পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

મૂરન ২৭১ অজয়ের খবর লইতে মাসিয়া দেখিল, সে ঘুমাইতেছে। ভয়ে ভয়ে কহিল, “কতক্ষণ ঘুমচ্ছেন ?” " স্বভদ্র কহিল, “আপনি যাবার পর থেকেই ।” বীণার গঙ্গার কাছটা কাপিয়া গেল, কহিল, "এবারে জাগিয়ে দেব ?” স্বভদ্র চিকিৎসকোচিত গাম্ভীর্ঘ অবলম্বন করিয়া কহিল, “নিশ্চয়ই না। ঘুমনোটাই ওর এখন সব চেয়ে বেশী দরকার। নিউমোনিয়া হবার সম্ভাবনা থাকলে রোগীকে যতটা বিশ্রাম দেওয়া যায় দিতে হয় ।” বীণা তবু বলিল, “কিন্তু ঘুমিয়ে আছেন, না কালকের মত মুচ্ছরি ভাব এটা, তা দেখাও কি কৰ্ত্তব্য নয় ?” স্বভদ্র অত্যন্ত জোরের সঙ্গে বলিল, “উহু, মুচ্ছ এটা , হতেই পারে না। আপনি কেন ভাবছেন ? নিশ্চিন্ত মনে বাড়ী যান, যদি দরকার হয় আমিই আপনাকে খবর দেব ।” সে ষে আসিয়াছিল, অজয়কে তাহ জানাইয়া যাওয়া হইল না বলিয়া অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনে, নতমস্তকে ধীরপদে বীণা গিয়া গাড়ীতে উঠিল। তাহার গাড়ী গলির মোড় ঘুরিয়া বাহির হইয়া গেলে স্বভদ্র তাড়াতাড়ি বিমানের দরজায় গিয়া ঘা দিল। ঘুম জড়ান চোখে দ্বার খুলিয়া দিয়া চোখ হইতে দিনের আলোকে আড়াল করিয়া বিমান কহিল, “কেন বাবা এই গভীর রাত্রে হল্প করতে এলে ? কি ব্যাপার ?” স্বভত্র বলিল, “তুমি শীগগির যাও, বিমান। যে কেউ একজন ভাল ডাক্তারকে ডেকে আনো গে। আমি জানি সারিয়ে দিতে পারব। কিন্তু যদিই না পারি ? নিজের হাতে রাখতে আর ভরসা পাচ্ছি না।” বিমান কহিল, “ঐ কথাটা রোজ দুবেল ক’রে তোমার বলা চাই ? কি হয়েছে চল দেখিগে। আমি তোমায় বলছি, তোমার ওষুদেই ও সারবে ।” - পরদিন খুব ভোরে উঠিয়াই বীণা দেখিল, ঐন্দ্রিলা আরও আগেই স্থান সারিয়া কাগজ পেন্সিল লইয়া বসিয়াছে। বলিল, “এখনো ত ভাল করে অন্ধকারই কাটেনি, চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছ ?” ঐজিলা বলিল, “ন দেখে জাক ছবি কি রকম দাড়ায় দেখছি।” আর কিছু না বলিয়া বীশ মুখ ধুইতে চলিয়া গেল। নীচে বসিয়া চ খাইতে খাইতে খবরের কাগজের পাতায় চোখ বুলাইতেছে এমন সময় হৃষীকেশ ধীরে আলিয়া টেবিলের একপৃশে দাড়াইলেন। টেবিলের উপরে বালা ইংরেজি খবরের কাগজ আরও যে দুএকটা পড়িয়া ছিল, সেগুলিকে লইয়া একটু নাড়াচাড়া করিয়া বলিলেন, “অজয় কি এখন একটু ভালো আছেন ?” - বীণা বলিল, “হ্যা, একটু ভালো। কিন্তু খুব বেশী সাবধান না হলে একটুতেই নিউমোনিয়াতে দাড়াতে পারে।” হৃষীকেশ একটা চেয়ার টানিয়া লইয়া চিন্তাৰিত মুখে কিছুক্ষণ নীরবে বসিয়া রহিলেন, পরে বলিলেন, “তোমায় আজও কি যেতে হবে ?” - বীণা বলিল, “যাওয়াই উচিত। না গেলে তার খুবই অস্ববিধা হবে।” হৃষীকেশ বলিলেন, “র্তাকে দেখতে আর কে সেখানে আছেন ?” - বীণা একটু বিপদে পড়িল । তাড়াতাড়ি ভাবিয়া লইয়া বলিল, “স্বভত্রবাবু আছেন, কিন্তু তিনি থাকা না-থাকা প্রায় সমান কথা। তিনি খুব ভাল চিকিৎসক বটে, কিন্তু রোগীর সেবা করতে মোটেই অভ্যন্ত নন।” হৃষীকেশ বলিলেন, “ও জিনিস সবাই পারে না, সেটা ঠিক । কিন্তু তোমাদের নিয়ে আজ সকালে একটু গুরুসদয়বাবুর বাড়ী যাব ভেবেছিলাম। তার স্ত্রী খুব অহস্থ তা জানো বোধহয় । অনেকদিন ধরে তোমাদের দুবোনকে দেখতে চাচ্ছেন। তিনি তোমার মার বিশেষ বন্ধু ছিলেন।” বীণা বলিল, “আর ছদিন পরে গেলে চলে না বাবা ? অজয়বাবু আর-একটুখানি সেরে উঠলেই যাব।” হৃষীকেশ মৃদুস্বরে বলিলেন, “তা চলে।” তারপর চুপ করিয়া রহিলেন। একটু পরে একটু কাশিয়া লইয়া জাবার বলিলেন, “তোমার পিলীমা বলছিলেন, অজয় যদি কিছু মনে না করেন তাহলে তিনি তার গুশ্ৰুষার ভার নিতে পারেন। তাতে তার কিছু কি অন্ধবিধা হবে ?” বীণা বলিল, “পিলীম ? পিলীমা সেখানে কেন যাবেন "ি হৃষীকেশ বলিলেন, “তাতে দোষ কিছু ত নেই যা।