পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*. জঙ্কি" # - 更 • * * a'ee দাদা আরও বলিল, “জেলখানায় রাজনৈতিক কয়েদীদে খাবার ও শোবার আলাদা ব্যবস্থা, বিশেষ কোন কষ্ট নাই ।” এই কথা গুনিয়া আমি হাফ ছাড়িয়া বাচিলাম । কিশোরের দাদা মেডিকেল কলেজে গিয়া জানিয়াছেন, কিশোর জেলখানা হইতে বাহির হইলে তাহাকে আর কলেজে পড়িতে দিবে না, কর্তৃপক্ষ আপত্তি করিয়াছেন । এই জন্ত তিনি অত্যস্ত দমিয়া গিয়াছেন । কিশোরের ছাত্রজীবন যদি এইরূপে মাটি হইয়া যায়, তবে বড়ই আক্ষেপের বিষয় হইবে। এখন এ-বিষয়ে কি কৰ্ত্তব্য তিনি তাহার পরামর্শ চান । কিন্তু অনেক ছাত্র ত নন-কো-অপারেশন করিয়া স্কুলকলেজে পড়া আপন ইচ্ছায় ছাড়িয়া দিয়াছে । ইহাতে এত আক্ষেপের কারণ কি ? দাদা কিন্তু বারংবার বলিতেছে, “তোর জন্তই কিশোরের ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট হইল” ইত্যাদি। ' দাদার এই বাক্যবাণ আমার সহ হয় না। আমাকে এরূপে জালাইলে আমি আর এ বাড়ীতে থাকিতে পারিব না। আমাকে অন্য পথ খুজিতে হইবে। পরের দিন আমি বেথুন কলেজে গেলে প্রিনসিপ্যাল আমাকে তাহার বসিবার ঘরে ডাকাইলেন । আমি তাহার সম্মুখে হাজির হইলে তিনি বলিলেন, “আমি জানতে পেরেছি তুমি, অরুনা সেন, লতিকা রায়, স্থলেখা চাটুজ্যে আর চিত্র ঘোষ—এই কয়জনে বাজারে পিকেটিং করতে গিয়েছিলে— তাই নিয়ে একটা হাঙ্গামা হয়েছে, ও কিশোর বাড়ুজ্যে নামে একটি যুবক ফৌজদারী কোর্টে সাজা পেয়েছে। এ-সব কথা সত্য কিনা ?” আমি বলিলাম, “ই, সত্য ।” তিনি বলিলেন, “এই রকম বাজারে পিকেটিং করা তোমাদের পক্ষে কতদূর অন্যায় ও আইনবিরুদ্ধ তা তুমি অবগুই জান । এ-সম্বন্ধে গবৰ্ণমেণ্টের সাকুলারও আছে।” আমি বলিলাম, “আমরা গবর্ণমেণ্ট কলেজে পড়ি ব’লে দেশের কাজ করতে পাব না, এ কেমন কথা ? দেশের প্রতি ও আমাদের নিজের প্রতিও ত একটা কৰ্ত্তব্য আমাদের আছে।” তিনি ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন, “আমি তোমার কোন আগুমেন্ট (যুক্তি) শুনতে চাইনে। আমি তোমাদের কয়জনকে রাষ্ট্রকেট করবার জন্ত রিপোর্ট করব।” * আমি বলিলাম, “আপনি যদি আপনার কর্তব্য সেইরূপ wo-ye বুঝে থাকেন, তবে তা-ই করবেন। আমার নিজের কথা আমি বলতে পারি, যে শিক্ষা আমাদের মকুবালাভের পথে বাধা দেয়, আমি লে-শিক্ষা চাইনে । আমি কলেজ ছাড়তে প্রস্তুত জাছি ” . তিনি তখন আমাকে চলিয়া যাইতে ইজিত করিলেন। আমি বাড়ী চলিয়া আসিলাম । আমার পক্ষে এ ভালই হইল। আমার আর একটি বন্ধন ছিন্ন হুইল। আর কিশোর যখন মেডিক্যাল কলেজ হইতে বিতাড়িত হইবে, তখন আমার আর আক্ষেপের বিষম কি ? বরং তাহার জন্য আমার আর কোন অনুতাপের কারণ থাকিবে না । কিন্তু দাদার গঞ্জনা আমাকে নিতান্ত - অতিষ্ঠ করিয়া তুলিল। আমার কলেজ ছাড়া লইয়া দাদার সঙ্গে আমার তুমুল ঝগড়া হইয়া গেল। দাদা ক্রমাগতই বলিতেছে, আমি বি-এ পাস করিতে পারিব না, আমার দ্বার সংসারের কোন কাজ হইবে না, যদি বিয়ে না করি তবে আমার জীবনই বৃথা হইবে, ইত্যাদি । আমার বোধ হয়, দাদার ভয় হইয়াছে আমি বিবাহ না করিয়া চিরদিন তাহার গলগ্ৰহ হইয়া থাকিব। আমার কিন্তু সেরূপ অভিপ্রায় একেবারেই নাই। আমি কাহারও গলগ্ৰহ হইয়া থাকিব না, আমি যেটুকু লেখাপড়া শিথিয়াছি তাহাদ্বারা নিজের জীবিকা উপার্জন করিতে অবশুই পারিব । আমাকে এখন হইতেই সেই চেষ্টা করিতে হইবে, কারণ আমি এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন, আমার সকল বন্ধন একে একে ছিন্ন হইয়াছে। আমার যখন মনের এইরূপ অবস্থ, তখন শঙ্কর একদিন আমাদের বাড়ীতে আসিল। প্রমীলা ও আমি তখন লাইব্রেরী-ঘরে বসিয়াছিলাম। আমার হাতে একটা সেলাই ছিল, প্রমীলা তাহার বই পড়িতেছিল । আমি শঙ্করকে দেখিয়া বলিলাম, “আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন ? পিকেটিং করছিলেন বুঝি ?” শঙ্কর বলিল, “পিকেটিং করব না মুনসেন্ধী করবার জন্য প্রস্তুত হব। আমার পূজনীয় পিতাঠাকুর মহাশয়ের কড়া আদেশ, আমি যেন এই গোলযোগের সময় বাড়ীর বাহিরেন যাই। “এখন থেকেই তবে দাসত্বের জন্তে প্রস্তুত হচ্ছেন। বেশ বেশ। আমাকে একটা চাকরি জুটিয়ে দিতে পারেনা;