইয়৷ এই সংশয়, নিজের সঙ্গে নিজের পক্ষপাতহীন এই সংগ্রাম কোনওদিন তাহার শেষ হইবার নহে। বস্তৃক্ষণ পথের উপরই অধোমুখে চুপ করিয়া দাড়াইয়া রছিল। তারপর নীরবে অধোমুখেই ঘরে গিয়া একটা বই খুলিয়া বসিল। নন্দও পশ্চাৎ পশ্চাৎ ঘরে আসিল, কিন্তু সাহস করিয়া কোনও কথা কহিতে পারিল না । বাহিরে বসম্ভের একটি অনিৰ্ব্বচনীয় প্রভাতের অসীমতা ভরা আয়োজন ম্ৰিয়মাণ পুষ্প-পল্লবের মত ব্যর্থতায় ঝরিয়া যাইতে লাগিল । इ%ां९ ७क-गभग्न बड़े हूंज्जिग्न cफनिम्न श्रछग्न कश्लि, “বেশ ত আমরা দুজনেই ? বেরুব ঠিক করে তারপর দিব্যি চুপচাপ বলে আছি। এসে, বেরিয়ে পড়া যাক ৷” .নন্দ কহিল, “আমার আজ একটুও বেড়াতে ইচ্ছে হচ্ছে না। আজকের দিনটা থাকু না অজয-দা । শরীরটাও তত ভাল নেই, গুয়ে থাকৃতেই মন চাইছে।" অজয় জেদ ধরিয়া কহিল, “তা কি হয় ? আজ তোমার সঙ্গে আগে থাকৃতে আমার কথা হয়ে আছে, তুমি এখন 'না' বললে চলে কখনো ?” নিজের ধরণে নন্দেরও জেদ কম নহে। আমৃত আমৃত করিয়া হাসিয়া কহিল, “আমি ত ঘরের মানুষ, আমার সঙ্গে আবার এত কথার আঁটার্তাটি কি ? উনি এসেছিলেন, রোজ ত ওঁর সঙ্গে আপনার দেখা হয় না ?...তাছাড়া কাল স্বভদ্রদার সঙ্গে দেখা হতে তিনি বলছিলেন,আজ বরানগরে র্তাদের পার্টি না কি একটা আছে—” অজয়ের হঠাৎ কি হইল, প্রাম গর্জিয়া উঠিয়া কহিল, “তা বেশ, ঘেও না। সেকথা আমাকে আগে বললেই ত হত। আজ কি থাবে-দাবেও না ঠিক করেছ ?” নন্দ এমন ভাবে চঞ্চল হইয়া উঠিয়া পড়িল, যেন এত বেলাতেও যে তাহদের খাওয়া হয় নাই সেজন্য সে একলাই কেবল দায়ী। বলিল, “আপনি স্নান সেরে আল্লন, তারপর আমি যাচ্ছি।” স্বানের পর দুইজনে, বাহির হইতে আহারাদি সারিয়া ফিরিয়া আসিয়া দেখিল, মুক্তি পাওয়ার পর নন্দ যথাস্থানে ফিরিয়াছে কি-না সংবাদ লইবার জন্যই সম্ভবতঃ পুলিশের একজন লোক অপেক্ষা করিয়া বসিয়া আছে। সেখানে আর মুহূৰ্ত্ত মাত্র বিলম্ব না করিয়া অজয় ছাতে চলিয়া আসিল এবং কাঠফাটা রোদ মাথায় করিয়৷ বহুক্ষণ সেখানে পায়চারী করিয়৷ বেড়াইল। বিশেষ . কিছুই যে ভাবিল তাহা নহে। বীণার বিষন্ন মুখ জীবনে এই প্রথম দেখিয়াছে, সেই স্মৃতি ঈশানের একখণ্ড কালো মেঘের মত ক্রমে তাহার চিত্তাকাশ আবৃত করিয়া ঘনাইয়া আসিতেছে। আর কোনও কথা ভাবিবার অবকাশ আব বিশেষ নাই। বেলা যখন প্রায় পড়িয়া আসিয়াছে, তখন নীচে আসিয়া দেখিল, নন্দ ঘুমাইতেছে। তাহাকে আর জাগাইল না। আজ একাকী শেষ একবার নিজের সঙ্গে মুখোমুখী করিবার ইচ্ছায় রৌদ্রপ্লাবিত সহরের পথে বাহির হইয়া পড়িল ।