পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহায়ণ $S) কোন প্রকার উচ্চ শিক্ষাৰেই ব্যবসায়-বাণিজ্যের অন্তরায় বলিয়া মনে করিতেছেন । ইল ঠিক যে মাটিক পাস করিলে মেধা থাকু আর নাই থাক প্রত্যেক ছেলেকে কলেজে পড়িতেই হইবে এরূপ অদ্ভূত যুক্তি কোন দেশেই শোনা যায় না। অন্তান্ত দেশে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষালাভ করিয়াই অধিকাংশ যুবক কোন-নাকোন শিল্প অথবা বাণিজ্যে কাৰ্য্য আরম্ভ করে । যাহার মেধাবী অথবা ধনীর ছেলে তাহারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। সরকারী চাকুরি, অভাবে ওকালতী অথবা ডাক্তারী এইগুলিই আমাদের জীবনের লক্ষ্য হওয়াতে অধিকাংশ যুবকই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি লাভ করিতে ব্যস্ত হয় । বঙ্গদেশের বর্তমান অবস্থায় জীবিকানিৰ্ব্বাহের অন্য কোন উপায় না থাকায় অনেকে একপ্রকার বাধ্য হইয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। উপাধি লাভ করিয়া পরে কি করিবে তাহারা তাহ জানে না। তাহদের শিক্ষদীক্ষ তাহাদিগকে জীবনসংগ্রামে জয়ী হইবার কলকৌশল শিখায় নাই, তাই তাহারা স্রোতের বেগে ভাসমান তুণের নাম ইতস্তত: ঘুরিয়৷ বেড়ায়। যখন আর কিছু হইল না তখন তাহারা ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে ধাবিত হয় । বাংলায় আর একটি ভাব দেখা যায় যেন ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কোন প্রকার বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন নাই। যাহাদের ওকালতীতে পসার হইল না অথবা অন্য কোন কৰ্ম্ম মিলিল না তাহারাই এক একটি ‘বিজনেস বা ব্যবসা ফাদিয়া বসিলেন এবং এস্থলে সচরাচর যাহা হয় তাহাই হইল, অর্থাৎ অধিকাংশ স্থলেই ক্ষতিগ্রস্ত চইল। জীবনে কোন কাজই সাধনা ভিন্ন সিদ্ধ হয় না। ব্যবসায়ের জন্য৪ সাধনার প্রয়োজন। অনেকে নিজেদের নিফলতার কারণ দেখাইতে গিয়া বলিয়া থাকেন যে, তাহারা সাধু বলিয়াই সাফল্য লাভ করিতে পারেন নাই। এরূপ যুক্তি আমাদের নিষ্ফলতার ব্যথাকে খানিকট সহনীয় করিডে পারে বটে, কিন্তু বাস্তবিক সাধুতা কখনও নিষ্ফলতার কারণ হইতে পারে না। সাধুতার সঙ্গে সঙ্গে চাই কৰ্ম্মনিষ্ঠ, একাগ্রত, শ্রমপরায়ণতা এবং সৎ বুদ্ধি । আজ যে অবাঙালী বাঙালীর অন্ন মারিতেছে বলিয়া চারিদিকে আন্দোলন চলিতেছে, ইহার জন্য দায়ী কে ? আমরা नग्न कि ? भाजिरङ्गे श्हेंब, अछ इझेद, छॉखगंग्न इईद, फेकौण হইব, এই মন্ত্রই কি জন্মাবধি আমাদিগকে শিখান হয় নাই ? ব্যবসা-বাণিজ্য অশিক্ষিত, জলাধু ছোটলোকের কাজ, শিক্ষিত বাঙালী স্থৰ কি এই প্রকার হেয় কাজ করিতে পারে ? আমাদের শিক্ষাপ্রণালী যে-মনোবৃত্তি স্বষ্টি করিয়াছে সেই মনোবৃত্তি লইয়া আমরা যদি জীবনসংগ্রামে পশ্চাৎপদ না হই তাহা হইলে হুইবে কাহারা ? প্রতি দেশেই অধিকাংশ লোক জীবিকানিৰ্ব্বাহ করে শিল্পবাণিজ্য দ্বারা। যখন আমাদের হযোগ ছিল তখন আমরা অবহেলা করিয়াছি, তাই আজ বঙ্গদেশে মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকের বেকার-সমস্যা এত কঠিন হইয়া দাড়াইয়াছে। শস্ত-শ্রামলা বঙ্গদেশে সম্পদের অভাব নাই, কিন্তু সে সম্পদ ভোগ করে অপরে। বাংলা ভিন্ন অন্যত্র প্রায় কোথাও অধিক পাট জন্মায় না, অথচ বাঙালীর চটের কল কয়টি আছে ? মফস্বলে অধিকাংশ পাটই ইউরোপীয়ের খরিদ এবং 'বেল" ( bale ) করেন, আমাদের অংশ ইহাতে কতটুকু ? বাংলা এবং আসামে ষে চা বাগান আছে সেগুলির অধিকাংশ মালিক কাহারা ? বিহারে এবং বঙ্গদেশে যে কয়লার খনি আছে আমাদের স্বত্ব তাহাতে কতটুকু? বাঙালী নিজের সম্পদ হেলায় খন্তের হাতে তুলিয়া দিয়াছে, তাই আজ আক্ষেপে হাহাকার করে। কিন্তু ঈর্ষা করিয়া কোন লাভ নাই, যাহা হাতছাড়া হইয় গিয়াছে তাহ ফিরাইয়া পাইবার উপায় নাই। এখন আমাদের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়া কাৰ্য্যক্ষেত্রে অগ্রসর হইতে হইবে। এখনও অনেক কিছু করিবার আছে যাহার স্ব প্রয়োগ করিতে পারিলে বাংলার ঐ ফিরিয়া আসিবে। নিষ্ফলতার ছাপ আমাদের সর্বাঙ্গে এরূপ ভাবে লাগিয়া গিয়াছে যে, আমরা আত্মবিশ্বাস হারা মাছি, তাই বাঙালী অবাঙালীকে বিশ্বাস করে এবং আপনাদের যেটুকু পুঁজি আছে তাহা অপরের হাতে তুলিয়া দিয়া নিশ্চিন্ত মনে আসার আমোদে দিন কাটায়। বাঙালীর টাকা থাকিলে কোম্পানীর কাগজ কেনে, বাড়ি কেনে, জমিদারী কেনে, কিংবা বিদেশী ব্যাঙ্কে আমানত রাখে, কেন-ন বাঙালীকে কি বিশ্বাস করা যায় ? দেখ না, বেঙ্গল ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের কি অবস্থা হইল। এরূপ যাহাদের মনোবৃত্তি, ব্যবসায়ক্ষেত্রে তাহারা কি অগ্রসর হইতে পারে? অনেক ব্যবসায়ে দেখা যায় না কি ষে উপযুক্ত ।