পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

** ভারগ্রস্ত করিল না। বীণার সদ-চঞ্চল চিজবেগ, তাছার অকুরম্ভ বেগবান হাসির শ্রোত, তাহার চিরপ্রফুল্ল মুখত্ৰ কেমন অলক্ষিতে তাহার সম্বন্ধে সমস্ত দুশ্চিন্তাকে ছাপাইয়া বড় হইয়৷ উঠে। তাহার নিজের ষে কোনও দুর্তাবনা নাই, এই কারণেই তাহার সম্বন্ধেও কিছু ভাবিতে ইচ্ছা করে না। সে যেন ঠিক পুরাপুরি মানুষ নহে, সে যেন খানিকট আলোভরা, হাসিভরা চপল আনন্দ। কোনও হিসাব-নিকাশের বন্ধনে তাহাকে বাধা १ांश्च न] । * ইহা ছাড়া সদাহাস্যময় প্রফুল্লতার এই একটি মায়া আছে, যে-কোনও কারণে সেই হাসি স্নান হইয়া যাইতে দেখিলে অলক্ষিতেই অপরের মনে একটা অকারণ অস্বস্তি জাগিয়া উঠে । অপ্রাকৃতকে ভয় করিবার মানুষের যে আদিম প্রবৃত্তি এই অস্বস্তি সেই জাতীয় হইতে পারে, কিন্তু ইহাকে অস্বীকার করিবার উপায় নাই। আজ সকালে বীণা মান মুখে ফিরিয়া আসিয়াছে, সমস্ত দিন তাহার সেই মান মুখ অজয় এক মুহূৰ্ত্ত ভুলিতে পারে নাই। আজ তাহার জন্মদিন বলিয়াই যে সে আজ এত আগ্রহে অজয়কে চাহিতেছিল, ইহা বুঝিতে পারিয়া অজয়ের অনুশোচনা দ্বিগুণ বাড়িয়া গেল। জন্মদিনের এই উৎসবের আয়োজন না-জানি কতদিন ধরিমা কত আগ্রহে সে করিতেছিল, কল্পনার কত কমনীয় রঙে এই দিনটিকে সে গড়িতেছিল, আজ নিজেই উৎসবে যোগ দেয় নাই, ইহা হইতেই কত বড় আঘাত সে যে বীণাকে আজ করিয়াছে তাহ সে বুঝিতে পারিল। বীণার স্বনার মনটি হইতে সেই কুৎসিত আঘাতের শেষ স্থতিটিকেও প্রাণপণ চেষ্টায় মুছিয়া দিতে cन श्रांछ क्लङनकझ श्झेण । বেশী কিছু তাহার করিতে হইল না। মোটরগাড়ী বারান্দার নীচে দাড়াইতেই দেখা গেল, বীণা উপর হইতে ৰুকিয়া পড়িয়া আরোহীদের দেখিবার চেষ্টা করিতেছে। অজয়ের সঙ্গে চোখোচোর্থী হইতেই ঠোটচাপা একটি গৰ্ব্বিত হাসিকে সে কিছুমাত্র লুকাইবার চেষ্টা করিল না। সেই হুপিটিকে অজয়ের ভাল লাগিল । অজয়দের সঙ্গে সঙ্গে সেও তাড়াতাড়ি ড্রয়িংক্রমে নামিয়া জাগিল। মুলত তাহাকে আপাদমস্তক দেখিয়া লইয়া বলিলেন, “বলেত পঠালি অস্থখ করেছে এদিকে ত বাবার জন্তে ঙ্গে জাছিল।” । - - SOBO শাড়ীর জাচলটাকে খুরাইয় পরিয়া বীণা হাসির উত্তর দিল, “বা রে, নিজের জন্মদিনে একটু সাজবও না বুঝি " স্থলত বলিলেন, “থাক্ থাক, ঢের স্বাক্ষামী হয়েছে, এইবার চল ” কিন্তু বীণা একটা আসন টানিয়া লইয়া বসিল। আজ জন্মদিনে যে উৎসবকে সে এতদিন ধরিয়া প্রাণপণে কামনা করিয়াছে, সেই উৎসবের ক্ষেত্র এক মুহূর্তে এইখানেই তাহার রচিত হইয়া গিয়াছে। ইহার বেশী আর কোনও উৎসরের সেদিন সত্যই তাহার প্রয়োজন ছিল না। বীণার দেখাদেখি অজয়ও তাহার নিকটের আর একটা আসন অধিকার করিয়া বসিল দেখিয়া স্বলতা আর কিছুই বলিলেন না। একবার কৌতুক ভর দৃষ্টিতে তাহদের দেখিয়া লইয়া, “মামীমার সঙ্গে দেখাটা করে আসছি” বলিয়া পা টিপিয়া উপরে উঠিয়া গেলেন। তাহার এই ছল করিয়া সরিয়া যাওয়ার ভিতরকার অর্থটি অজয়ের দৃষ্টি এড়াইল না। কিন্তু বীণার কাছে আসিয়া তাহার চিত্ত স্বতঃই কেমন সহজ হইয়া যায়, স্বলতার ব্যবহারে বিত্রত বোধ করাটা তাহার তাই অত্যন্ত হাস্যকর বলিয়া বোধ হইল। বীণার দিকে একটু ঝুঁকিয়া বসিয়া বলিল, “আমি ক্ষমা চাইতে এসেছি।” বীণা বলিল, “এমন বেহিসাবী কথা কেন বলেন ? ক্ষম ত আগেই একবার চেয়ে রেখেছেন, এবং এসেছেন যে সেটা চোখেই এখন দেখতে পাচ্ছি।” একটু পরে গলার স্বর একটু নামাইয়া আবার বলিল, “সেই ত এলেন, তখন এলেই ত পারতেন।” অজস্বও মৃদু স্বরেই বলিল, “সে অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করব বলেই এসেছি।” অন্তরের সহজ অনুভূতির কথাই বলিল, কিন্তু কোথা হইতে কি স্বর আসিয়া তাহার কণ্ঠে লাগিল, লক্ষ্য করিল না যে বীণার কর্ণমূল কি এক অস্পষ্ট স্বখাবেগের ইঙ্গিতে আতপ্ত হইয়া উঠিল। আহার সেই কথা-কটির স্বর বীণার অন্তরের কোন স্বপ্ত তারে গিয়া আঘাত করিল, কি দুৰ্দ্ধমনীয় চাঞ্চলে তাহার বুক ফুরু দুরু করিয়া কঁাপিল। ইহার পর আরও কিছুক্ষণ স্থজনে পাশাপাশি বসিয়া মৃন্থ গুঞ্জনে তাহার কথা কহিল। অতি তুচ্ছ বিষয়ে তুচ্ছ কথাগুলি জাজ কোন মন্ত্রে অপরূপ হইয়া দেখা দিল। পরস্পর পরমাত্মীয় বোধে তাহারা নির্মিরোধে সেই মুহূৰ্ত্ত-কাটির কাছে আত্ম