পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

عب%RO দূরে ঠেলিয়া দিলেই বুঝি মন্থন্তত্বের পরাকাষ্ঠ হইত ? এক ভাতুরা বিপন্ন নারী, একটু জাগে যে তাহাকে বন্ধু বলিয়া সম্ভাষণ করিয়াছে, ঐরূপেই বুঝি তাহার প্রতি পুরুষের কর্তব্য, বন্ধুর কৰ্ত্তব্য করা হইত ? বীণার কথাও বলিতে হয়, ভয়ের প্রথম আবেগটা কাটিয়া যাইবামাত্র সেও অজয়কে মৃদু অথচ দৃঢ় হাতেই দূরে ঠেলিয়া দিয়াছিল। অজয়ও তাহাকে বাধা দেয় নাই। তারপর হইতে দুজনেই তাহার এমন ব্যবহার করিয়াছে যেন মাঝখানকার এই কয়েকটা মুহূৰ্ত্ত সত্যসত্যই তাহদের জীবনে আসে নাই, অথবা আসিয়া থাকিলেও তাহ লক্ষ্য করিবার মত কিছু নহে। কিন্তু অন্তায় করে নাই, যত জোরের সঙ্গে নিজেকে তাহ বুঝাইতে চেষ্টা করিতে লাগিল তত বেশী করিয়া তাহার যুকের ভিতরটা চঞ্চল হইয় উঠতে লাগিল। সে জানিত না, ঐজিলা সত্যসভাই কতখানি তাহার মনকে জানে। সামান্ত একটু চোখের দৃষ্টির বিনিময়ে, ব্যবহারের একটু বিশেষ সলজ আড়ষ্টতায় তাহার হৃদয়ের কত গভীর রহস্তই ঐ বুদ্ধিমতী মেয়েটির নিকট প্রকাশ হইয়া গিয়াছে। ভাই, হয়ত ধে কিছুই জানে না, বীণার কাছে ভুল জানিয়া স্কুল বুৰিয়া তাহার চিত্ত পাছে চিরদিনের মত বিমুখ হইয়া যায় এই ভয়ে অজয়ের বুকের রক্ত হিম হইয়া জমিরা যাইতে লাগিল। তাহার জীবনে সমস্তা-সংশয়ের যেন অভাব ছিল, তাই আজ আবার এই এক অভিনব এবং বিচিত্র সমস্তার উদ্ভব হইল। ক্লাস্তিতে এমনইতেই তাহার দেহমন অবসর হইয়া আছে, দুই পায়ের উপর সোজা হইয়া দাড়াইতে যাহার ক্লেশ বোধ হয়, সে কি শক্তি লইয় এই সমস্তার সঙ্গে সংগ্রাম করিবে ? তাহার সমস্ত অস্তিত্ব একটুখানি বিশ্রামের জন্ত ক্ষুধিত হইয়া ছিল, স্থির করিল, সম্প্রতিকার মত আবার পলাইয়া আত্মরক্ষা করিবে । হয়ত একটি স্বথম্পর্শের স্মৃতি গোপনে গোপনে তাহার বুকের তারে অতি মৃদ্ধ করুণ স্বরে আঘাত করিতেছিল, কত নিজের কোনও ক্ষণিক দুৰ্ব্বলতাকে প্রাণপণে নিজের কাছে সে অস্বীকার করিতেওঁ চাহিতেছিল, যে কারণেই হউক, নিজের চতুৰ্দ্ধিকে নির্দ্রিপ্ততার প্রাচীর রচিত করিয়া তাহার মধ্যে অতঃপর সে আত্মরক্ষা করিল। স্থির করিল, ఇఙ ఏనD8ం. ধারাবর্ষণের শীতল জার্দ্রতার মধ্যে একটুখানি জ্বকোমল উষ্ণতায় যে-মানুষটা বীণার কমনীয় দেহের স্পর্শ পাইয়াছিল, সে অজয় নহে, আর কেহ । সে-মানুষটার সঙ্গে অজয়ের পরিচয় মাত্র চতুৰ্ব্বিংশ বৎসরের। অজয় যে তাহাকে চিরন্তন মনে করিতেছে, অস্তরতম মনে করিতেছে, ইহা মায়া । কিন্তু দেখা গেল, দুপুর রাত্রি অবধি অজয় যে জলে ভিজিয়াছিল সে-জিনিসটা অন্ততঃ মামা নহে। শেষরাত্রির দিকে সমস্ত শরীরে ব্যথা হইয়া জর আসিল । মনে করিল, দুৰ্ব্বল শরীরে বহু উত্তেজনায় গাটা একটু গরম হইয়াছে, অল্পেতেই সারিয়া যাইবে । ফিরিয়া অবধি নন্দকে দেখিতে পায় নাই, হয় নিজেই কিছু না বলিয়া কোথাও সে চলিয়া গিয়াছে অথবা ঘটনাচক্ৰ চলিয়া যাইতে তাহাকে বাধ্য করিয়াছে, পরদিন সমস্তদিন অনাহারে অন্ধকার গরাদে-দেওয়া স্যাৎসেছে ঘরটায় অজয় একলা পড়িয়া রহিল ৷ বিকালের দিকে আগুনের মত হইয়া গা তাতিয়া উঠিল। এদে গলির এক মাথায় পোড়োবাড়ীর মত এই বাড়ীটা, কেউ যে সহসা এদিকে আসিয়া পড়িবে এমন ভরসা ছিল না। একবার ভাবিল, উঠিয়া গিয়া একটা গাড়ী ডাকে এবং কোনও রকম করিয়া স্বভদ্রদের ওয়েলিংটন স্কোয়ারের বাড়ীতে চলিয়া যায়, কিন্তু সুভদ্রের সঙ্গে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কথার আদান-প্রদান সেদিন অতি সামান্তই হইয়াছিল। আজম কেমন করিয়া জানিবে একেবারে সম্পূর্ণ করিয়া স্বভত্র তাহাকে ক্ষম করিয়াছে কিনা। রাত্রিতে ঘুমাইল, না অতেচন হইয়া রহিল, বুঝিতে পারিল না। সকালে উঠিয়া বুঝিল, আর ইচ্ছা করিলেও স্বভদ্র বা অপার কাহারওঁ আশ্রয়ে যাইবার তাহার উপায় নাই। সম্পূর্ণরূপে সে চলচ্ছক্তি-রহিত ইয়া পড়িয়ছে। কষ্টে উঠিয়া কুজা হইতে জল গড়াইয়া থাইতে গিয়া মাথা ঘুরিয়া পড়িয়া গেল । সমস্তদিন অৰ্দ্ধ-অচৈতন্ত অবস্থায় কাটিল । ধখনই ভাবিহার ক্ষমতা ফিরিয়া আলিঙ্গ, উদ্ধারের নানা উপায় ভাবিয়া দেখিল । ভাবিল, প্রাণপণ জোরে চীৎকার করিবে, যদিই দূরের বড় রাস্ত বা আশপাশের কোনও বাড়ী হইতে কেহ শুনিতে পায়। কিন্তু সমস্ত বুকে এমন ব্যথা হইয়াছে, জোরে নিঃশ্বাস লইতে স্বদ্ধ কষ্ট হয়। যদি পিওনটা কোনও