পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহায়ণ rাষ্ট্ৰী ty) বইকি ; তোমরা স্থপুরুষ তো আছই ; তা গোরারে, এঁরা কি বলচেন—ডাকাতরা নাকি বলচে তারা বরযাত্রী, কি অনাহুষ্টি !...চিনে দাও তো দাদা।” রাজেন বলিল—“এরা বলচে-বরযাত্রর ডাকাত ” স্বায়রত্ন মহাশয় একটু ধাধায় পড়িয়া ভ্র কুঞ্চিত করিয়৷ বলিলেন—“ঠিক অর্থ গ্রহণ হচ্চে না,—ডাকাতর বরযাত্রী, না বরযাত্রীর ডাকাত ?” দলের একজন ডান হাতটা উন্টাইয়া পাণ্টাইয়া বলিল— “সামলাও দ্যায়ের ধাক্কা, এখন তৈলাধার পাত্র, ন পাত্রাধার তৈল ? --ডাকাতরা বরযাত্রী, ন বরযাত্রীর ডাকাত, উ ?” গণশ মরিয়া হইয় হাতজোড় করিয়া বলিল—“ম-স্মশাই, আমি পারলে সে-সপোজ করেই বলতাম, কি-কিন্তু সত্যিই তোংলা ; দয়া করে একবার বর তি-ভিলুর কাছে নিম্নে চলুন ; তারপর পুঙ্খ লিসে দিয়ে দেবেন না হয়...উ, শী-শ-শীতে কালিয়ে গেলাম।” বলা বাহুল্য, কথাবার্তার ভঙ্গিতে অনেকের সন্দেহটা মিটিয়াই আসিতেছিল ; বিশেষ করিয়া বয়স্থদের মধ্যে । তাহাদের মধ্যেই একজন বলিলেন--"তাই নিয়ে চল না-হয়, রঘুকে এগিয়ে দাও।” কৰ্ত্ত বলিলেন ---“জগু, বাড়ির মেয়েদের তাহলে বলগে ।” দলটি তিনজনকে ঘিরিয়া উঠানে আসিয়া দাড়াইল । ঠানদিদি আর মেয়ের বরের চারিদিকে বুহি স্বষ্টি করিয়া বাহির হইতে পাওয়া খবরের টুকরাটাকরিগুলা লইয় নিজের নিজের কল্পনাশক্তির পরিচর্চা করিতেছিল। কর্তা চেচাইয়া বলিলেন—“একবার বরকে বাইরে পাঠিয়ে দাও।” “ওম, কি অমুঙ্গলে কথা-কি হবে । কোন মতেই না!" বলিয়া সবাই বৃহটা আরও স্বদ্যু করিয়া ঘেরিয়া ফেলিল । বরকর্ভাকে নিজেই ভিতরে যাইতে হইল । এমন সময় একটা কাও হইল। ঘোৎনা পুকুরের দিকটা খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুব সস্তপণে পেপেগাছ হইতে নামিয়া চুপিসারে সদরবাড়িতে দলটির পিছনে আসিয়া সাড়াইয়াছিল। সেখানকার কথাবাৰ্ত্তায় আত্মপ্রকাশের উৎসাহ না পাইয়া খুব সাবধানে বাড়ির মধ্যেও আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিল। ত্রিলোচনের দ্বারা সনাক্ত হুইবার স্নযোগটা হারানো কোনমতেই সমীচীন হইবে না ভাবিয়— “কি হয়েছে রী গণশা ? এত গোলমাল কিসের ? বলিতে বলিতে ভিড় ঠেলিয়া আসিয়া সামনে দাড়াইল, এবং সঙ্গে সঙ্গে “ষ্ঠা ! তোদের এ কি দশা!”—বলিয়া হাত চোখ কাধের ভঙ্গি সহকারে একখানি নিখুত অভিনয় করিল। তিনজনেই বলিয়া উঠিল—“র্থোৎনা যে ! কোথায় ছিলি ? দেখ না, এ ভদ্রলোকেরা কোনমতেই...” ঘোখন গাছের উপর হইতে পুকুরপাড়ের সব কথাই শুনিয়াছিল; বলিল—“তোরা যখন আমার বারণ না শুনে পুকুরের দিকে গান শুনতে গেলি...” মুরুবিয়ানায় গোরাচাদের গা জলিয়া উঠিল ; গণণা বুঝিতে পারিয়া তাহাকে টিপিয়া থামাইল । "...আমি ভাবলাম-ছুত্তোর, একটু বেড়িয়ে আসা যাক । খানিকটা দূরে গেচি-এদিকে একটা সোরগোল! তাড়াতাড়ি ফিরলাম ; একে অজানা জায়গা, তায় রাত্তির,--থানিকটা এদিক, খানিকট। ওদিক ক’রে শেষে পথ ভুলে একটা পেঁপে গাছে উঠে পড়লাম।” —সবাই এই শেষের বক্তা সেই ফাজিল ছোকরাটির পানে চাহিল। তাহার ঠিক মক্ষম জায়গাটিতে আসিয়া দাড়াইবার কেমন একটা গুঢ় শক্তি আছে,—ইতিমধ্যে কখন ঘোৎনার পাশটিতে আসিয়া জুটিয়া গিয়াছে। সে নিজের টিপ্পনীর পর আর কিছু না বলিয়া ঘোখনার চারিদিকের লোকদের সরাইয়া দিয়া ঘোৎনাকে একটু সামনে আগাইয়া দিল । সকলেই দেখিল-তাহার পিছনে, কোমরে জড়ান র্যাপারের সঙ্গে বাধা দুইটা ডাটামুদ্ধ পেঁপের পাতা—একটা শুকনো, একটা পাকা—মাঝারি সাইজের । গাছে থাকিতে কখন আটকাইয়া কাপড়ের সঙ্গে বাধা পড়িয়া গিয়াছে ঘোৎনার সাড় হয় নাই । “দোসর ধাপ্পাবাজ !...লীগাও চাটি-”—একটা গোলমাল উঠিতেছিল, এমন সময় শ্বশুরের সঙ্গে ত্রিলোচন আসিয়া রকে দাড়াইল — “সত্যিই যে তোরাই দেখচি ! আমি বলি বুঝি ডাকাতই পড়ল। তা জলে ঝাপ দেওয়ার কুবুদ্ধি হ’ল কেন ? আর কে. গুপ্ত কোথায় ?...গোরা, তোর দাড়িতে একটা কি ঝুলচে ?—মুখ তোল তো...” দাড়িতে বোধ হয় একটা পানার শিকড় ঝুলিতেছিল, কিন্তু