পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$$. . অধিকার করিতে ইচ্ছা করেন র্তাহাদিগকে উপরোক্ত প্রত্যেকটির খবর রাখিতে হইবে । সামান্ত গ্রাম্য ব্যবসায় অধিক শিক্ষা প্রাপ্ত ন হইলেও করা যাইতে পারে, কিন্তু এস্থলেও আমরা বুঝি বা ন-বুঝি তথাপি বহির্জগতের ছাপ গ্রামে পড়িবেই পড়িবে। তাই শিক্ষাকে দূর করিয়া ব্যবসায়ে সাফল্যের যে দুঃস্বপ্ন আমরা দেখিতেছি তাহা ভবিষ্যতে স্বপ্নেরই মত মিলাইয়া যাইবে। যতই আমরা বহির্জগতের সহিত ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধে জড়িত হইতেছি ততই জীবনের প্রত্যেক বিষয়টি আরও জটিল হইতেছে। এগুলি বুঝিবার জন্য শিক্ষার প্রয়োজন । ভ্রান্ত মত পোষণ করিলে কিংবা বিপথে চলিলে আমরা গন্তব্য স্থানে পৌছিতে পারিব না। ফাকি দিয়া স্বৰ্গলাভ করার ইচ্ছা আমাদের একটি মজ্জাগত দোষ । বিদেশীয়দের দোষক্ৰটি দেখাইলেই আমাদের দোযক্রটির লাঘব হইবে না । অন্যকে ছোট করিলেই আমরা বড় হইব না। আমাদিগকে বুঝিতে হুইবে—কি করিয়া তাহারা বড় হইল। তাহদের গুণ এবং আমাদের দোষ খতাইয়া দেখিতে হুইবে । তাহাদের সদগুণ গ্রহণ করিয়া ঘে-পস্থায় তাহার উন্নতিলাভ করিয়াছে সেই পন্থা আমাদিগকে অবলম্বন করিতে হুইবে । তৎসঙ্গে আমাদের যেটুকু বৈশিষ্ট্য আছে তাহাও রক্ষা করিতে হইবে। পাশ্চাত্য অর্থনৈতিক মত—অভাব-স্বাক্টই সভ্যতার মূল, ইহা আমাদের সভ্যতার বিরোধী। আমাদের সভ্যতা বলে ভোগে সুখ নাই। অতএব আমাদের বৈশিষ্ট্য বজায় স্বাধিয়া সঙ্গে সঙ্গে পাশ্চাত্য উৎকর্ষ,—যাহা তাহাদিগকে জীবনসংগ্রামে বলীয়ান করিয়াছে—তাহা যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু গ্রহণ করিতে হইবে। অধুনা জাপানের যে ক্রত উন্নতি হইয়াছে তাহার মূল অনুসন্ধান করিলে দেখিতে পাইব ষে তাহারা নিজেদের বৈশিষ্ট্য বজায় রাথিয়া পাশ্চাত্য শিল্পবিজ্ঞান আয়ত্ত করিয়া পাশ্চাত্যদের সহিত অনায়াসে প্রতিযোগিতা করিতে পারিতেছে। জাপান শুধু অমুকরণ করিয়া বড় হয় নাই। দৃঢ় অধ্যবসায়ের সহিত নূতন মৃত্তন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আবিষ্কার করিয়া শিল্পের অপূৰ্ব্ব উন্নতি করিয়াছে। জাপান যেমন গ্রহণ করিয়াছে তেমনই দানও করিয়াছে, তাই তাহাকে কলকজার জন্ত পরমুখাপেক্ষী হইতে হয় না। জামরা চাই বিদেশ হইতে কলকজা জার্মানী করিয়া প্রবাসী ; bKOBO সেগুলি বিশ-পচিশ কিংবা ততোধিক বৎসরচালাইয়া বিদেশীয়দের" সহিত প্রতিযোগিতা করিতে। যদি না পারি তাহ হইলে অমনি শুদ্ধবৃদ্ধি করিবার জন্য প্রবল আন্দোলন আরম্ভ করি । ইতিমধ্যে বিদেশে নূতন নূতন আবিষ্কারে এগুলির কার্ধ্যকারিতা (efficiency) কমিয়া আমাদের প্রস্তুত মান্ধের মূল্য বিদেশের তুলনায় বাড়িয়া যায়। শুধু শুদ্ধ বাড়াইয়া ইহার প্রতিকার হইতে পারে না। শুষ্ক মালের উপর চড়ান যায়, কিন্তু মগজের উপরে যায় না। আমরা কূপে আবদ্ধ হইয়৷ রহিব বলিয়া অপরকে কি সেইরূপ থাকিতে বাধ্য করিতে পারি ? আবেগের উচ্ছ্বাস আমাদের আছে, পরনিন্দায় আমরা পশ্চাৎপদ নহি, কিন্তু ক্ষণিক আবেগ অথবা পরনিন্দ কোন জাতিকে উন্নত করিতে পারে না। বাঙালীর দোষ অনেক আছে, আমরা অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করিয়া আবেগের বশে অনেক কিছু করিম ফেলি। স্বদেশী আন্দোলনের যুগ হইতে কত-না শিল্প বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, সেগুলির অধিকাংশ আজ কোথায়? অর্থাভাব এবং অনুপযুক্ত লোকের হাতে পড়িয়া সেগুলি কি ধ্বংস হয় নাই ? সেগুলি নষ্ট হইয়াছে বলিয়া ভবিষ্যতে আর আমরা কিছু করিব না, এরূপ বলাও কি কাপুরুষতার লক্ষণ নহে? অর্থ অপেক্ষ আমার মনে হয় উপযুক্ত পরিচালকের অভাবেই শিল্প-বাণিজ্যের বেশী ক্ষতি হয়। অন্যান্ত ক্ষেত্রে দেথা যাইতেছে যে বাঙালী উচ্চ স্থান অধিকার করিয়াছে, তবে শিল্প-বাণিজ্যের বেলায় কেন পারিকে না ? ইহার একটি কারণ ইহা নম্ন কি যে আমাদের কৃতি সন্তানগণ শিল্প-বাণিজ্যে বিমুখ ? ধীরে ধীরে বাংলার আবহাওয়া বদলাইতেছে। সাম্প্রদায়িক ভাগ-বাটোয়ারার ফলে বাঙালী হিন্দু লোভনীয় সরকারী চাকুরি ভবিষ্যতে বিশেষ পাইবে না। ইহাতে অমঙ্গল অপেক্ষ মঙ্গলই বেশী হইবে ; কেন-না তাহা হইলে আমরা জীবিকঅর্জনের অন্ত পন্থা খুজিতে বাধ্য হইব। প্রত্যেক সভ্য দেশের অধিকাংশ লোকই কৃষি, শিল্প এবং বাণিজ্য দ্বারা প্রতিপালিত হয়। এদেশে কেহ কেহ বলিতেছেন যে ভদ্র যুবকগণ লাঙ্গল ধরিয়া চাষ আরম্ভ করুক তাহা হইলেই অল্প-সমস্ত মিটিয়া যাইবে। ভারতবর্ষের প্রত্যেক সেলাসে দেখা যাইতেছে যে কৃষি দ্বার প্রতিপালিত লোকের