পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*ইণ২ Sово তোমার পিসীমার এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই অনেক বেশী। ও যখন ছোট ছিল, তখন হাতে কিছু কাজ না থাকলে আমায় বিছানায় গুইয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিত, নয়ত পাখা নিয়ে বসে হাওয়া কবুত। কখনো তাতে ওকে ক্লাস্তি বোধ করতে দেখতাম না। অন্তের সেবা করতে ওর একটা আননা ছেলেবয়স থেকেই ছিল। ও খুব আগ্রহ করেই যেতে চাইছে।” বীণা কি জবাব দিবে কিছুক্ষণ তাহা ভাবিয়া পাইল না । তারপর বলিল, “আমার কিন্তু একটুও ভালো লাগছে না। কে জানে, অজয়বাবু কি মনে করবেন ? পিসীমার সঙ্গে তার ত একদিন একটুখানিমাত্র পরিচয় হয়েছে। তিনি যা লাজুক, হয়ত অসুবিধা বোধ করতে পারেন।” হৃষীকেশের মুখে আবার চিন্তার গভীর রেখাপাত দেখিতে পাওয়া গেল। বলিলেন, “হু !” তারপর নীরবে বসিয়া দাড়িতে হাত বুলাইতে লাগিলেন। হঠাৎ বীণা বলিয়া উঠিল, “বাবা ! আমি যাই এটা কি তুমি ইচ্ছে কর না ?” হৃষীকেশ তাড়াতাড়ি বলিলেন “না, তা ঠিক নয় । যাওয়া প্রয়োজন যদি হয় যেতে ত হবেই। তবে—” বীণা বলিল, “না গিয়ে পারলেই ভালো, এই তোমার ऋम ठूग्न ?” হৃষীকেশ বলিলেন, “তাও ঠিক নয়। যাওয়াতে কিছুমাত্র দোষ আছে তা আমি মোটেই মনে করিনে। যদি তা করতাম তাহলে তোমাকে প্রথমেই তা বলতে আমার বাধা ছিল ন! * বীণা বলিল, “বাধা না থাকৃলেও তুমি আমায় বলতে ন, তা আমি জানি। আমি নিজে যা ভালো বুঝেছি, চিরকাল তাই ত করতে পেয়েছি। কখন কোন কাজে তুমি জামায় বাধা দিয়েছ ?” , হৃষীকেশ বলিলেন, “বাইরে থেকে বাধা দিলেই আসল জায়গাতে সব সময়ে ত বাধে না । তাছাড়া আমি যা বুঝব সেইটেই যে ঠিক বোঝ, তাই বা বলব বি করে ? যে-ধরণের জীবনের ধারা ঠিক সেই খাতে ত বইছে না, তোমাদের কথা নিয়ে আমার বরং স্কুল করবারই সম্ভাবনা বেশী।” বীণা বলিল, “তুমি যে ঠিক এই রকমই ভাবে তা জামি জানি। কিন্তু ভুল করবার সম্ভাবনাই যে তোমার বেশী তা হয়ত ঠিক নয় । অজয়বাবুর ওখানে যাওয়া সম্বন্ধে কোন জায়গায় তোমার খটকা লাগছে আমার সেটা জানড়ে অন্ততঃ পারা দরকার, তুমি ভুল বুঝছ না ঠিক বুঝছ সেটা নিজে বিচার করে তাহলে আমি দেখতে পারি।” হৃষীকেশ আবার কিছুক্ষণ কাগজগুলি লইয়া টেবিলের একধার হইতে অন্তধারে সরাইয়া ভাজ করিয়া করিয়া রাখিলেন, তারপর বলিলেন, “তোমার পিসীমা বলছিলেন এই নিয়ে বাইরে একটা কথা উঠেছে।” বীণা শক্ত হইয়া বলিল, “আমার একটি স্বজনহীন পীড়িত বন্ধুর বিপদে তাকে সাহায্য করছি, এ নিয়ে বাইরে কথা ওঠবার কি মানে ?” হৃষীকেশ বলিলেন, “তুমি এ নিম্নে উত্তেজিত হোয়ে না ম, তা হয়ে কিছু লাভ নেই। কথাটা উঠেছে এইটে জেনে নিয়ে বেশ করে ভেবে কৰ্ত্তব্য স্থির কর ।” বীণা বলিল, “আমার কৰ্ত্তব্য স্থির করা আছে। বাইরে যতথুসি কথা উঠতে পারে।” হৃষীকেশ একটু হাসিয়া বলিলেন, “কিন্তু মা, মানুষের জীবনে বাইরেটার ত স্থান আছে, সেটার দাবীও দাবী ” বীণা বলিল, “একসঙ্গে সব দাবী সব সময় মামুযে মেটাতে পারে না। সম্প্রতি আমার বন্ধুর দাবী আমার কাছে এত বড় যে আর কোনো দাবী আর কারও আমার ওপর যদি থাকেও তার কথা আমার ভাববার সময় নেই।” হৃষীকেশ মুখটিকে একটু কালো করিম বলিলেন, “আচ্ছা”, তারপর আসন ছাড়িয়া উঠিয়া ধীরগতিতে বাহির হইয়া গেলেন । যতক্ষণ চুতলার সিড়িতে এবং উপরে তাহার চাট জুতার শব্দ শুনিতে পাওয়া গেল, বীণা কান পাতিয়া রহিল। তারপর তাড়াতাড়ি নিজেও উপরে উঠিয়া কাপড় বদলাইয়া নীচে নামিয়া আসিল এবং ড্রাইভারকে ডাকিয়া গাড়ী জানাইয় অসময়েই বাহির হইয়া পড়িল । বীণাকে হঠাৎ বাহির হইয়া যাইতে দেখিয়া ঐজিলা প্রায় ছুটিাই তেভলার বারান্দায় জাসিয়া দাড়াইল। বীণার মোটর দৃষ্টিপথের বাহিরে চলিয়া যাইবার পরও বহুক্ষণ সেস্থান ছাড়িয়া সে নড়িল না। কাল সন্ধ্যায় আড়ালে দাড়াইয়া