পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२७8 “কেন, আপনি এখন দাসত্ব করবেন কোন দুঃখে ? আপনি ত কলেজে পড়ে বি-এ পাস করবেন।” “আমার আর কলেজে পড়া হবে না। কাটা যাবে, সেদিন প্রিনসিপ্যাল বলেছেন।” “ওহে, সেদিনকার সেই পিকেটিং করবার জন্যে বুঝি ? এই জন্তেই বাবা আমাকে সে দিন আটক করেছিলেন, * এখন বুঝতে পারছি আমার না-যাওয়া ভালই হয়েছিল।” “মুনসেফ পাওয়ার পক্ষে । কিন্তু আপনার বন্ধু সেসব কথা মনে ভাবেন নাই।” “কিশোরের কথা বলছেন ? সে বর্ণচোর। আম— তার মনের ভিতরে কি আছে, বাইরে কেউ টের পায় না । জেলখানাম গিয়ে কেমন আছে একদিন গিয়ে দেখে আসব।” “দাদা সে দিন দেখতে গিয়েছিল, তিনি বেশ ফুৰ্ত্তিতে আছেন।” “ফুৰ্ত্তি হবে না ? আপনি স্বহস্তে তার গলায় মাল পরিয়ে দিয়েছিলেন।” “কিন্তু শুনলুন তাকেও মেডিক্যাল কলেজে আর পড়তে দেবে না । যাক সে কথা । আমি ষে-কথা বললুম আপনি তার চেষ্টা দেখবেন। আপনি ত অনেক খবরের কাগজ পড়েন, তার বিজ্ঞাপন দেখে আমার জন্যে কোন মেয়েদের স্কুলে একটা টীচারের কাজ পাওয়া যায় কিনা খোজ করবেন। “কিন্তু আপনি ত পরাধীনতা স্বীকার করবেন না প্রতিজ্ঞা করেছেন ?” আমি হাসিয়া বলিলাম, “একে আর পরাধীনতা বলা বাম না। উদরায়ের জন্য আমাদিগকেও অন্ত কাহারও গলগ্ৰহ না হয়ে চাকরি করতেই হবে। আমরা পরের গলগ্ৰহ হয়ে থাকতে চাই নে, স্বাবলম্বনবৃত্তি গ্রহণ করতে চাই।” শঙ্কর বলিল, “অর্থাৎ কোন স্কুলের সেক্রেটারীর অধীনতার চেয়ে ঘরের আড়ালে স্বজনের অধীনতাটাই হ’ল বেশী দোষের । স্বাক সে কথা। কিন্তু মুকুমার আপনাকে চাকরি করতে দেবে ত?” আমি হাসিয়া বলিলাম, “দাদার সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়ে গেছে। আমি দাদার নিষেধ গুনব না। আমি কারু তাবে খাৰৰ না ।" আমার নাম '8&ision 3r సినలిEరి শঙ্কর বলিল, “বেশ । আমাদের ভবানীপুরে একটা নতুন মেয়েদের হাইস্কুল হয়েছে। সেখানে কোন টীচারের পদ খালি আছে কি-না আমি খোজ করব ও আপনাকে জানাব। হুকুমারের সঙ্গে দেখা হ’ল না—আর একদিন শীঘ্রই আসব। প্রমীলা, তোর পড়া কেমন চলছে? তুই পড়ার সঙ্গে নন-কো-অপারেশন করবি নাকি ?” প্রমীলা হাসিয়া বলিল, “আমার পড়া ভাল হচ্ছে না। বাড়ীতে যে গোলমাল চলচে--আমাকে কেউ পড়ায় না, আমি কি করব।” আমি বলিলাম, “বাড়ীতে গোলমাল তাতে তোর কি ? তোর কাজ তুই করবি।" “আপনার হাতে ওখান কি বই, শঙ্কর বাবু।” শঙ্কর বলিল, “এ বই ত আপনার জন্যেই এনেছি-- নারীপ্রগতি সম্বন্ধে মিসেস ফিলিপ মোডেনের একখানা নামজাদ বই। আপনি এখানা রাখুন, পড়ে দেখবেন। আমি তবে এখন আসি।” এই বলিয়| শঙ্কর বিদায় হইল । 2 তিন দিন পরে শঙ্কর আসিয়; আমার সঙ্গে দেখা করিম বলিল, “আপনি যথার্থক্ট চাকরি করবেন নাকি ?” আমি বলিলাম, “ই চাকরি করব বলেই ত স্থির করেছি। আপনি কোন সন্ধান পেলেন ?” শঙ্কর বলিল-“ভবানীপুরে যে-স্থলের কথা বলেছিলুম সেখানে একজন য়াসিষ্টাণ্ট টীচার নেবে। তার গ্রাজুয়েট চায়, কিন্তু ত্ৰিশ টাকা মাহিনায় লেডি গ্রাজুয়েট কোথায় পাবে ? তাই আমি সেক্রেটারী অতুল বাবুকে আপনার কথা বলাম তিনি এক রকম রাজি হয়েছেন। নতুন স্কুল, মাহিন আপাততঃ ত্রিশ টাকা দেবে, পরে স্কুল স্থায়ী হ’লে এক বছরের মধ্যেই চল্লিশ টাকা হবে। আপনি রাজি আছেন ?” আমি উৎসাহিত হইয়া বলিলাম, “আমি খুব রাজি আছি। আমি একলা মানুষ, ত্রিশ টাকায় আমার খুব চলে যাবে।” “এই বাড়ি থেকে যাতায়াত করতে পারবেন, বিশেষ কোন অসুবিধা নেই।” “কিন্তু ট্রাম কি বাস গাড়ীতে আমি একলা কখনও