পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-్సఆ কোন গোড়ামি নাই। আমার বক্তব্যের বিষয়, আমার মুসলমান ভাইদের দ্বারা শিক্ষার নব আবিষ্কৃত পন্থা। হিন্দু এবং মুসলমান আমরা এই দুই জাতি এই দেশে বাস করি। একই খাদ্য আমরা আহার করি, একই ভাষায় আমরা কথা বলি । প্রায় সকল বিষয়েই আমরা ও র্তাহারা এক, কিন্তু আমাদের শিক্ষা দাড়াইয়াছে দুই রকম এবং ইহা আমাদের মুসলমান ভাইদের চেষ্টায় তাহারাই শিক্ষার উদার আদর্শ হইতে আমাদের অন্ত পথে চালিত করেন। র্তাহার) মনে করেন, অন্য জাতির যাহা আদর্শ আমাদের তাহা পরিত্যজ্য । তাহারা ভাবিয়া দেখেন না যে, তাহাদের আদর্শের ভিতরে কতখানি শিক্ষণীয় বিষয় আছে। শিক্ষার প্রকৃত উদার ধারা হইতে র্তাহারা সরিয়া পড়েন, মাঝখান হইতে শিক্ষা দেন যাহাতে হিংসাম্বেষ ও রেষারেষির ভাব বৃদ্ধি পায়। মানবের মনের ভাব ব্যক্ত করিতে ভাষার প্রয়োজন । আমরা হিন্দুমুসলমান উভয়েই বাঙালী—বাংলা আমাদের মাতৃভাষা । কিন্তু আমাদের মুসলমান ভাইদের জন্য আমরা বাংলা ভাষা হিন্দু ভাইদের মত ভাল জানি না। কারণ, হিন্দু ভাইরা বাংলাই শিখে, কিন্তু আমরা শিখি বাংলা, উর্দু, আরবী, পারসী মিশ্রিত একটি খিচুড়ী। আমাদের ছেলেপিলেদের পাঠ্যপুস্তক লিখিত হয় অন্ত কায়দায়, অথচ হিন্দুমুসলমান উভয়েই আমরা বাঙালী—বাংলা আমাদের মাতৃভাষা । হিন্দু ভাইদের ছেলেপিলেরা যখন আকাশের প্রতিশব্দ গগন পড়ে তখন আমাদের ছেলেপিলের আকাশের প্রতিশব্দ পড়ে ‘আসমান’। অথচ এই আকাশের প্রতিশব "আসমানে তাহার কোন কাজ হুইবে না। পরবর্তী জীবনে যখন সে হিন্দু ভাইদের ছেলেপিলেদের সঙ্গে স্কুলে পড়িবে তখন তাহার এই ‘আসমানে কোন ফল হুইবে না। এইরূপে সে পিছনে পড়িয় যাইবে। আমার একটি আট বৎসরের মেয়ে আছে। স্থলে তাহাকে ভত্তি করিয়া দিয়াছি। একদিন বাসায় সে “চাণক্যশ্লোক” নামক পুস্তক হইতে কতকগুলি শ্লোক মুখস্থ করিতেছিল। পাশের বাড়ির গৃহকত্রী তাহাকে শ্লোক মুখস্থ করিতে শুনিয়া জাসিয়াই অমনি তাহার হাত হইতে বইখানি কাড়িয়া হিন্দুদের শাস্ত্র পড়াইতেছ, আক্ষণের সঙ্গে বিবাহ দিবে নাকি ? SO80 মুসলমানের মেয়ে আবার চাণক্যশ্লোক পড়ে ? এই বলিয়া তিনি বইখানি ছিড়িয়া দুই টুকরা করিয়া ফেলিলেন। এই ত আমাদের শিক্ষার অবস্থা। চাণক্য ঋষির অমৃততুল্য উপদেশ পড়িলে তাহাদের ধর্মের অবমাননা হয়। অনেকে হয়ত বলিবেন, শিক্ষার ভিতর গোড়ামির কারণ আমরা অশিক্ষিত। কিন্তু প্রকৃতপ্রস্তাবে তাহা নয়। অশিক্ষিত মূখদের কথা বাদ দিই—তাহারা ত এইরূপ গোড়ামির অনুকরণ করিবেই। কিন্তু আমাদের ভিতর বর্তমান উচ্চশিক্ষিত ‘এম-এ "বি-এ ডি. লিট’ সাহেবরাও যে শিক্ষার উদার সামানীতির অবমাননা করিতেছেন। আমাদের মাননীয় ডক্টর শহীদুল্লাহ, ডি. লিট সাহেব শুধু মুসলমান বালকবালিকার জন্য অনেক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করিয়াছেন এবং সেগুলি পড়ানও হয় । তাহার ঐ পুস্তকগুলির ভিতর উর্দু আরবী এবং পারসী শব্দই বেশী ব্যবহৃত হইয়াছে, অথচ যাহা বাঙালীর ছেলের কোন দরকারেই লাগিবে না । সুতরাং এইরূপ শিক্ষার কোন ফলই হয় না-- কেবলমাত্র কোমলমতি বালকবালিকাদের মস্তিষ্ক পীড়িত হয় । আমরা মুসলমান কিন্তু বাঙালী-বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। স্বতরাং বাংলা ভাষা আমাদের হিন্দু ভাইদের মতই শিথিতে হুইবে । এই বিষয়ে তাহাদিগের অনুকরণ না করিলে আমাদের শিক্ষা অসম্পূর্ণ থাকিবে। দ্বিতীয়তঃ, মুসলমান ছাত্রদের জন্য অন্য ধরণের বিদ্যালয়— মাদ্রাসার কোন দরকার নাই। হিন্দু এবং মুসলমান আমাদের এই দুই জাতি জন্ম হইতে মৃত্যু পৰ্য্যন্ত পাশাপাশি কাটাইতে হইবে। আমার ক্ষুদ্র মতানুসারে এই মাত্রাঙ্কপ্রণালী উঠাইয়া দিয়া আমাদের ছেলেপিলেদের হিন্দু ভাইদের ' ছেলেপিলেদের সহিত একসঙ্গে, এক ধরণে এক শিক্ষা দিতে হইবে। আর একটি জিনিষ আমাদের ছেলেপিলেদের শিক্ষার অন্তরায় হইয়া দাড়ায় । সেইটি হইতেছে গভৰ্ণমেণ্টের Tornia error era orato ral (special scholarships for Muhammadan students) otos food sition ছেলেপিলেদের অসন্তুষ্ট করিয়া মুসলমান ছাত্রদের মাথা খাওয়া হয়। হিন্দু ও মুসলমান উভয়েরই ছেলে প্রতিযোগিতা করুক-ষে বেশী শক্তিশালী সে-ই বৃত্তি পাইৰে। এই বৃত্তিগুলি